সস্তায় বা ফ্রি উইন্ডোজ ব্যবহারের কৌশল

কম্পিউটার তৈরিতে হাজার হাজার টাকা খরচ করলেও অপারেটিং সিস্টেম ছাড়া এটি কিন্তু অচল। হ্যাঁ, বিনামূল্যে লিনাক্স ভিত্তিক বেশ কিছু অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু সব ধরনের গেমস বা সফটওয়্যার সহজভাবে ব্যবহার করতে চাইলে উইন্ডোজ বর্তমানে শীর্ষ একটি ওএস।

আমাদের দেশে অধিকাংশ মানুষ উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করেন তাদের কম্পিউটারে। অনেকেই কখনো এই অপারেটিং সিস্টেম টাকা না দিয়ে কেনেনা। কিন্তু আসলে এই অপারেটিং সিস্টেম একটি পেইড সফটওয়্যার। উইন্ডোজ ১০ ও ১১ হোম এডিশন এর দাম ১৩৯ডলার, অন্যদিকে প্রো ভার্সন এর দাম ১৯৯ডলার।

যারা ল্যাপটপ ব্যবহার করেন, তাদের অনেকেরই এই বিষয়ে তেমন চিন্তা করতে হয়না। কেননা ল্যাপটপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ছোট অংকের অর্থ খরচ করে অপারেটিং সিস্টেম ক্রয় করে ও তা নতুন ল্যাপটপে বলতে গেলে বিনামূল্যতে ইন্সটল করে দেয়। তবে সমস্যা হয় পিসি বিল্ডারদের, যেহেতু তাদের পিসিতে আগে থেকে উইন্ডোজ ইন্সটল করা থাকেনা, তাই উইন্ডোজ এর আসল ভার্সন ব্যবহার করার একমাত্র উপায় হচ্ছে টাকা দিয়ে উইন্ডোজ কেনা।

মজার ব্যাপার হলো Microsoft.com থেকে বিনামূল্যে ও নিরাপদে উইন্ডোজ ডাউনলোড করা যায়। তবে ইন্সটলের পর উইন্ডোজ এর প্রোডাক্ট কি প্রদান করে উইন্ডোজ একটিভ করতে হয়। উইন্ডোজ একটিভ করার জন্য প্রোডাক্ট কি না থাকলে স্কিপ করা যেতে পারে, তবে সেক্ষেত্রে উইন্ডোজ এর পেইড ফিচারগুলো উপভোগ করতে পারবেন না।

এই পোস্টে আমরা জানবো কিভাবে কম দামে বা বিনামূল্যে উইন্ডোজ ১০ বা উইন্ডোজ ১১ ব্যবহার করবেন।

উইন্ডোজ আপগ্রেড করুন 

আপনার কম্পিউটারে যদি ইতিমধ্যে উইন্ডোজ এর কোনো সাপোর্টেড ভার্সন ইন্সটল করা থাকে, তবে পরবর্তী ভার্সনে বিনামূল্যে আপগ্রেড করতে পারবেন। এছাড়া Meda Creation Tool এর মাধ্যমেও উইন্ডোজ আপগ্রেড করতে পারেন, আবার উইন্ডোজ আপডেট এর মাধ্যমেও একই কাজ করা যেতে পারে।

অন্য কম্পিউটারের উইন্ডোজ কি ব্যবহার করুন 

আপনার কাছে যদি অন্য কম্পিউটারে অব্যবহৃত উইন্ডোজ ৭, ৮ বা ১০ এর রিটেইল কপি থাকে, তাহলে তার প্রোডাক্ট কি ব্যবহার করে নতুন কম্পিউটারে উইন্ডোজ ইন্সটল করতে পারবেন। একাধিক উপায়ে আপনার কম্পিউটারের সিরিয়াল কি খুঁজে বের করতে পারবেন। Magical Jelly Bean Keyfinder নামের একটি ফ্রি সফটওয়্যার ব্যবহার করে বেশ সহজে আপনার পুরোনো কম্পিউটার থেকে উইন্ডোজ এর প্রোডাক্ট কি খুঁজে বের করতে পারেন।

উল্লেখ্য যে উক্ত কম্পিউটার যদি প্রি-বিল্ট হয় ও উইন্ডোজ এর মধ্যে আগে থেকেই ইন্সটল থাকে, তবে এর মধ্যে OEM কি থাকবে যা নতুন কম্পিউটারে কাজ করবেনা। তবে চেষ্টা করতে কোনো ক্ষতি নেই, তাই পুরোনো কম্পিউটারের উইন্ডোজ এর প্রোডাক্ট কি ব্যবহার করার ট্রাই করে দেখতে পারেন। যদি এই প্রক্রিয়া কাজ করে যায়, তবে আর বাড়তি খরচ না করেই জেনুইন উইন্ডোজ পেয়ে যেতে পারেন।

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

windows computer

👉 উইন্ডোজ ১০ এর মধ্যে বিজ্ঞাপন বন্ধ করার নিয়ম

স্টুডেন্ট ডিসকাউন্ট 

কিছু কিছু কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে উইন্ডোজ প্রদান করে থাকে মাইক্রোসফট। আপনিও চাইলে উইন্ডোজ এডুকেশন ভার্সন এর জন্য আবেদন করতে পারেন। মজার ব্যাপার হলো উইন্ডোজ এর প্রো ভার্সনের সকল সুবিধার পাশাপাশি উইন্ডোজ সাধারণ এডিশনের চেয়ে অনেক বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায় উইন্ডোজ এডুকেশনে। শিক্ষকদের জন্য মাত্র ১৪.৯৯ডলার দামে উইন্ডোজ প্রদান করে মাইক্রোসফট, আর শিক্ষার্থী হিসেবে সম্পুর্ণ বিনামূল্যে উইন্ডোজ এর কপি পেয়ে যেতে পারেন। এজন্য আপনার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করুন। তাদের সাথে মাইক্রোসফটের এজাতীয় চুক্তি থাকতে পারে।

উইন্ডোজ ইনসাইডার

উইন্ডোজের বিভিন্ন আপডেট পরীক্ষামূলক অবস্থায় ব্যবহার করার জন্য উইন্ডোজ ইনসাইডার প্রোগ্রামে যুক্ত হয়ে উইন্ডোজের বেটা ভার্সনগুলো ফ্রি ব্যবহার করা যায়। তবে এগুলো স্ট্যাবল না হওয়ায় আপনি বিভিন্ন বাগের সম্মুখীন হবেন। তাই এই পদ্ধতিতে আপনার কাজের পিসিতে উইন্ডোজ ব্যবহার না করাই ভাল।

উইন্ডোজ একটিভেট না করলে কী হবে?

আপনার কাছে উইন্ডোজ এর ভ্যালিড প্রোডাক্ট কি না থাকলে সেক্ষেত্রে উইন্ডোজ ইন্সটলের সময় প্রোডাক্ট কি প্রদান না করে ইনএকটিভেটেড ভার্সন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সীমিত আকারে ব্যবহার করতে পারেন। তবে এরপর বিভিন্ন ফিচার লক থাকবে এবং পিসি নিজে নিজে রিস্টার্ট নিতে পারে। উইন্ডোজের লাইসেন্স এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী আপনাকে এটি মাইক্রোসফটের অনুমোদিত উপায়ে এক্টিভ করেই ব্যবহার করতে হবে।

উইন্ডোজ একটিভ না করার প্রথম অসুবিধা হলো স্ক্রিনের ডানদিকের বোটম কর্নারে আপনি যে উইন্ডোজ এর নন-একটিভিটেড কপি ব্যবহার করছেন তা লেখা আকারে দেখানো হবে সবসময়। দ্বিতীয় অসুবিধা হলো ওয়ালপেপার, মাউস পয়েন্টার বা ডেস্কটপ থিম পরিবর্তন এর মত পারসোনালাইজেশন এর কোনো সুবিধা পাবেন না। 

একটিভেট না করে বিনামূল্যে উইন্ডোজ ব্যবহার করলে সেক্ষেত্রে কাস্টমাইজেশন ও পারসোনালাইজেশন এর সকল ফিচার ব্লক করে রাখে মাইক্রোসফট। যদিওবা মাইক্রোসফট সাপোর্ট অনেকেই ব্যবহার করেনা, কিন্তু বলে রাখা ভালো উইন্ডোজ একটিভেট না করলে এই সুবিধা পাওয়া যায়না।

আপনি কি উইন্ডোজ ব্যবহার করেন? কেমন লাগে? আপনার অভিজ্ঞতা কমেন্টে জানান!

👉 আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করে সাথেই থাকুন। এখানে ক্লিক করে সাবস্ক্রিপশন কনফার্ম করুন!

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,543 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *