ইউটিউব ব্র্যান্ড একাউন্ট কি? সুবিধা ও তৈরির নিয়ম জানুন

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ট্রাফিকের ওয়েবসাইটের তালিকায় ইউটিউবের অবস্থান দ্বিতীয়, যেখানে প্রথম অবস্থানে রয়েছে ইউটিউব এর প্যারেন্ট কোম্পানি গুগল। গুগল এর পর বিশ্বের সর্ববৃহৎ সার্চ ইঞ্জিনের তালিকাতেও ইউটিউবের অবস্থান দ্বিতীয়।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং স্ট্রেটেজির অন্যতম অংশে পরিণত হয়েছে ইউটিউব, যার ফলে যেকোনো ব্যবসার প্রচার ও প্রসারে অন্য যেকোনো সোশ্যাল মিডিয়ার সমান অবদান রাখে ইউটিউব। ভিডিও কনটেন্ট এর জনপ্রিয়তা দিনদিন বেড়েই চলেছে, তাই ইউটিউবকে বাদ দিয়ে কোনো ধরনের মার্কেটিং স্ট্রেটেজির কথা ভাবা প্রায় অসম্ভব। 

আপনার ব্যবসা বা ব্র‍্যান্ডের জন্য হয়ত ইতিমধ্যে একটি ইউটিউব চ্যানেল আপনার রয়েছে। কিন্তু আপনি কি জানেন ব্র‍্যান্ডের জন্য আলাদা ফিচার অফার করে থাকে ইউটিউব? অন্যান্য যেকোনো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের মত চ্যানেলকে আলাদা Brand Account এর সাথে যুক্ত করা সুবিধা প্রদান করে ইউটিউব। এই পোস্টে জানবেন ইউটিউব ব্র‍্যান্ড একাউন্ট কি, ইউটিউব ব্র‍্যান্ড একাউন্ট খোলার নিয়ম ও ইউটিউব ব্র‍্যান্ড একাউন্টের সুবিধাসমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত।

ইউটিউব ব্র্যান্ড একাউন্ট কি?

ইউটিউব ব্র‍্যান্ড একাউন্ট হলো বিজনেস একাউন্ট যা পারসোনাল চ্যানেলের মাধ্যমে একটিভেট ও ম্যানেজ করা যাবে। ব্র‍্যান্ড একাউন্টে মাধ্যমে ইউটিউবে আপনার কোম্পানির অনন্য পরিচয়, ব্র‍্যান্ডিং ও কনটেন্ট শেয়ার করার সুবিধা পাওয়া যায়।

ব্র‍্যান্ড একাউন্টে চ্যানেল ম্যানেজার এড করার ফিচার রয়েছে। টিম হিসেবে কাজের ক্ষেত্রে ইউটিউবে প্রোমোট ও এডভার্টাইজিং এর কাজ সাবলীলভাবে করা যায় এই ফিচারের মাধ্যমে। একজনের উপর ব্র‍্যান্ড একাউন্টের নিয়ন্ত্রণ না রেখে একাধিক ব্যক্তি একই ব্র‍্যান্ড চ্যানেল ম্যানেজ করতে পারেন। এর ফলে একেকজন একেক কাজের দায়িত্ব নিতে পারে ও ব্র‍্যান্ডের চ্যানেল সহজভাবে ম্যানেজ করা যায়।

ইউটিউব ব্র‍্যান্ড একাউন্ট কি তা তো জানা গেলো। এবার আমরা জানবো কিভাবে আপনার চ্যানেলকে ব্র‍্যান্ড একাউন্টের সাথে কানেক্ট করবেন ও এর থেকে কি উপকার উপভোগ করতে পারবেন সে সম্পর্কে।

ইউটিউব ব্র্যান্ড একাউন্ট কীভাবে খোলে? 

ব্র‍্যান্ড একাউন্ট সেটাপ এর প্রক্রিয়া শুরু করার আগে আপনার ইউটিউব একাউন্টে লগিন করুন। মূলত  ইতিমধ্যে ইউটিউবে একাউন্টে না থাকলে ইউটিউব একাউন্ট কিভাবে খুলতে হয় তা জেনে নিন।

ইউটিউব একাউন্ট বা চ্যানেল খোলার পর এবার পালা ইউটিউব ব্র‍্যান্ড একাউন্টের সাথে উক্ত একাউন্ট কানেক্ট করার। এই প্রক্রিয়া কম্পিউটার থেকে সম্পন্ন করা অধিক সহজ। তবে মোবাইল ব্রাউজার থেকে ডেস্কটপ মোড ব্যবহার করে একইভাবে ইউটিউব ব্র‍্যান্ড একাউন্ট খোলা যাবে।

প্রথমে ইউটিউবে প্রবেশ করুন ও হোমপেজের ডানদিকের টপ কর্নারে থাকা প্রোফাইল পিকচার আইকনে ক্লিক করুন। প্রদর্শিত ড্রপ-ডাউন মেন্যু থেকে Settings এ ক্লিক করুন।

এবার ইউটিউব একাউন্ট সেটিংস দেখতে পাবেন। Add or manage your channel(s) অপশনে ক্লিক করুন। এরপর “Create a new channel” এ ক্লিক করুন। আপনার ব্যান্ড একাউন্টের নাম লিখুন ও Create অপশনে ক্লিক করুন।

আপনার ইউটিউব পারসোনাল চ্যানেল ও ব্র‍্যান্ড একাউন্টের নাম চাইলে একই রাখতে পারেন। কিন্তু এই প্রক্রিয়ার কোন ধাপে আছেন ও কোনটি কোন চ্যানেল তা বুঝার সুবিধার্থে আলাদা নাম দেওয়া যেতে পারে। উল্লেখিত প্রক্রিয়া সঠিকভাবে অনুসরণ করলে আপনার ব্র‍্যান্ড একাউন্ট তৈরী হয়ে যাবে। এবার পালা উক্ত ব্র‍্যান্ড একাউন্টে পারসোনাল ইউটিউব চ্যানেল এড করা। আপনি যদি পারসোনাল চ্যানেলকে ব্র‍্যান্ড একাউন্টে মুভ করতে না চান, তবে উক্ত ব্র‍্যান্ড একাউন্ট চ্যানেল হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন ও বর্ণিত পরবর্তী ধাপসমূহ অনুসরণের প্রয়োজন নেই।

ইউটিউব পারসোনাল চ্যানেলকে ব্র‍্যান্ড একাউন্টে পরিণত করতে আবার ইউটিউব সেটিংসে প্রবেশ করুন ও View Advanced Settings অপশনে ক্লিক করুন। এবার Move channel to a brand account এ ক্লিক করুন। এবার কোন একাউন্ট কোন ব্র‍্যান্ডের একাউন্টের সাথে যুক্ত করতে চান তা সিলেক্ট করুন।  

ব্যাস! আপনার পারসোনাল ইউটিউব চ্যানেল ব্র‍্যান্ড একাউন্টের সাথে যুক্ত হয়ে যাবে। এভাবে উল্লেখিত উপায়ে খুব সহজে ইউটিউব ব্র‍্যান্ড একাউন্ট খোলা যাবে। মনে রাখবেন, এই প্রক্রিয়ায় গুগল যেকোনো সময় পরিবর্তন আনতে পারে। তাই ব্র্যান্ড একাউন্ট খোলার আগে ইউটিউবের অফিসিয়াল সাপোর্ট পেজ দেখে নিন।

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

👉 ইউটিউব থেকে আয় করার উপায়

সুবিধা

ভিডিও এর মাধ্যমে সবচেয়ে সেরা ভাবে গল্প বলা যায় যা শব্দ বা ছবি দিয়ে সম্ভব নয়। তবে ভিডিও তৈরী করে তা ইউটিউবে আপলোড করা যথেষ্ট নয়। ইউটিউব এর যথাযথ ব্যবহারে অক্ষম হলে আশানুরূপ সাফল্য না পাওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার।

ইউটিউবে সফল হওয়া সম্পর্কে আলোচনা করা যাবে অন্য কোনো পোস্টে। ইউটিউব ব্র‍্যান্ড একাউন্ট খোলার নিয়ম তো জানলেন। এই পোস্টে চলুন একনজরে ইউটিউব ব্র‍্যান্ড একাউন্ট এর সুবিধা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

এনহেন্সড সিকিউরিটি

ইউটিউব ব্র‍্যান্ড একাউন্টে পারসোনাল গুগল একাউন্টের মাধ্যমে কোনো ধরনের ব্যাক্তিগত তথ্য শেয়ার করা ছাড়াই অ্যাকসেস প্রদান করা যায়। অর্থাৎ আপনার গুগল একাউন্টের তথ্য কারো সাথে শেয়ার করা ছাড়াই নিরাপদে চ্যানেল ম্যানেজার এড করা যাবে।

টিম কোলাবোরেশান

ব্র‍্যান্ড একাউন্টে দুই ধরনের অ্যাকসেস ফিচার রয়েছে – owner ও ম্যানেজার। ব্র‍্যান্ড একাউন্টের Owner ম্যানেজার এড বা রিমুভ করতে পারেন, বিজনেস ইনফরমেশন এডিট করতে পারেন, ভিডিও ম্যানেজ ও পোস্ট করতে পারেন, কমেন্টে অডিয়েন্সের সাথে ইন্টারেক্ট করতে পারেন।  অন্যদিকে উল্লেখিত সকল ধরনের অ্যাকসেস ম্যানেজারের রয়েছে, শুধুমাত্র ম্যানেজার এড বা রিমুভ করার ক্ষমতা ছাড়া।

কাস্টমাইজেশন

ব্র‍্যান্ড একাউন্ট এর মাধ্যমে চ্যানেলের নাম ও ইউআরএল সেট করা যায়। সাধারণ ব্যবহারের একাউন্টের নাম ও চ্যানেলের নাম একই রাখার পরামর্শ দেয় ইউটিউব। তবে ব্র‍্যান্ড একাউন্টের ক্ষেত্রে নাম যা আলাদা ব্যবহার করা যায়।

👉 আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করে সাথেই থাকুন। এখানে ক্লিক করে সাবস্ক্রিপশন কনফার্ম করুন!

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,543 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *