ওয়েব ডিজাইন বর্তমানে খুবই চাহিদাসম্পন্ন একটি ক্ষেত্র। ওয়েব ডিজাইনার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে সফল হওয়া সম্ভব হয় সঠিক দিক নির্দেশনা মেনে এগোলে। তাই নিজের কর্মপরিকল্পনা ঠিক করে তবেই ওয়েব ডিজাইন শুরু করা উচিত।
ওয়েব ডিজাইন বলতে ওয়েবসাইটের নকশা করা বোঝানো হয়। ওয়েব ডিজাইন সহজ কোন কাজ নয়, শুধু টেকনিক্যাল জ্ঞান দিয়ে ওয়েব ডিজাইন করা সম্ভব নয়। এজন্য থাকতে হয় একটি সৃজনশীল মন। টেকনিক্যাল জ্ঞান ওয়েব ডিজাইনের ক্ষেত্রে সহায়ক। তবে একটি সুন্দর ওয়েবসাইট তৈরি করতে হলে আপনার সৌন্দর্য ও রুচিবোধ উন্নত হতে হবে।
তবে ওয়েব ডিজাইন শুধু নকশা নয়, বরং একটি ওয়েবসাইট কীভাবে কাজ করে এবং ওয়েবসাইটের সকল বিষয়বস্তু সুন্দর করে সাজানো সকল কিছুই এর অন্তর্ভুক্ত। কাজেই ওয়েব ডিজাইনারের কাজ বেশ জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ। ওয়েব ডিজাইনিং শুরু করতে চাইলে প্রথমে নিজের ক্যারিয়ার তৈরির পুরো পথ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নিয়ে তবেই শুরু করা উচিত।
ওয়েব ডিজাইন কাজের চাহিদা
স্বাভাবিকভাবেই আজকাল সকল কিছুই অনলাইন নির্ভর হয়ে যাচ্ছে। ইকমার্স ও অন্যান্য সেবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই পাওয়া যাচ্ছে। কাজেই নিয়মিত বিভিন্ন নতুন নতুন ওয়েবসাইট তৈরির চাহিদা বাড়ছে। আর ওয়েব ডেভেলপমেন্টের ক্ষেত্রে ওয়েব ডিজাইন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। শুধু ওয়েবসাইট তৈরি করলেই সফলতা পাওয়া যায় না। বরং ওয়েবসাইটকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলার দরকার হয়। তবেই মানুষ আকৃষ্ট হয় এবং ওয়েবসাইটের উদ্দেশ্য সফল হতে পারে।
ওয়েব ডিজাইনারদের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ওয়েব ডিজাইনের কাজে দক্ষ হতে পারলে সহজেই এখান থেকে ভালো আয় করা সম্ভব হবে। ওয়েব ডিজাইন ক্যারিয়ার হিসেবে বেশ ভালো একটি পথ হতে পারে।
ওয়েব ডিজাইনার হিসেবে ক্যারিয়ার তৈরির বিভিন্ন পথ
ওয়েব ডিজাইনারদের ক্যারিয়ার অনেকটাই ওয়েব ডেভেলপারদের মতো করেই গড়ে উঠতে পারে। ওয়েব ডিজাইনার হিসেবেও আপনি নির্দিষ্ট বেতনে পূর্ণকালীন চাকরি বা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করতে পারে। কাজেই আপনার সুবিধামত কাজের স্থান ঠিক করে নেয়া উচিত। চাকরির ক্ষেত্রে ওয়েব ডিজাইনারদের কদর প্রচুর। বড় বড় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের ওয়েবসাইট ডিজাইনের জন্য ওয়েব ডিজাইনার টিম নিয়োগ করে থাকে। এক্ষেত্রে আপনি নির্দিষ্ট কোন ওয়েব ডিজাইন প্রতিষ্ঠানে কোন দলের সাথে কাজ করতে পারেন। এছাড়া চুক্তিভিত্তিক বিভিন্ন কাজও পাওয়া যায়।
তবে পূর্ণকালীন চাকরির ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রিকে গুরুত্ব দেয়া হয়। কাজেই ওয়েব ডিজাইন বা ইউএক্স ডিজাইন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি থাকলে আপনি বেতনভিত্তিক চাকরি করতে পারেন। ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ওয়েব ডিজাইনারদের চাহিদা সবথেকে বেশি। ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনি ঘরে বসেই নিজের সুবিধামত সময়ে কাজ করতে পারেন। এমনকি ফ্রিল্যান্সার হিসেবে চাকরির থেকেও অধিক আয় করা সম্ভব। তবে ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে আয়ের ক্ষেত্রে আপনার দক্ষতার মূল্য আরও বেশি।
কাজেই ওয়েব ডিজাইনার হিসেবে যে পথেই যান না কেন নিজের দক্ষতা বৃদ্ধির দিকে মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন। এতে করে দ্রুতই সফলতা অর্জন করা সম্ভব হবে।
🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥
👉 ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার উপায়
