অ্যান্ড্রয়েড থেকে আইফোনে গিয়ে যে অভাব বোধ করেন অনেকেই

বর্তমানে স্মার্টফোনের বাজারে দুটি অপারেটিং সিস্টেম পুরো বাজার দখল করে রেখেছে। একটি অ্যাপলের আইওএস ও অপরটি গুগলের অ্যান্ড্রয়েড। দুটি আলাদা অপারেটিং সিস্টেম হওয়ায় তাদের মধ্যে পার্থক্য থাকাটাই স্বাভাবিক। যদিও এই পার্থক্যের পরিমাণ দিন দিন কমে আসছে।

তবে এতকিছুর পরেও কিছু পার্থক্য রয়েই গেছে অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস সিস্টেমের মধ্যে। এগুলো বেশিরভাগ খুব ছোট ছোট পার্থক্য যার সাথে সময়ের সঙ্গে মানিয়ে নেয়া যায়। বেশিরভাগ ব্যবহারকারী আইফোন নিয়ে বেশ খুশি থাকলেও অ্যান্ড্রয়েড থেকে আইফোনে পরিবর্তন করলে এগুলোর অভাব আলাদা করে অনুভব করবেন। আজকের এই পোস্টে আমরা কথা বলবো এমন কিছু বিষয় নিয়ে যা অ্যান্ড্রয়েড থেকে আইফোনে পরিবর্তন করার আগে জেনে নেয়া উচিত আপনার।

গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট

সেই ২০১৭ থেকে অ্যান্ড্রয়েডের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফিচার গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট। অনেকটাই মানুষের মত আলোচনা করা সম্ভব গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর সঙ্গে। অনেক জটিল ধরণের কাজও আপনি করে ফেলতে পারবেন অ্যাসিস্ট্যান্ট এর সহযোগিতায়। যেমন অ্যাসিস্ট্যান্টকে বলে আপনি আপনার গ্যালারির হাজার ছবি থেকে আপনার বিড়ালের ছবিগুলো সহজেই বের করে ফেলতে পারবেন।

আইওএসে অ্যাপল তাদের সিরি নামক ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর মাধ্যমে একই ধরনের সেবা দিয়ে থাকে। তবে ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা ও কার্যকারিতার দিক থেকে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট হতে সিরি এখন পর্যন্ত পিছিয়ে আছে। যদিও ১০ বছর আগে সিরি বাজারে নিয়ে আসে অ্যাপল, তবুও তারা গুগল অ্যাসিসট্যান্ট এর সঙ্গে পাল্লা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। একারণেই অ্যাপলের ফোন ব্যবহারে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর সেবার অভাব অনুভব করবেন যদি নিয়মিত অ্যাসিসট্যান্ট ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন আপনি।

ব্যাক বাটন

খুব ছোট হলেও এটি এমন একটি ফিচার যা ফোনের ন্যাভিগেশন সহজ করে দেয়। অ্যাপলের আইওএস এ কোনো ইউনিভার্সাল ব্যাক বাটন নেই অ্যান্ড্রয়েডের মতো। নতুন আইফোন ব্যবহারকারী হয়ে থাকলে এটি আপনার জন্য হতাশাজনক মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক। আইওএস ন্যাভিগেশনের সঙ্গে অ্যান্ড্রয়েডের ন্যাভিগেশনের পার্থক্য থাকায় আপনাকে প্রথমে কিছুটা সমস্যায় পড়তে হবে। তবে অভ্যাস হয়ে গেলে ব্যাপারটি খুব একটা সমস্যার সৃষ্টি করবে না আর।

iPhone

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

নোটিফিকেশন অ্যালার্ট

অনেকের মতেই আইফোন থেকে অ্যান্ড্রয়েড বেশি ভালোভাবে নোটিফিকেশনের ব্যাপারটি সামলাতে পারে। আইওএস চালু হবার পর থেকেই আইওএসের নোটিফিকেশন নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। অ্যাপল প্রতিবারই এটির উন্নতি করতে চাইলেও কখনোই তারা ব্যবহারকারীদের পুরোপুরি সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে নি। 

কিছুদিন আগে বের হওয়া আইওএস ১৬ তেও অ্যাপল নোটিফিকেশন নিয়ে নতুন করে কাজ করেছে। এখন লক স্ক্রিনের উপরেও নিজের ইচ্ছামতো নোটিফিকেশন দেখা যাবে। এছাড়াও আইওএস ১৬ তে ডিসপ্লের নিচের দিকে নোটিফিকেশন দেখার সুবিধা চালু করেছে অ্যাপল। তবে এখনও অ্যান্ড্রয়েডের মতো সহজ ও স্বাভাবিক একটি নোটিফিকেশন ব্যবস্থা চালু করতে পারেনি অ্যাপল। তাই অ্যান্ড্রয়েড থেকে আইফোনে গেলে অবশ্যই এই ব্যাপারটি আপনি আলাদা করে অনুভব করবেন। এন্ড্রয়েডে নোটিফিকেশন কাস্টমাইজ করার সুবিধা অনেকে বেশি।

ভার্চুয়াল কিবোর্ড

অ্যান্ড্রয়েড কীবোর্ড আইফোনের কীবোর্ড থেকে ভালো বলে অনেক ব্যবহারকারী মনে করে থাকেন। যদিও আইফোনের ভার্চুয়াল কীবোর্ড বেশ ভালো, তবুও অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা এই কীবোর্ডে সন্তুষ্ট হতে পারবেন না।

টাইপিং ও স্পেল চেকের ক্ষেত্রে অ্যান্ড্রয়েড কীবোর্ড সবসময়ই ভালো। এমনকি গুগলের কীবোর্ড জীবোর্ড ইনস্টল করে নিলেও আইফোনে অ্যান্ড্রয়েডের মতো করে পারফর্ম করতে পারে না সেটি। তাই নতুন আইফোন ব্যবহারকারী হলে অ্যান্ড্রয়েডের কীবোর্ডের অভাব অনুভব করা খুব স্বাভাবিক। এছাড়া ভয়েস টাইপিংয়ের ক্ষেত্রেও এন্ড্রয়েডের জিবোর্ড অনেক ভাল কাজ করে কেননা গুগলের ভয়েস রিকগনিশন অনেক উন্নত।

👉 মোবাইলে বাংলা লেখার সেরা কিবোর্ড অ্যাপ ফ্রি ডাউনলোড করুন

স্প্যাম ডিটেকশন

বর্তমান সময়ে স্প্যাম কল খুব বড় একটি সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। তবে অ্যান্ড্রয়েড স্প্যাম কল খুব দ্রুত ধরে ফেলে ব্লক করে দিতে পারে। এই ব্যাপারে আইওএস তেমন পারদর্শী নয়। আইওএসের ক্ষেত্রে আপনার নিজের এই স্প্যাম নাম্বার বারবার ব্লক করে ফেলতে হয়। তবে অ্যান্ড্রয়েড এসব নাম্বার থেকে কল আসবার সঙ্গে সঙ্গেই তা ব্যবহারকারীকে জানিয়ে দিতে পারে। ফলে এসব নাম্বার ব্লক করে ফেলাও সহজ হয়ে যায় অনেকটা। যদিও আইফোনে থার্ড পার্টি বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার করে আপনি ভালো ফলাফল পেতে পারেন।

অন্যান্য ফিচার

এছাড়াও আরও বেশ কিছু ফিচার আপনি আইফোনে কিছুটা ভিন্নভাবে পাবেন যা আপনার পছন্দ নাও হতে পারে। যেমন: আইফোন সদ্য তোলা ছবি তাদের ফটো অ্যাপের একদম নিচে রাখে। এছাড়া আইফোনে কল রেকর্ডিং ফিচার নেই যা এন্ড্রয়েড এবং সাধারণ বাটন ফোনেও আছে।

এছাড়া ফাইল শেয়ারের ক্ষেত্রে অ্যান্ড্রয়েড অনেক সুবিধা দিয়ে থাকে। আইফোনে অ্যাপল ব্যতীত অন্য ডিভাইসে কোনো ফাইল শেয়ার করার ক্ষেত্রে বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়। আইফোন হতে সহজে অন্য ডিভাইসে ফাইল শেয়ারের উপায় জানতে আমাদের বিস্তারিত পোস্ট দেখে নিতে পারেন।

👉 আইফোন থেকে কম্পিউটারে ফাইল আনা-নেওয়ার উপায় (উইন্ডোজ, ম্যাক)

সব মিলিয়েই আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েডে এখনও বেশ কিছু পার্থক্য রয়ে গেছে। তবে আইফোনে এমন কিছু সুবিধা পাবেন যা অ্যান্ড্রয়েডে নেই! তবে দুটি ওএস আলাদা আলাদা জায়গায় শক্তিশালী। তবে হঠাৎ করে এক সিস্টেম থেকে অন্য সিস্টেমে গেলে মানিয়ে নিতে অসুবিধা হওয়াটাই স্বাভাবিক। নতুন সিস্টেমের সাথে মানিয়ে নিতে সময় দেয়া প্রয়োজন।

👉 আইফোনে যে কাজগুলো করা যায়না, কিন্তু এন্ড্রয়েডে সহজেই সম্ভব!

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,548 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *