এন্ড্রয়েডে নতুন আরসিএস মেসেজিং এর সুবিধা ও ব্যবহারবিধি জানুন

বর্তমানে এসএমএস ব্যবহার বিলুপ্তপ্রায় বললেই চলে। আইফোন ব্যবহারকারীগণ আইমেসেজ ব্যবহার করলেও অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীগণ এই ধরনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন অনেকদিন। তবে এই বিষয় গুগল এর অজানা নয়, তাই তো গুগল এন্ড্রয়েডের জন্য তৈরি গুগল মেসেজেস অ্যাপে আরসিএস ফাংশনালিটি যোগ করে আইমেসেজ এর মত মেসেজিং এর ফিচার নিয়ে এসেছে। বর্তমানে প্রায় সব অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে এই ফিচারের কল্যাণে মেসেঞ্জার বা হোয়াটসঅ্যাপ এর মত ইন্টারনেট ব্যবহার করে চ্যাট করা যাবে। এই পোস্টে অ্যান্ড্রয়েড ফোনে আরসিএস মেসেজিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানবেন।

আরসিএস মেসেজিং কি?

RCS এর পূর্ণরূপ হলো রিচ কমিউনিকেশনস সার্ভিস। এটি হলো মূলত একটি মেসেজিং সার্ভিস স্ট্যান্ডার্ড যা সাধারণ টেক্সট থেকেও বেশি তথ্য বহন করতে পারে। যেমনঃ গুগল মেসেজের আরসিএস ফিচার দ্বারা মেসেজিং এর ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ক্যারেক্টার লিমিট নেই, আবার ছবিও/ভিডিও ইত্যাদি এটাচমেন্টও পাঠানো যায়।

আরসিএস মেসেজিংকে স্মার্ট টেক্সটিং বলতে পারেন। এটি অনেকটা অ্যাপল এর আইমেসেজ এর মত ইন্টারনেট ব্যবহার করে চলবে। যদিও দুইটি সেবা আলাদা প্রোটোকল ব্যবহার করে, তবে ফিচারের দিক দিয়ে দুইটিই প্রায় একই। আপাতত আইওএস ব্যবহারকারীগণ ও অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীগণ একে অপরের সাথে আইমেসেজ ও আরসিএস এর মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন না।

গুগল প্রথম আরসিএস চালু করে ২০১৬ সালে। এর পর থেকে ধীরে ধীরে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসগুলোর মধ্যে এই ফিচারের জনপ্রিয়তা বাড়তে শুরু করে। অনেক অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারী নিজের অজান্তেই ইতিমধ্যে আরসিএস ব্যবহার করছেন। আরসিএস মেসেজিং মূলত ওয়াইফাই ও মোবাইল ডাটা ব্যবহার করে টেক্সট ও মিডিয়া আদানপ্রদান করে যা এসএমএস এর চেয়ে অনেক দ্রুত কাজ করে।

অ্যান্ড্রয়েডে আরসিএস চালু করার নিয়ম

অনেক ফোনে ইতিমধ্যে আরসিএস চালু রয়েছে ডিফল্টভাবে। আরসিএস মেসেজিং ব্যবহার করতে গুগল এর Messages অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে যা প্লে স্টোরে পেয়ে যাবেন। এই অ্যাপে আরসিএস এর পাশাপাশি অনেক অনেক ফিচার রয়েছে, তাই ডিফল্ট মেসেজিং অ্যাপ হিসেবে এই অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক গুগল মেসেজেস অ্যাপে কিভাবে আরসিএস চালু করবেনঃ

  • প্রথমে ফোনে প্লে স্টোর থেকে গুগল মেসেজেস অ্যাপ ইনস্টল করুন (যদি ইতোমধ্যে না থাকে)
  • গুগল Messages অ্যাপে প্রবেশ করুন
  • ডানদিকের টপ কর্নারে থাকা প্রোফাইল আইকন / থ্রি-ডট এ ট্যাপ করুন
  • এরপর Message Settings অপশনে ট্যাপ করুন
  • General সেকশনে প্রবেশ করুন
  • Chat Features মেন্যুতে প্রবেশ করুন
  • Enable Chat Features অপশনটি চালু করে দিন

ব্যাস! এভাবে বেশ সহজে আরসিএস মেসেজিং চালু করতে পারবেন। আরসিএস মেসেজিং সফলভাবে চালু করার পর ইন্টারনেট সংযোগ চালু থাকলে Chat Features মেন্যুতে প্রবেশ করলে Status: Connected দেখতে পাবেন। 

আপনার বন্ধু ও পরিবারের সদস্যরাও আরসিএস ফিচার চালু করলে তাদের সাথে আরসিএস মেসেজিং করতে পারবেন। কোনো চ্যাটে আরসিএস মেসেজিং এনাবেল আছে কিনা তা বুঝতে পারবেন চ্যাটে প্রবেশ করে “Chatting with …” লেখা দেখে। এছাড়া “This chat is now end-to-end encrypted” লেখাও দেখতে পাবেন।

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

এন্ড্রয়েডে আরসিএস মেসেজিং এর সুবিধা ও ব্যবহারবিধি জানুন

👉 ইন্টারনেট ছাড়া কি জিমেইল ব্যবহার করা যায়?

উল্লেখ্য যে আরসিএস ব্যবহার করে পাঠানো মেসেজ প্রাপক অনলাইনে আসলেই দেখতে পাবেন, সাধারণ এসএমএস এর মত ইন্টারনেট ছাড়া এই মেসেজ যাবেনা। মূলত এখানে আপনার ফোন নাম্বার আপনার একাউন্ট হিসেবে কাজ করবে।

আরসিএস এর ফিচারসমূহ

গুগল আরসিএস মেসেজিং শুধুমাত্র অনলাইন চ্যাটিং ফিচারেই শেষ নয়, এছাড়া আরো অনেক সুবিধা রয়েছে এই এডভান্সড মেসেজিং সার্ভিসে। চলুন গুগল মেসেজেস এর আরসিএস এর আরো ফিচার সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

রিড রিসিটঃ আরসিএস মেসেজিং এর ক্ষেত্রে রিড রিসিট দেখতে পাবেন। অর্থাৎ মেসেজ পাঠানোর পর সেগুলো ডেলিভার ও সিন হয়েছে কিনা তা দেখার সুযোগ রয়েছে এই স্মার্ট মেসেজিং এর ক্ষেত্রে।

স্মার্ট রিপ্লাইঃ কোনো মেসেজের সাথে সামঞ্জস্য রেখে স্মার্ট রিপ্লাই সাজেশন দেখতে পাবেন আরসিএস মেসেজিং এর ক্ষেত্রে। এতে বেশ দ্রত মেসেজিং করার সুবিধা পাওয়া যাবে। কেননা টাইপিং এর চেয়ে এই ফিচার অনেক দ্রুত। এছাড়া মেসেজ এর উপর ভিত্তি করে সাজেস্টেড একশনও দেখতে পাবেন।

👉 গুগলের সেরা কিছু টিপস যা সবার জানা উচিত

ক্যাটাগরিঃ গুগল সবসময় অরগানাইজেশনকে বেশ গুরুত্ব প্রদান করে, যার প্রমাণ আরসিএ মেসেজিং। গুগল মেসেজেস অ্যাপে সুবিধামত কনটাক্টকে গ্রুপ আকারে সাজিয়ে রাখা যাবে। সেটিংস থেকে Message Organization মেন্যুতে এই ফিচার পেয়ে যাবেন।

ইমোজি রিয়েকশনঃ আরসিএস মেসেজিং এর ক্ষেত্রে অন্যসব মেসেজিং অ্যাপ এর মত মেসেজে ইমোজি রিয়েকশন প্রদানের ফিচার রয়েছে।

শেডিউলিংঃ আরসিএস মেসেজ পরে সেন্ড হওয়ার জন্য টাইম সেট করে রাখা যায়। অর্থাৎ মেসেজ শিডিউলিং এর গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা পেয়ে যাচ্ছেন এখানে।

ওয়েব ক্লায়েন্টঃ হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম এর মত গুগল মেসেজেস অ্যাপেরও একটি ওয়েব ক্ল্যায়েন্ট রয়েছে যার মাধ্যমে সহজে কিউআর কোড স্ক্যান করে যেকোনো ডিভাইসে ফোনের মেসেজগুলো দেখতে পাবেন।

এডিশনাল ফিচারঃ এছাড়া আরসিএস টেক্সটিং এর সময় প্লাস আইকনে ট্যাপ করে আরো ফিচার পেয়ে যাবেন।

👉 ভিডিওঃ জিমেইল একাউন্ট খোলার নিয়ম

👉 আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করে সাথেই থাকুন। এখানে ক্লিক করে সাবস্ক্রিপশন কনফার্ম করুন!

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,543 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *