নকিয়া ফোনগুলো মূলত HMD নামক এক কোম্পানি দ্বারা বাজারজাত করা হয়। নকিয়া ব্র্যান্ডের লাইসেন্স নিয়ে HMD নানা ধরনের বাটন ফোন এবং সাশ্রয়ী মূল্যের, হাই স্পেক এন্ড্রয়েড ফোন তৈরি করে থাকে।
একটু পেছনে ফিরে তাকালে ফোনের ক্ষেত্রে যখন কোন ব্রান্ডের কথা আসে তখন নোকিয়া এর থেকে বেশি বিখ্যাত কিছু খুঁজে পাওয়া খুব কষ্টসাধ্য। কেননা মোবাইল ফোন জগতে বিশ্বব্যাপী পরিচিত ব্রান্ডের যাত্রা শুরু হয়েছিল নোকিয়ার হাত ধরে। আপনি যদি নব্বই দশকে বা আগে জন্ম নিয়ে থাকেন তাহলে মোবাইল ফোন জগতে নোকিয়ার রাজত্ব অবশ্যই দেখে থাকবেন।
কাল্ট ক্লাসিক নোকিয়া ৩৩১০, যেটিকে বেশির ভাগ সময় ব্রিক ফোন নামে ডাকা হতো, সম্ভবত নকিয়ার সব গুলো ফোনের মধ্যে সর্বাধিক পরিচিত। মডেলটি এতটাই জনপ্রিয় ছিল যে HMD কয়েক বছর আগে রঙিন ফোরজি এবং নন ফোরজি নোকিয়া ৩৩১০ রিলিজের সাথে সাথে ফোনটি নতুন করে তৈরি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল।
তবে বর্তমান যুগ স্মার্টফোনের যুগ। নতুন যুগের সাথে তাল মেলানোর জন্য নোকিয়া ভালো কিছু মডেলের স্মার্টফোনও বের করেছে। কোম্পানিটি বর্তমানে অনেক বেশি পরিমাণে বাজেট রেঞ্জের মধ্যে এন্ড্রয়েড পাওয়ার্ড ফোন বাজারে নিয়ে এসেছে। স্মার্ট ফোনের বড় পরিসরের ক্ষেত্রে নোকিয়া অন্যান্য ব্রান্ডের তুলনায় বেশ পিছিয়ে গিয়েছে বলাই যায়। তবে দিন দিন তারা চেষ্টা করছে তাদের পুরানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে নিয়ে আসার। নতুন কোনো ফোন ক্রয় করার ক্ষেত্রে নোকিয়া কেমন হবে সে বিষয়ে আমরা আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
নকিয়া এন্ড্রয়েড ফোন কেনা কেমন হবে?
আসুন নোকিয়া ফোন কিনলে আপনি কি কি সুবিধা পেয়ে যাবেন সে ব্যাপারে আলোচনা করি। বর্তমান সময়ের এ এতগুলো অ্যান্ড্রয়েড ফোন কোম্পানির ভিতর একটি ভালো ব্রান্ড হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা খুব কঠিন। যেমনটা হয়েছিল সনির ক্ষেত্রে। তারা অন্যান্য গ্যাজেট অনেক ভালো ভাবে বাজারে আনতে পারলেও ফোনের জগতে ঠিক মতো সুবিধা করতে পারেনি। বর্তমান বাজারে আপনার পণ্যের চিহ্ন রেখে দেওয়ার জন্য আপনার পণ্যের স্পেকের থেকেও আরো অনেক বেশি কিছু প্রয়োজন। আপনার ইউএসপি, ভ্যালু ফর মানি এবং অত্যাধুনিক হার্ডওয়্যার প্রয়োজন। এ সকল ক্ষেত্রে নোকিয়ার সাম্প্রতিক আউটপুট সবগুলো ভিন্ন ভিন্ন স্তরেই প্রতিটিতেই বড় স্কোর করার চেষ্টা করছে।
অনেক বেশি অপশন (ফ্লাগশিপ থেকে বাজেট পর্যন্ত)
নোকিয়া এর এন্ড্রয়েড ফোনের লাইনআপ সম্পর্কে সবচেয়ে ভালো যে সুবিধা সেটি হল এটি প্রায় প্রতিটি ধরনের ব্যবহারকারীদের চাহিদা পূরণ করে থাকে। এক্ষেত্রে যারা ফ্লাগশিপ ফোন পছন্দ করেন তাদের জন্য আলাদা ফ্লাগশিপ ডিভাইস এবং যারা স্মার্টফোনের পিছনে অল্প টাকা খরচ করতে চায় তাদের জন্য বাজেট ফ্রেন্ডলি ডিভাইস তারা বানিয়ে থাকে। এমন কি যারা স্মার্টফোন ব্যবহার করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে না তাদের জন্য HMD নোকিয়া ফিচার ফোন তৈরি করে থাকে। 👉 নকিয়ার বাটন মোবাইল দাম
আপনি কেমন জিনিস চাচ্ছেন অথবা আপনি কত টাকা খরচ করতে চান কিংবা আপনি যে সকল ফাংশন আপনার ফোনে চান সেগুলো যদি আপনি জেনে থাকেন তাহলে এই ধরনের পছন্দের তালিকা আপনার জন্য অনেক ভালো একটি অপশন হিসেবে বিবেচিত হয়। স্যামসাং এর মত নোকিয়া এমন একটি পন্থা বেছে নিতে চাচ্ছে যেখানে প্রায় সকল প্রাইস রেঞ্জের মধ্যেই ফোন তৈরি করা সম্ভব। এর ফলে ফোন বিক্রি করার সংখ্যা ও বৃদ্ধি পাবে। তবে এক্ষেত্রে নোকিয়ার চিন্তা করতে হবে যে স্যামসাং তাদের ফোনের মার্কেটিংয়ের জন্য বিলিয়ন ডলার খরচ করে।
