কয়েক বছর আগেও ফোল্ডেবল ফোন এর নাম শুনলেই ফিউচারিস্টিক কোনো ডিভাইস মনে হতো। অথচ মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে ফোল্ডেবল ফোনগুলো বাজারের অন্য ফোনগুলোর মত সাধারণভাবে বিক্রি হচ্ছে। এই পোস্টে সেরা কিছু ফোল্ডেবল ফোন সম্পর্কে জানবেন। এখানে আমরা ফ্লিপ ও ফোল্ড, উভয় ধরনের ফোল্ডেবল ফোনসমূহ সম্পর্কে জানবো।
স্যামসাং গ্যালাক্সি জি ফোল্ড ৪
গ্যালাক্সি জি ফোল্ড ৪ হলো স্যামসাং এর আগের বছরের ফোল্ডেবল স্মার্টফোন সিরিজের নতুন সাকসেসর। স্ন্যাপড্রাগন ৮ প্লাস জেন ১ প্রসেসর দ্বারা চালিত এই ফোল্ডেবল ফোনটি ১২জিবি পর্যন্ত র্যাম ও ১টেরাবাইট পর্যন্ত স্টোরেজ ভ্যারিয়েন্টে পাওয়া যাবে। ফোনটিতে ৪,৪০০মিলিএম্প এর ডুয়াল ব্যাটারি রয়েছে। সময়ের সাথে সাথে স্যামসাং তাদের ফোল্ড ডিভাইসের ব্যাটারি অপটিমাইজেশনে অনেকটা সফল বলা চলে।
গ্যালাক্সি জি ফোল্ড ৪ এর ব্যাকে তিনটি ক্যামেরা রয়েছে। এছাড়া আরো কিছু ক্যামেরা হলো এক্সটার্নাল ডিসপ্লেতে থাকা ১০ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট-ফেসিং ক্যামেরা, একটি আন্ডার-ডিসপ্লে ৪মেগাপিক্সেল সেল্ফি শ্যুটার। সাইড মাউন্টেড ফিংগারপ্রিন্ট সেন্সর রয়েছে গ্যালাক্সি জি ফোল্ড ৪ ফোল্ডেবল ডিভাইসটিতে। এছাড়া এস পেন এর সাপোর্ট থাকায় ডিভাইসটি ব্যবহার করতে গিয়ে স্যামসাং নোট ফোনগুলোর কথা মনে পড়ে যাবে।
গ্যালাক্সি জি ফোল্ড ৪ এর ডিসপ্লে আনফোল্ড করলে ৭.৬ইঞ্চি থাকে। এছাড়া এই ডিভাইসে আইপিএক্স৬৮ রেটিং, অ্যান্ড্রয়েড ১২এল এবং ওয়্যারলেস চার্জিং এর মত ফিচারও রয়েছে।
স্যামসাং গ্যালাক্সি জি ফ্লিপ ৪
স্যামসাং ফোল্ড ফোনের পর সেরা ফোল্ডেবল ফোন এর তালিকায় রয়েছে স্যামসাংয়ের আরেকটি ফোল্ডেবল ফোন স্যামসাং গ্যালাক্সি জি ফ্লিপ ৪। তবে জি ফোল্ড ৪ এর চেয়ে দামের দিক দিয়ে অনেক কম জি ফ্লিপ ৪। তাই আপনি যদি নতুন ফোল্ডেবল ফোন ব্যবহারকারী হোন, তাহলে আপনার ফোল্ডেবল ফোনের যাত্রা ফ্লিপ ৪ এর সাথে শুরু করতে পারেন।
৬.৭ইঞ্চির ফ্লিপ ৪ ফোনটিতে একটি ১.৯ইঞ্চির এক্সটার্নাল ডিসপ্লে রয়েছে যার দ্বারা নোটিফিকেশন ম্যানেজমেন্ট এর পাশাপাশি আরো বেশ কিছু অসাধারণ ফিচার পাওয়া যায়। ফোল্ড ৪ এর মত এই ফোনটিতেও স্ন্যাপড্রাগন ৮ প্লাস জেন ১ প্রসেসর ব্যবহৃত হয়েছে। এখানে সর্বোচ্চ ৮জিবি পর্যন্ত র্যাম ও ২৫৬জিবি পর্যন্ত স্টোরেজ বেছে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
জি ফ্লিপ ৪ এর ব্যাকে দুইটি ১২মেগাপিক্সেল রিয়ার ক্যামেরা রয়েছে ও ফোনের ফ্রন্টে ১০মেগাপিক্সেল সেল্ফি ক্যামেরা রয়েছে। সাইড-মাউন্টেড ফিংগারপ্রিন্ট সেন্সর এর পাশাপাশি ৩,৭০০মিলিএম্প এর ব্যাটারি রয়েছে এই ফোনে। দাম থেকে শুরু করে ব্যবহার পর্যন্ত, সকল দিক দিয়ে একটি সাধারণ দেখতে অসাধারণ ফোল্ডেবল ডিভাইস হলো স্যামসাং গ্যালাক্সি জি ফ্লিপ ৪।
👉 স্যামসাং ওয়ান ইউআই এর সেরা কিছু ফিচার
মাইক্রোসফট সার্ফেস ডুয়ো ২
🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥
সারফেস ডুয়ো এর সাথে আসা বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা হয় নতুন মাইক্রোসফট সারফেস ডুয়ো ২ তে। অন্য ফোল্ডেবল ফোনগুলোর দাম যেখানে ধরা ছোঁয়ার বাইরে সেখানে মাইক্রোসফট এর সারফেস ডুয়ো ২ একটি অ্যাফোর্ডেবল অপশন। সেরা ফোল্ডেবল ফোনের মধ্যে একটি হলেও এই ডিভাইসে কোনো ফোল্ডেবল ডিসপ্লে নেই। ফোনটির ৬.৮ইঞ্চির ডিসপ্লে হিঞ্জ দ্বারা যুক্ত, যার সাহায্যে মাল্টি-টাস্ক, বড় কিবোর্ড বা সহজে বই পড়ার মত সুবিধা পাওয়া যায়।
স্ন্যাপড্রাগন ৮৮৮ প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে সার্ফেস ডুয়ো ২ ডিভাইসটিতে। সর্বোচ্চ ৮জিবি র্যাম ও ৫১২জিবি স্টোরেজ ভ্যারিয়েন্টে ফোনটি পাওয়া যাবে। ফোনের ব্যাকে ১২মেগাপিক্সেলের দুইটি ক্যামেরা ও ১৬মেগাপিক্সেলের আরেকটি ক্যামেরা রয়েছে। ফোনের ফ্রন্টে রয়েছে ১২মেগাপিক্সেল এর সেল্ফি ক্যামেরা। ব্যাটারি হিসেবে রয়েছে ৪,৪৪৯মিলিএম্প এর সেল।
👉 মাইক্রোসফট অফিস এর ফ্রি বিকল্পগুলো সম্পর্কে জানুন
অপো ফাইন্ড এন
অন্য সকল ফোল্ডেবল ফোনগুলোর চেয়ে কম জনপ্রিয় হলেও অপো ফাইন্ড এন সেরা ফোল্ডেবল ডিভাইসগুলোর মধ্যে একটি। বহনযোগ্য এই ডিভাইসটির ডিজাইন বেশ আকর্ষণীয় বলা চলে। এটিই প্রথম ফোল্ডেবল ডিভাইস যার ডিসপ্লে আনফোল্ড করলে কোনো ধরনের ক্রিজ দেখা যায়না। এছাড়া এই ফোনের হিঞ্জ তেমন নজরে পড়েনা, মোট কথায় অপো বেশ অসাধারণ ডিজাইনের একটি ফোল্ডেবল ডিভাইস তৈরী করেছে।
অপো ফাইন্ড এন এর দাম কম নয়, তবে দামের পরিবর্তে বেশ ভালো ভ্যালু পাওয়া যাচ্ছে এই ডিভাইসটিতে। স্ম্যাপড্রাগন ৮৮৮ প্রসেসর এর এই ফোনটিতে ১২জিবি র্যাম ও ৫১২জিবি পর্যন্ত সর্বোচ্চ স্টোরেজ ভ্যারিয়েন্ট পেয়ে যাবেন। ৪,৫০০মিলিএম্প ব্যাটারির এই ডিভাইসটিতে ৭.১ইঞ্চির ডিসপ্লে রয়েছে যা ফোল্ড করলে ৫.৪৯ইঞ্চির স্ক্রিনে পরিণত হয়। ফোনের ব্যাকে ৫০মেগাপিক্সেল এর ট্রিপল ক্যামেরা সেটাপ ও ফ্রন্টে ৩২মেগাপিক্সেলের ডুয়াল ক্যামেরা সেটাপ রয়েছে।
মটোরোলা রেজার ৫জি
মটোরোলা এর রেজার ভি৩ মোবাইল ফ্লিপ ফোনের কথা মনে আছে? সেই ফোনের নতুন ফোল্ডেবল স্মার্টফোন সংস্করণ হুলো মটোরোলা রেজার ৫জি। মটোরোলা রেজার এর ফ্রন্টে ৬.২ইঞ্চির ডিসপ্লে রয়েছে। ফোল্ড করলে করলে ২.৭ইঞ্চির একটি এক্সটার্নাল ডিসপ্লে দেখতে পাবেন ফোনটিতে যা দ্বারা নোটিফিকেশন চেক করা, মিডিয়া কন্ট্রোল এর মত ইত্যাদি কাজ করা যাবে। এছাড়া এই ছোট ডিসপ্লে দ্বারা ৪৮মেগাপিক্সেল সেল্ফি তোলা যাবে ফোল্ড অবস্থায় ফোনের রিয়ার ক্যামেরা দ্বারা।
মটোরোলা রেজার ফোল্ডেবল ফোনে স্ন্যাপড্রাগন ৭৬৫জি প্রসেসর, ৮জিবি র্যাম ও ২৫৬জিবি স্টোরেজ রয়েছে। তবে এই ফোনের ২,৮০০মিলিএম্প ব্যাটারি যেকোনো স্ট্যান্ডার্ড বিবেচনায় ছোট বলা চলে। বেশ আগে মুক্তি পাওয়ায় এই ফোনের চেয়ে সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া ফোল্ডেবল ফোনগুলো কেনা অধিক বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
অন্যান্য ফোল্ডেবল ফোনগুলো
বাজারে বর্তমানে অনেকগুলো ফোল্ডেবল ফোন কিন্ত নেই। আপনি যদি ফোল্ডেবল ফোনের খোঁজে থাকেন, তবে আশা করা যায় এই পোস্ট থেকে আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গিয়েছেন। এছাড়াও ভালো মানের আরো কিছু ফোল্ডেবল ফোন রয়েছে, যেগুলো সম্পর্কে একনজরে জেনে নেই চলুন।
- ভিভো এক্স ফোল্ডঃ এই ফোনের বাইরের ডিসপ্লে সাধারণ স্মার্টফোন এর ডিসপ্লের মত যা খুললে ট্যাবলেট সাইজে পরিণত হয়। উভয় স্ক্রিনের জন্য একটি করে ইন-ডিসপ্লে ফিংগারপ্রিন্ট সেন্সর রয়েছে এই ফোনে। স্ন্যাপড্রাগন ৮ জেন ১ প্রসেসর দ্বারা চালিত এই ফোনে কোয়াড ক্যামেরা সেটাপ রয়েছে
- অনার ম্যাজিক ভিঃ গ্যালাক্সি জি ফোল্ড ৪ এর বড় একটি ভার্সন বলা যায় এই ফোনকে। ৭.৯ইঞ্চির ডিসপ্লের এই ফোনে ৪৭৫০মিলিএম্প ব্যাটারি ও স্ন্যাপড্রাগন ৮ জেন ১ প্রসেসর রয়েছে। এছাড়া ৬৬ওয়াট ফাস্ট চার্জিং রয়েছে এই ফোনে।
আপনি কি ফোল্ডিং বা ফ্লিপ ফোন পছন্দ করেন? আপনার পছন্দের মডেল কোনটি? কমেন্টে জানান!
👉 আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করে সাথেই থাকুন। এখানে ক্লিক করে সাবস্ক্রিপশন কনফার্ম করুন!
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।