ওয়েব ডিজাইনার হিসেবে যেসব কাজ আপনি করতে পারেন
ওয়েব ডিজাইনের ক্ষেত্রটি একটি বিস্তৃত ক্ষেত্র। যদিও ওয়েব ডিজাইনারের কাজ ওয়েবসাইট ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতার উন্নতি করা তবে সেটিও বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত। ওয়েবসাইট ডিজাইন বলতে শুধু ওয়েবসাইটের ভিজ্যুয়াল বা দৃশ্যকে সুন্দর করা নয়, যেন একজন ব্যবহারকারী পুরো ওয়েবসাইট থেকে সকল তথ্য দ্রুত ও সহজে পেতে পারে সে ব্যাপারটি নিশ্চিত করা। আর এজন্য ওয়েবসাইটের সকল কিছু পরিকল্পনা করে সাজিয়ে রাখতে হয়। এটি অনেকটা তাক সাজানোর মতো ব্যাপার। তাকে আপনি জিনিসগুলো এমনভাবে সাজিয়ে রাখেন যাতে তা দেখতে সুন্দর লাগে এবং সহজে দ্রুততম সময়ের মাঝে জিনিসপত্র খুঁজে পাওয়া যায়। ওয়েবসাইট ডিজাইনের ব্যাপারটিও এমন।
আপনি ওয়েবসাইট ডিজাইনের ক্ষেত্রে ইউএক্স বা ইউজার এক্সপেরিয়েন্সের ডিজাইনের ক্ষেত্রে নিজেকে আলাদাভাবে দক্ষ করে তুলতে পারেন। এক্ষেত্রে ওয়েবসাইট যেন স্মুথভাবে কাজ করে এবং এর এনিমেশন ও অন্যান্য ব্যাপারগুলো সুন্দর হয় এসব দিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হয়। ইউএক্স ডিজাইনারদের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। ইউএক্স ডিজাইনাররা কোডিং বা টেকনিক্যাল জ্ঞান এর দিক থেকেও বেশ দক্ষ হয়ে থাকেন।
কন্টেন্ট ডিজাইন অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। ওয়েবসাইটের সকল কন্টেন্ট সুন্দর করে সাজিয়ে দেয়ার কাজটি করেন কন্টেন্ট ডিজাইনার। ফলে সহজেই কেউ ওয়েবসাইট থেকে সকল জিনিস খুঁজে পান। কন্টেন্ট সঠিকভাবে না সাজালে ওয়েবসাইটের ভিজিটর কমে যেতে পারে। ভালো সেবা দিতে তাই এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ এক দক্ষতা।
টাইপোগ্রাফি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা। ওয়েবসাইটের সকল টেক্সট যেন সুন্দর ও স্পষ্ট হয় এটিই নিশ্চিত করেন একজন টাইপোগ্রাফার। ফলে ফন্ট ও তার প্লেসমেন্ট সুন্দর হওয়া খুব জরুরি। আর এই ব্যাপারে বাড়তি দক্ষতার মাধ্যমে আপনি ওয়েবসাইটের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি নকশার কাজে পারদর্শী হয়ে উঠতে পারেন।
ন্যাভিগেশন ডিজাইন আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ডিজাইন দক্ষতা। এক্ষেত্রে ওয়েবসাইটের এক পেজ থেকে আরেক পেজে সহজে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন বাটন প্লেসমেন্ট করার ব্যাপারে গুরুত্ব দেয়া হয়। এর মাধ্যমে পুরো ওয়েবসাইট ব্যবহারের অভিজ্ঞতা উন্নত হয়ে উঠতে পারে।
অর্থাৎ আপনি ওয়েব ডিজাইনের ক্ষেত্রে যে দিকেই দক্ষতা অর্জন করুন না কেন বাজারে তার যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। তবে ওয়েব ডিজাইনের সকল বিষয়েই ধীরে ধীরে দক্ষ হয়ে উঠলে ওয়েব ডিজাইনার হিসেবে আপনার মূল্যও ধীরে ধীরে বেড়ে যাবে।
সেই সঙ্গে টেকনিক্যাল বিভিন্ন বিষয়েও জ্ঞান থাকলে ওয়েব ডিজাইন অনেকটাই সহজ হয়ে ওঠে। কাজেই ওয়েব ডিজাইনে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন প্রোগ্রামিং ভাষাও শেখা উচিত। এতে করে আপনি আরও দক্ষ ও যোগ্য হয়ে উঠতে পারবেন। ক্যারিয়ারেও সফলতা আসবে দ্রুত।
ওয়েব ডিজাইন আপনার ক্যারিয়ারকে সমৃদ্ধ করতে পারে খুব সহজেই। তবে অন্যান্য ক্ষেত্র থেকে এখানে নিজের কিছু যোগ্যতা থাকা আবশ্যক। সৃজনশীল না হলে নিত্য নতুন সুন্দর ডিজাইন তৈরি করা কঠিন হয়ে যায়। যে কোন ধরণের নকশা করার মতোই ওয়েব ডিজাইন একটি শিল্প। সেই সাথে টেকনিক্যাল জ্ঞানও প্রয়োজন। টেকনিক্যাল জ্ঞান ও সৃজনশীলতা মিলেই ওয়েব ডিজাইন করা হয়। তাই দুদিকেই নিজেকে আরও সমৃদ্ধ করে তোলা উচিত। তাহলেই এই ক্যারিয়ারে সফলতা আসবে।
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।