প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ ইনস্টলের নিয়ম ও সতর্কতা

অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে অ্যাপ ইন্সটলের জন্য গুগল প্লে স্টোর নির্ভরযোগ্য একটি নাম। কোনো ধরণের ঝুঁকি ছাড়া অ্যাপ ডাউনলোড করতে চাইলে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে গুগল প্লে স্টোর এর কোনো বিকল্প নেই। তবে বিগত সময়গুলোতে ঘটে যাওয়া কিছু অ্যাটাক যেসব অ্যাপের মাধ্যমে হয়েছে, তার অনেকগুলোই প্ল স্টোরে থাকা অ্যাপের মাধ্যেম হয়েছে

স্বভাবতই কোনো অ্যাপে ম্যালওয়্যার বা ভাইরাস থাকলে তা গুগল প্লে স্টোরে এপ্রুভ করেনা গুগল। তবুও কিছু অ্যাপ এই নিরাপত্তা জাল ফাঁকি দিয়ে প্লে স্টোরে প্রবেশ করে ও হাজার হাজার ডিভাইসকে আক্রান্ত করে।

এই ধরণের ঘটনার কারণে সাইডলোড বাদ দিয়ে শুধুমাত্র প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ ইনস্টল করেও নিরাপত্তা ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছেন ব্যবহারকারীগণ। তাই প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ ইন্সটলের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম ও সতর্কতা মেনে চলা জরুরি। চলুন জেনে নেওয়া যাক প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ ইন্সটলের নিয়ম ও সতর্কতা সম্পর্কে বিস্তারিত।

প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ ইন্সটলের নিয়ম

প্রথমত, প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ ইনস্টল করার জন্য আপনার গুগল একাউন্ট দিয়ে প্লে স্টোরে সাইন ইন করতে হবে। গুগল একাউন্ট বলতে আপনি একটি জিমেইল একাউন্টকেই ধরে নিতে পারেন। সাইন ইন করার পর প্লে স্টোরে কোনো দরকারি আপডেট থাকলে সেটা নিজেই নিয়ে নেবে। এরপর আপনি প্লে স্টোরের বিভিন্ন ক্যাটাগরি এবং ফিড থেকে পছন্দের অ্যাপ ইনস্টল করে নিতে পারবেন।

আমাদের মধ্যে অনেকে প্লে স্টোরে প্রবেশ করে যা ভালো লাগে, তা-ই ইন্সটল করা শুরু করি। এতে দোষের কিছুই নেই, কিন্তু চিন্তাভাবনার ক্ষেত্র রয়েছে। নতুন অ্যাপ ইন্সটল করে মজার মজার ফিচার উপভোগ করাই যেতে পারে, কিন্তু এসব অ্যাপের ভীড়ে যদি একটি ম্যালওয়্যারযুক্ত অ্যাপ ফোনে ঢুকে পড়ে, তবে তার পরিণতি বেশ ভয়াবহ হতে পারে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ ইন্সটলের ক্ষেত্রে কিভাবে আগানো উচিত। ব্যাপারটি অনেক সহজ। আপনি যে অ্যাপ খুঁজছেন, ঐ অ্যাপের নাম লিখে সার্চ করলে কাঙ্ক্ষিত অ্যাপ পেয়ে যাওয়ার কথা। জনপ্রিয় অ্যাপগুলোর ক্লোন অ্যাপ যাতে কেউ ভুলে ইন্সটল করে না ফেলে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে জনপ্রিয় অ্যাপগুলোর সার্চ রেজাল্ট কমিয়ে এনেছে গুগল।

অ্যাপ এর ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময় সাধারণ কিওয়ারড দ্বারা সার্চ করার কারণে অনাকাঙ্ক্ষিত অ্যাপ রেজাল্টে চলে আসতে পারে। তাই সরাসরি আপনার কাঙ্ক্ষিত অ্যাপের নাম লিখে খোঁজার চেষ্টা করুন।

