ফোর্বসের তথ্যমতে ১০৮.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মালিক বিল গেটস বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী ব্যক্তি। তিনি বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিও হয়েছেন একাধিক বার। কিন্তু এই বিপুল পরিমাণ অর্থের মালিক হয়ে বিল গেটস স্বস্তির ঢেঁকুর তুলতে পারছেন না।
বিল গেটস সম্প্রতি এক ব্লগ পোস্টে এরকম লিখেছেন, তার এই প্রায় ১০৯ বিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি এটাই প্রমাণ করে যে, তার দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় সমস্যা রয়েছে। এর মানে কী? আপনার কি মনে হয় বিল গেটস এটা ভাবছেন যে তার সম্পত্তির পরিমাণ আরও বেশি হওয়ার কথা ছিল? নাকি তিনি মনে করেন যে তার সম্পত্তির পরিমাণ এত বেশি হওয়া ঠিক হয়নি, হয়তো এর থেকে কম হওয়ার কথা ছিল? ১০ সেকেন্ড চিন্তা করুন, তারপর এই পোস্টের বাকি অংশের সাথে আপনার উত্তর মিলিয়ে নিন।
আচ্ছা, আমি ধরে নিচ্ছি আপনি চিন্তা করে কিছু একটা বের করে ফেলেছেন। এবার চলুন জেনে নিই বিল গেটস কী ভাবছেন।
নতুন বছর ২০২০ এর প্রাক্কালে প্রকাশিত নিজের একটি ব্লগ পোস্টে বিল গেটস লিখেছেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ এবং নিম্ন আয়ের মধ্যকার ব্যবধান গত ৫০ বছর আগের তুলনায় অনেক বেশি।” বিল গেটস মনে করেন যে তিনি তার কাজের জন্য অসামঞ্জস্যপূর্ণ বেশি পরিমাণে অর্থ লাভ করেছেন যেখানে অন্য অনেক মানুষই জীবিকা নির্বাহের জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছেন।
এটি শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের সমস্যা নয়। বৈশ্বিক দারিদ্র্য নিরসন নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান অক্সফাম বলছে, বিশ্বব্যাপী উচ্চবিত্ত এবং নিম্নবিত্তের আয়ের মধ্যে পার্থক্য বেড়ে চলছে। যারা সম্পদশালী তারা আরও বেশি সম্পদের মালিক হচ্ছেন নিম্নআয়ের মানুষদের জীবিকা নির্বাহের জন্য আরও বেশি সংগ্রাম করতে হচ্ছে।
এই সমস্যা সমাধানের জন্য বিল গেটস মনে করেন, সরকারের উচিত সম্পদশালীদের উপর আরোপিত করের পরিমাণ বাড়ানো দরকার। তিনি লিখেছেন, “আমি মনে করি ধনী লোকদের এখনকার চেয়ে বেশি (ট্যাক্স) প্রদান করা উচিত, এবং এর মধ্যে আমি এবং মিলিন্ডা (বিল গেটস এর সহধর্মিণী) ও আছি।”
ওই ব্লগে বিল গেটস আরও লিখেন যে- বিনিয়োগকারীদের মূলধন থেকে যে পরিমাণ আয় হয়, সেই “ক্যাপিটাল গেইন” এর উপর আরও বেশি কর আরোপ করা উচিত। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে কেউই কেবলমাত্র বেতনভিত্তিক চাকরির মাধ্যমে তাদের সম্পদ অর্জন করেনি, এবং সে কারণেই গেটস বিশ্বাস করেন যে সরকারের উচিত শ্রমের চেয়ে মূলধনের উপর করের পরিমাণ আরো বাড়ানো দরকার।
গেটস আরও বলেন যে, সন্তানদের জন্য বিশাল পরিমাণ সম্পদ রেখে যাওয়ার ধারা কারো পক্ষেই ভালো নয়। পরবর্তী প্রজন্ম যাতে কাজে ও অর্থনীতিতে অবদান রাখতে উৎসাহী হয় সেদিকেই নজর দিতে হবে।
মাইক্রোসফট এর সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস এর মতে বাড়তি সম্পদকে অধিক কর আরোপ কিংবা জনহিতকর কাজের মাধ্যমে সমাজে পুনরায় বিনিয়োগ করা দরকার।
আর এজন্যই বিল গেটস মনে করেন, তার যে এই বিশাল অঙ্কের অর্থ-সম্পদ, তা এটাই প্রমাণ করে যে, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ঠিক ন্যায়সঙ্গত নয়। সে কারণেই তিনি তার কাজের জন্য অসামঞ্জস্যপূর্ণ বেশি অর্থ লাভ করেছেন। তিনি এখানে মূলত যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে বুঝিয়েছেন, তবে এই ব্যাপারটি বিশ্বের অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতে পারে।
বোনাস: বিল গেটস সম্পর্কে অবিশ্বাস্য কিছু তথ্য যা আপনি জানতেন না
বিল গেটস তার বেশিরভাগ সম্পদ জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করার প্রতিজ্ঞা করেছেন। তিনি এবং তার স্ত্রী মিলে বিল “অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন” প্রতিষ্ঠা করেছেন। বিল গেটস এর জনকল্যাণমূলক কার্যক্রমের শুরুর দিক সম্পর্কে জানতে এই পোস্টটি পড়তে পারেন।
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।