স্টক এন্ড্রয়েড
নোকিয়ার অ্যান্ড্রয়েড ফোনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো যে তারা এন্ড্রয়েডের মূল ভার্সন ব্যবহার করে। একে মূলত স্টক অ্যান্ড্রয়েড বলা হয়ে থাকে। এর অর্থ হল আপনি যখন এই ফোন ব্যবহার করছেন তখন google এর পছন্দ মতো এন্ড্রয়েড আপনি ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন। এতে করে স্যামসাং এবং ওয়ান প্লাস ফোনের থেকে আরো কম ব্লোটওয়্যার পাওয়া যাবে।
ফ্লাগশিপ ফোনের ক্ষেত্রে তুলনামূলক কম মূল্য
নকিয়ার এন্ড্রয়েড ফোনগুলো খুব বেশি সস্তা না হলেও খুব বেশি দামীও না। তাই একটা যুক্তিযুক্ত দামের মধ্যে তাদের সেরা ফোনগুলো পেয়ে যাবেন। 👉 নকিয়া ফোনের দাম
🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥
সলিড ডিজাইন
নোকিয়া বরাবরই তাদের ফোন ডিজাইনের ক্ষেত্রে বেশ ভালো করে আসছে। নোকিয়ার বর্তমান ফোনগুলোর আউটপুট দেখলে বোঝা যাবে যে তারা তাদের এই এটেনশন টু ডিটেইল এর ব্যাপারে এখনো খুব ভালোভাবে ইন্ডাস্ট্রিতে স্থান দখল করে আছে। এবং এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো দিক হলো আপনি লোয়ার বাজেট কিংবা আপার বাজেট- যে বাজেটেরই ফোন কিনেন না কেন আপনি সেখানে ভালো এবং সুন্দর ডিজাইন খুঁজে পাবেন।
নকিয়ার এন্ড্রয়েড ফোন কি কেনা উচিত?
নোকিয়ার অ্যান্ড্রয়েড ফোনের অনেক কিছুই সবার পছন্দ হতে পারে। কেননা এটিতে স্টক android ব্যবহার করা হয় যার ফলে এর UX অনেক স্মুথ। এছাড়া আপনি ২ বছর পর্যন্ত এন্ড্রয়েডের আপডেটের পাশাপাশি ৩ বছর পর্যন্ত মাসিক সিকিউরিটি আপডেটের সুবিধা পেয়ে যাবেন। এবং এর মধ্যম থেকে উচ্চতর এন্ডের মডেল গুলোত্র বেশ ভালো ক্যামেরা এবং ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল ডিজাইন পেয়ে যাবেন। 👉 নকিয়ার গড়া কিছু রেকর্ড যা আপনাকে অবাক করে দেবে!
তবে এটিকে যদি আপনি samsung এর অ্যান্ড্রয়েড ফোনের সাথে তুলনা করতে চান তাহলে হয়তো বর্তমানে এটি সেই অবস্থানে যেতে পারেনি। কিন্তু আপনাকে এটাও চিন্তা করতে হবে যে এটি অনেক কম বাজেটের মধ্যে এবং অনেক বেশি ফাংশনালিটি সম্পন্ন একটি ফোন। এর ফলে যারা ভ্যালু ফর মানি সম্পন্ন কোনো ডিভাইস ক্রয় করতে চান তাদের কাছে এটি পছন্দের তালিকায় শীর্ষস্থান দখল করতে পারে।
একজন সাধারন ব্যবহারকারীর জন্য একটি নোকিয়া অ্যান্ড্রয়েড ফোন যথেষ্ট সেবা প্রদান করবে। আপনি এতে চমৎকার ক্যামেরা, সলিড পারফরম্যান্স, ভালো সফটওয়্যার এবং সেরা সাপোর্টের সুবিধা পেয়ে যাবেন। তাই আপনার বাজেট যদি কিনা এমন হয় যে আপনি অতিরিক্ত খরচ করতে চান না তাহলে আপনি নোকিয়ার এন্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করতে পারেন। নোকিয়া ফোন সম্পর্কিত আমাদের আজকের এই আর্টিকেল আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে তা আমাদের কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিয়ে দিতে পারবেন। এছাড়াও নিত্য নতুন টেকনোলজি বিষয়ক নানা ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং প্রয়োজনীয় সকল ধরনের টিপস এন্ড ট্রিকস পেতে চোখ রাখুন আমাদের এই ওয়েবসাইটে।
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।