পৃথিবীতে ৫ সেকেন্ডের জন্য কোন অক্সিজেন না থাকলে আমাদের কী অবস্থা হত তা নিয়ে আমরা আগের একটি পোস্টে আলোচনা করেছিলাম। সেই পোস্টটির মন্তব্য ও অন্যান্য প্রতিক্রিয়া থেকে জেনেছি টপিকটি আপনাদের অনেকেরই ভাল লেগেছে। তাই আজ আবারও ফিরে এলাম অক্সিজেন নিয়ে… মানে অক্সিজেন টপিক সঙ্ক্রান্ত আরেকটি পোস্ট নিয়ে আরকি!
আজকে আমরা জানার চেষ্টা করব, পৃথিবীতে অক্সিজেনের পরিমাণ যদি হঠাত দ্বিগুণ হয়ে যায় তাহলে এর কী কী প্রভাব পড়বে আমাদের ওপর। কেউ কেউ হয়ত এ ব্যাপারে আগে থেকেই জানেন, তারা মন্তব্যের মাধ্যমে নতুন কিছু থাকলে আমাদের সাথে শেয়ার করবেন বলে আশা রাখছি। তো চলুন, শুরু করা যাক।
পৃথিবীতে অক্সিজেনের পরিমাণ দ্বিগুণ হলে সম্ভাব্য যা যা ঘটতে পারে
কাগজের তৈরি উড়োজাহাজ আরও বেশিদূরে উড়ে যাবেঃ অক্সিজেন দ্বিগুণ হওয়া মানে আমাদের চারপাশে গ্যাসীয় উপাদানের চাপ বৃদ্ধি পাওয়া। আর এজন্য গ্লাইডার, প্যারাস্যুট, পাখী কাগুজে বিমান প্রভৃতি উড্ডয়নে আরেকটু সুবিধা পাবে।
গ্যাস চুল্লী/ ইঞ্জিনের দক্ষতা বেড়ে যাবেঃ আমরা জানি, অক্সিজেন নিজে না জ্বললেও অপরকে জ্বলতে সাহায্য করে। সুতরাং পরিবেশে অক্সিজেন বেড়ে গেলে তা দহনে অধিক সাহায্য করবে। আর গ্যাস ইঞ্জিনে নাইট্রোজেনের অনুপাত ও তাপ স্থানান্তর কমিয়ে উত্তম কার্যক্ষমতা আনবে।
প্রত্যেকে নিজেকে আরও তৎপর, কর্মঠ এবং সুখী অনুভব করবেঃ খুবই স্বাভাবিক- কেননা বিশুদ্ধ অক্সিজেন আমাদের চেতনা, সক্রিয় মানসিকতা এবং দৈহিক দক্ষতার উন্নতি সাধন করে। তখনকার লোকজন বর্তমান দুনিয়ার অ্যাথলেট বা ক্রীড়াবিদদের বহু সাধের রেকর্ড সকাল বিকাল ভাঙতে থাকবেন!
আমাদের রোগব্যাধি কম হবেঃ রক্তের শ্বেতকণিকা বা নিউট্রোফিল আমাদের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এতে এনএডিপি (NADP) অক্সিডেস পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়, অধিক অক্সিজেনে যার দক্ষতা বেড়ে যায়। ফলে বাজারের ডেটল/ লাইফবয় ছাড়াই রোগজীবাণু ধ্বংস করা সম্ভব হবে। (এসিআই ও ইউনিলিভারের মত কোম্পানি হয়ত তখন নতুন ধান্ধা শুরু করবে :P)
কীটপতঙ্গের আকার অস্বাভাবিক রকম বড় হতে থাকবেঃ অনেক কীটপতঙ্গের দেহের আকার বায়ুমণ্ডলের অক্সিজেনের অনুপাতের ওপর নির্ভর করে। পরিবেশে অক্সিজেনের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে গেলে অধিকাংশ পোকামাকড় ‘জায়ান্ট’ হিসেবে দেখা দেবে, আবার কিছু কিছু ছোটও হয়ে যাবে।
মানুষ অল্প বয়সেই মারা যাবেঃ এতক্ষণ অক্সিজেনের সুবিধা দেখে যারা খুব খুশী হয়েছিলেন এবং “কেন এমন হচ্ছেনা” ভেবে মেজাজ খারাপ করে ফেলেছেন, এবার তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্য। হ্যাঁ, অক্সিজেন দ্বিগুণ হলে তা আমাদের বয়সজনিত প্রক্রিয়া যেমন প্রোটিন উৎপাদন, ডিএনএ রেপ্লিকেশন, আন্তঃকোষীয় যোগাযোগ প্রভৃতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বলা হয় যা কিনা ক্যান্সারের জন্য দায়ী বলে মনে করা হয়। ব্যাপক ভয়ের ব্যাপার বটে!
সোজা কথায়, দ্বিগুণ অক্সিজেনযুক্ত একটি পরিবেশে আমরা অনেকটা কাগজের মত জ্বলে উঠতাম, যার উজ্জ্বলতা বেশি কিন্তু স্থায়িত্ব কম!
ভাগ্যিস পৃথিবীর পরিবেশটা আমাদের অনুকূলে আছে… আমাদের যা যতটুকু দরকার সেগুলো ঠিক ব্যালেন্স নিয়েই আছে! পরম করুণাময়কে তাঁর এই অসীম দয়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ!
আপনাদের অনুভূতি মন্তব্যের মাধ্যমে জানানোর আমন্ত্রণ রইল, ধন্যবাদ।
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।