এন্ড্রয়েড ফোন অটো সাইলেন্ট করার কৌশল

ভুল সময়ে ফোনের রিং বেজে ওঠা বেশ বিরক্তিকর একটি বিষয় হতে পারে। বিশেষ করে কোনো মিটিংয়ে বা গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে ফোনের রিং বেজে ওঠা বেশ বিব্রতকর একটি ব্যাপার। আবার ভুল সময়ে ফোন সাইলেন্ট থাকার জন্য প্রয়োজনীয় কল বা এলার্ম মিস করার মত সমস্যায় পড়তে হয়।

আপনার যদি ফোনের সাইলেন্ট মোড সময় মত বন্ধ বা চালু করার কথা কোনো মনে না থাকে, সেক্ষেত্রে সাইলেন্ট মোড যাতে অটোমেটিক চালু ও বন্ধ হয় সেই ব্যবস্থা করে রাখতে পারেন। একাধিক উপায়ে অ্যান্ড্রয়েড ফোনে অটোমেটিক সাইলেন্ট মোড চালু ও বন্ধের ব্যবস্থা রয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক অ্যান্ড্রয়েড ফোনের জন্য অটোমেটিক সাইলেন্ট মোড সম্পর্কে।

ডু নট ডিস্টার্ব মোড

অটোমেটিক সাইলেন্ট মোড ব্যবহারের সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ডু নট ডিস্টার্ব মোড ব্যবহার করা। সকল অ্যান্ড্রয়েড ফোনে এই বিল্ট-ইন ফিচারটি ব্যবহার করে বেশ সহজে অটোমেটিক সাইলেন্ট মোড ব্যবহার করা যাবে। ডু নট ডিস্টার্ব মোড চালু করলে ফোনে আসা কল বা নোটিফিকেশন সাইলেন্ট হয়ে যায়।

ডিভাইসভেদে ডু নট ডিস্টার্ব মোড এর সেটিং বিভিন্ন মেন্যুতে থাকে। স্টক অ্যান্ড্রয়েড ১১ এর ক্ষেত্রে সেটিংস থেকে Sound & Vibration মেন্যুতে প্রবেশ করে Do Not Disturb অপশন পাওয়া যাবে। অধিকাংশ অ্যান্ড্রয়েড ফোনের সেটিংসে প্রবেশ করে সার্চ করে ডু নট ডিস্টার্ব ফিচারটি খুঁজে নেওয়া যাবে।

ডু নট ডিস্টার্ব ফিচারটি খুঁজে বের করে চালু করুন। এরপর Schedule অপশন খুঁজে নিয়ে শিডিউল করুন। Start Time ও End Time অপশন থেকে কোন সময়ে ডু নট ডিস্টার্ব মোড চালু ও বন্ধ হবে তা সেট করুন। আপনার সময়ের উপর নির্ভর করে ডু নট ডিস্টার্ব মোড চালু ও বন্ধ হওয়ার সময় সিলেক্ট করুন।

IFTTT অটোমেশন

অটোমেশন তৈরী করতে IFTTT একটি জনপ্রিয় টুল। IFTTT ব্যবহার করে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের জন্য সাইলেন্ট মোড শিডিউল করা যাবে। এইক্ষেত্রে প্রথমে প্লে স্টোর থেকে IFTTT অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে। এরপর একটি IFTTT অ্যাকাউন্ট তৈরী করুন। IFTTT তে তৈরী করা অটোমেশনসমূহকে অ্যাপলেট (applet) বলা হয়।

অটোমেটিক সাইলেন্ট মোড এর জন্য অটোমেশন তৈরী করতে IFTTT অ্যাপে প্রবেশ করুন ও Create অপশনে ট্যাপ করে নতুন অ্যাপলেট তৈরী করুন। এরপর “If This” অপশন সিলেক্ট করুন ও সাপোর্টেড ট্রিগার থেকে যেকোনো একটি সিলেক্ট করুন যার উপর ভিত্তি করে সাইলেন্ট মোড চালু হবে।

এই ট্রিগার হতে পারে সময়, লোকেশন বা ফোনের ব্যাটারি পারসেন্ট, ইত্যাদি। উদাহরণ হিসেবে ধরুন, আপনার অফিসে পৌঁছানোর পর সাইলেন্ট মোড চালু হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে লোকেশন কে ট্রিগার হিসেবে ব্যবহার করা যাবে ও অফিসের লোকেশন সিলেক্ট করতে হবে।

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

ট্রিগার সেট করা হয়ে গেলে এবার অ্যাকশন সিলেক্ট করতে হবে। “Then That” অপশন সিলেক্ট করে ট্রিগার এর জন্য অ্যাকশন সিলেক্ট করতে হবে। Android Device সার্ভিস সার্চ করুন, যেখানে বিভিন্ন ধরনের অ্যাকশন দেখতে পাবেন। “Mute Ringtone” অপশন সিলেক্ট করুন। এছাড়াও সাইলেন্ট মোডে ফোন ভাইব্রেট করবে কিনা সে অপশন ও বেছে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

সঠিকভাবে অ্যাকশন ও ট্রিগার সিলেক্ট করার পর অ্যাপলেট এর ওভারভিউ দেখতে পাবেন। অ্যাপলেট এর টাইটেল প্রদান করতে পারেন বুঝার সুবিধার্থে। Receive Notifications স্লাইডার অন করতে পারেন অ্যাপলেট ঠিকমত কাজ করছে কিনা তা সম্পর্কে নোটিফিকেশন পেতে৷ অ্যাপলেট তৈরী শেষে “Finish” অপশনে ট্যাপ করার পর প্রয়োজনীয় পারমিশন, যেমনঃ লোকেশন অ্যাকসেস, ডু নট ডিস্টার্ব অ্যাকসেস, ইত্যাদি Allow করতে হবে।

নিজে নিজেই সাইলেন্ট হবে এন্ড্রয়েড ফোন (কৌশল জানুন)

উল্লেখ্য যে উল্লেখিত উপায়ে লোকেশন বা সময় এর উপর ভিত্তি করে সাইলেন্ট মোড অটোমেট করার ক্ষেত্রে আরো একটি অ্যাপলেট তৈরী করতে হবে যা অফিস থেকে বের হওয়ার পর সাইলেন্ট মোড অফ করে দিবে। এমন একটি অ্যাপলেট তৈরী না করলে অফিস থেকে বের হওয়ার পরও ফোন সাইলেন্ট মোডে থেকে যাবে।

দ্বিতীয় অ্যাপলেট তৈরীর ক্ষেত্রে লোকেশন বা সময় ট্রিগার সিলেক্ট করতে হবে। এরপর ডিভাইস অ্যাকশন হিসেবে রিংটোন ভলিউম ঠিক মাত্রায় সেট করতে হবে। ব্যাস! এই দুইটি IFTTT অ্যাপলেট তৈরী করলে আপনার চাকরিস্থলে প্রবেশের সময় ফোন অটোমেটিক সাইলেন্ট মোডে চলে যাবে ও বের হওয়ায় সময় সাইলেন্ট মোড বন্ধ হয়ে যাবে।

👉 চোখের ইশারায় এন্ড্রয়েড ফোন চালানোর কৌশল

অটোমেশন অ্যাপ

বেশিরভাগ অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারী উল্লেখিত দুই উপায়ে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের রিং অটোমেটিক চালু ও বন্ধ করতে পারার কথা। কিন্তু আপনি যদি এডভান্সড অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে আরো ফাংশনালিটি ব্যবহার করে অটোমেশন সেটাপ করতে পারেন।

অ্যান্ড্রয়েড ফোনের বিভিন্ন অ্যাকশন অটোমেট করার জন্য Tasker একটি জনপ্রিয় অ্যাপ। এই অ্যাপ ব্যবহার করে স্ক্রিপ্টের মাধ্যমে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের যে কোনো ধরনের অ্যাকশন তৈরী করা যায়। টাস্কার তেমন একটা বিগিনার-ফ্রেন্ডলি অ্যাপ নয়, তবে কিছুটা সময় দিয়ে চেষ্টা করলে অ্যাপটি ব্যবহার করে পাওয়ারফুল অটোমেশন তৈরী সম্ভব। উল্লেখ্য যে “Tasker” একটি পেইড অ্যাপ যা গুগল প্লে স্টোর থেকে কেনা যাবে।

টাস্কার অ্যাপটি যদি আপনার কাছে অধিক কঠিন মনে হয় বা অ্যাপ কিনতে না চান, সেক্ষেত্রে MacroDroid অ্যাপটি ব্যবহার করে দেখতে পারেন। এটি একটি ফ্রি অ্যাপ হওয়ার পাশাপাশি ইন্টারফেস বিবেচনায় টাস্কার এর চেয়ে অনেকটা সহজ বলা চলে। টাস্কার ও ম্যাক্রোড্রয়েড, উভয় অ্যাপ ব্যবহার করেই অ্যান্ড্রয়েড এর জন্য সাইলেন্ট মোড অটোমেট করা যাবে।

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,543 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *