আজকাল বেশ কিছু ফ্ল্যাগশিপ ফোন নির্দিষ্ট একটা মাত্রা পর্যন্ত ওয়াটার রেজিস্ট্যান্ট হিসেবে এলেও চিরাচরিতভাবে মোবাইল ফোনগুলোকে পানি থেকে দূরেই রাখা হয়। পানি আর মোবাইল ফোনে অনেকটা “দা-কুমড়া” জাতীয় সম্পর্ক। অবশ্য এটা সব ধরনের ইলেক্ট্রনিক্স এর বেলাতেই খাটে। এমনকি যে সাবমেরিন পানির নিচে চলে সেটাও পানিরোধী হিসেবেই তৈরি করা হয়। তো, আর ধান ভানতে শিবের গীত না করে চলুন আসল কথায় ফিরে আসি।
আপনার মোবাইল ফোনটি যদি পানিরোধী না হয় আর হঠাৎ যদি সেটি ভিজে যায় কিংবা পানিতে পড়ে যায় তাহলে আপনার কী করা উচিত? চলুন এই প্রশ্নটির উত্তর জেনে আসি।
ফোনটি বন্ধ করুন
জেমসের সেই গানটা শুনেছেন “আমি তো প্রেমে পড়িনি, প্রেম আমার উপরে পড়েছে”? ব্যাপারটা এরকমও হতে পারে। মোবাইল ফোন পানিতে পড়ে যাক কিংবা পানি ফোনের উপরে পড়ুক- যেটাই হোক না কেন, সাথে সাথে ফোনটি বন্ধ করে ফেলুন। আর চার্জারে লাগানো থাকলে তো কথাই নেই। সাথে সাথে চার্জার থেকে আলাদা করে ফেলুন। ভেজা অবস্থায় ফোন ভুলেও চার্জে লাগাবেন না। আপনার ফোনটি যদি পুরনো মডেলের হয় তাহলে হয়তো ব্যাটারি খুলে নেয়ার অপশন থাকবে। সেক্ষেত্রে ব্যটারিটি খুলে ফেলুন।
পানির জন্য ফোনের সবচেয়ে দ্রুত যে ক্ষতিটি হয় তা হল, পানি ফোনের মাদারবোর্ডের সার্কিটগুলোকে শর্ট করে দেয়। মানে “শর্ট সার্কিট” হয় আরকি। আপনি বিজ্ঞানের ছাত্র হলে শর্ট সার্কিট কী তা অবশ্যই জানেন। অন্য বিভাগের ছাত্র হয়েও শর্ট সার্কিট জিনিসটা সম্পর্কে ধারণা থাকলে সেটা আপনার ক্রেডিট। এটা ঘটে যদি পানিতে ভেজা অবস্থায় আপনার ফোনে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়। (আরো অনেক কারণে হতে পারে)। ভেজা ফোনে শর্ট সার্কিট এড়াতে ফোন বন্ধ করে ব্যাটারি খুলে ফেলাই সবচেয়ে উত্তম।
ফোনটি ধুয়ে নিন
শিরোনাম দেখে বিভ্রান্ত হবেন না। এটা শুধুমাত্র তখনই করবেন যখন আপনার ফোনটি সমুদ্রের জলে কিংবা স্যুপের বাটিতে পড়ে যায়। কারণ সামুদ্রিক লোনা পানিতে অনেক লবণ থাকে যা আপনার ফোনের মাদারবোর্ডের ক্ষতি করতে পারে। তাই তাড়াতাড়ি ফোনটি পরিষ্কার জলের ধারাতে ধুয়ে ফেলুন। তবে অবশ্য সাবধানে। তা না হলে হিতে বিপরীত হতে পারে। আর ভুলেও বাটিতে পানি নিয়ে তাতে ডুবাবেন না।
ফোন নিয়ে ঝাঁকাঝাঁকি নয় একদম
অনেকে ভয় পেয়ে ফোন পানি থেকে তুলেই নড়াচড়া কিংবা ঝাঁকিয়ে ভিতর থেকে পানি বের করতে চান। ভুলেও এই কাজটি করবেন না। উল্টাপাল্টা ঝাঁকাঝাঁকি করলে পানি তো বের হবেই না, বরং ভিতরে আরো গভীরে পানি চলে যেতে পারে।
সিলিকা জেল ব্যবহার করতে পারেন
অনেক সময় ট্যাবলেটের কৌটাতে পাওয়া সিলিকা জেল আমরা ফেলে দিই। ফেলে না দিয়ে সেগুলো জমিয়ে ঘরে রেখে দিলে এরকম বিপদের সময় কাজে লাগতে পারে। সিলিকা জেল খুব চমৎকার একটি ড্রায়িং এজেন্ট এবং এটি দ্রুত আদ্রতা শুষে নেয়। আর ফোন খুলে শুকানোর জন্য অপেক্ষা করার সময় তোয়ালে কিংবা টিস্যু পেপার এর উপরে রেখে দিতে পারেন।
হেয়ার ড্রায়ার কিংবা ওভেনের দিকে ভুলেও যাবেন না
ফোন শুকানোর জন্য অনেকে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করে। কিন্তু আনাড়ি হাতে এটা করতে গেলে হেয়ার ড্রায়ার এর তাপ আপনার ফোনের ক্ষতি করতে পারে। আর ভুলেও বোকার মতো মাইক্রোওয়েভ ওভেনে ফোন রেখে শুকানোর চেষ্টা করে ফোনকে ডাস্টবিনে ফেলার উপযোগী করবেন না যেন!
🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥
👉 মোবাইল থেকে মুছে ফেলা ছবি উদ্ধার করার উপায়
শুকানোর জন্য অপেক্ষা করুন
আপনার ফোনটি শুকাতে দিয়ে অপেক্ষা করতে থাকুন। সরাসরি সূর্যের আলোতে না রাখাই সমীচীন। আপনি হার্ডওয়্যার গিক টাইপের হলে আর বাসায় যন্ত্রপাতি থাকলে ফোনটির পার্টস খুলে আলাদা করে শুকাতে দিতে পারেন।
সার্ভিস সেন্টারের দিকে দৌঁড় দিন
আপনি এতকিছু না পারলে বসে না থেকে ফোনটির সুইচ অফ করে, ব্যাটারি খুলে (যদি সম্ভব হয়) সোজা সার্ভিস সেন্টারে কিংবা মোবাইল রিপেয়ার শপের দিকে যান। একটুও সময় নষ্ট করবেন না। খুব বেশি ভাগ্য খারাপ না হলে আপনার ফোনটি আবার আগের মতো চলতে থাকবে।
আপনার ফোন কি কখনও ভিজে গিয়েছিল? তা নিয়ে আপনার অভিজ্ঞতা কমেন্টে শেয়ার করুন!
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।