অর্থাৎ “Photo editor” লিখে সার্চ করার চেয়ে “Snapseed” বা “Picsart” বা “Lightroom” (আপনার যেটা পছন্দ আরকি) লিখে সার্চ করাটা অধিক শ্রেয়। বিশেষ করে গেম ইন্সটলের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। গেম এর ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময় সার্চ রেজাল্ট কাছাকাছি নামের অন্য গেমে ভরা থাকে। এর মধ্যে আবার অনেক গেমে বিভিন্ন ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার থাকতে পারে।

তাই গেম হোক বা অ্যাপ, ডাউনলোড এর সময় এদের পাবলিশার চেক করে ডাউনলোড করুন। গেমের পাবলিশার এর নাম দেখেই গেমটি কতটুকু সঠিক, তা অনেকাংশে নিশ্চিত করা যায়।

👉 উইন্ডোজ পিসির সাথে এন্ড্রয়েড ফোন সংযুক্ত করার উপায়

আচ্ছা, কাঙ্ক্ষিত অ্যাপ তো খুঁজে পাওয়া গেলো। এবার আসে অ্যাপ ইন্সটলের পালা। কিন্তু না, আরো একটি বিষয় বাকি থাকে যদি আপনি সত্যিই অ্যাপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চান – অ্যাপের পারমিশন চেক করা।

স্টোরেজ, কন্টাক্ট, মাইক্রোফোন, ক্যামেরা, ইত্যাদি পারমিশন অ্যাপ ইন্সটলের পরে যাওয়া হলেও অনেক পারমিশন অ্যাপ ইন্সটলের সময় একটিভ হয়ে যায়। তাই কোনো গেম বা অ্যাপ ইন্সটলের আগে উক্ত গেম বা অ্যাপের ইনফো তে প্রবেশ করে যেসব পারমিশন চাওয়া হচ্ছে, তা আসলেই দরকার আছে কিনা তা নিশ্চিত করুন। এছাড়া গেম ইন্সটলের পর যেসব পারমিশন দরকার হবে বলে মনে হবেনা, সেসব পারমিশন অ্যাকসেস প্রদান করবেন না।

তবে এই বিষয়ে আবার বাড়াবাড়ি করারও প্রয়োজন নেই। যেমনঃ আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে একটি কিবোর্ড অ্যাপ এর মাইক্রোফোন বা কন্টাক্ট অ্যাকসেস করার কোনো প্রয়োজন নেই। কিন্তু মাইক্রোফোন ব্যবহার করে ভয়েস টাইপিং ও কন্টাক্ট ব্যবহার করে পারসোনালাইজড সাজেশন দেয় কিবোর্ড অ্যাপ। তবে আপনি যদি উক্ত সুবিধা না চান তাহলে সেই পারমিশন না-ই দিতে পারেন!

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ ইনস্টলের নিয়ম ও সতর্কতা

প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ ইন্সটলের সতর্কতা

প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ ইন্সটলের নিয়ম তো জানা গেলো, এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক অ্যাপ ইন্সটলের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কিছু সতর্কতা সম্পর্কে।

অ্যাপ ইন্সটলের সময় অ্যাপ এর নাম থেকে শুরু করে অ্যাপ এর লোগো পর্যন্ত, প্রত্যেকটি বিষয় খেয়াল করা উচিত। অনেক সময় প্রায় কাছাকাছি একই নামের অ্যাপ বা প্রায় একই দেখতে লোগো ব্যবহার করে ব্যবহারকারীদের বোকা বানানোর চেষ্টা করা হয়। 

একজন সচেতন ব্যবহারকারী হিসেবে আপনার উচিত কোনো অ্যাপ ইন্সটলের সময় উক্ত অ্যাপ আসল কিনা তা ব্যক্তিগতভাবে যাচাই করে দেখা। এছাড়া ওসব অ্যাপ কী কী পারমিশন চাচ্ছে তাও ভালোভাবে যাচাই করে দেখা দরকার। অপ্রয়োজনীয় এক্সেস পারমিশন দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। একটু বাড়তি সচেতনতাই পারে আপনার প্রিয় অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,543 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *