গুগলের নিকট থেকে এন্ড্রয়েডের নিয়ন্ত্রণ হাতিয়ে নেবে সায়ানোজেন?

cyanogen logo

২০১৫ সালের শুরুর দিকে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সাথে এক সাক্ষাৎকারে সায়ানোজেন সিইও ম্যাকমাস্টার মন্তব্য করেছেন যে, তারা গুগলের কাছ থেকে এন্ড্রয়েডের নিয়ন্ত্রণ দখল করে নিতে যাচ্ছেন। সায়ানোজেন ইনকর্পোরেশন হচ্ছে সেই কোম্পানি যেটি এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের কাস্টমাইজড ভ্যারিয়েন্ট ‘সায়ানোজেন মড’ ওএস ডেভলপ করে।

কিন্তু গুগলের নিকট থেকে এন্ড্রয়েডের কর্তৃত্ব দখল করে নেয়া মোটেই সহজ কাজ নয়। এন্ড্রয়েড ডিভাইসমূহের জন্য অফিশিয়াল অ্যাপ ডাউনলোড পোর্টাল হচ্ছে গুগলের ‘প্লে স্টোর’ যা তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ ডাউনলোড সাইট যেমন গেটজার, মোবাইল৯ প্রভৃতি থেকে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ।

অফিশিয়াল এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের জন্য নিয়মিত বিরতিতে সফটওয়্যার আপডেট সরবরাহ করে গুগল। গ্রাহকদের মধ্যে এই আপডেট সাইকেল নিয়ে কিছুটা দীর্ঘসূত্রিতার অভিযোগ থাকলেও বিপদে-আপদে (জরুরী নিরাপত্তা আপডেটের জন্য) সেই গুগলই ভরসা।

কিন্তু এই সুবিধাগুলো নেয়ার শর্ত হিসেবে ফোন নির্মাতা কোম্পানিগুলো তাদের ডিভাইসে গুগলের নির্দিষ্ট কিছু অ্যাপ ইনস্টল করে পাঠিয়ে দেয়। এখন সমস্যা হচ্ছে, কোনো কোনো ব্যবহারকারী এই বাধ্যবাধতা পছন্দ করেন না।

উদাহরণস্বরূপ চীনের কথাই ধরা যাক। প্রায় পাঁচ বছর ধরে চীনে গুগলের কার্যক্রম স্থবির হয়ে আছে। চীন সরকারের ইন্টারনেট সেন্সরশিপের কারণে সেখানে নিজেদের মত কাজ করতে পারছিলনা ওয়েব জায়ান্ট। আর চীনের স্থানীয় সার্চ ইঞ্জিন, ইমেইল সার্ভিস, সোশ্যাল নেটওয়ার্ক থাকায় গুগলকে খুব একটা মিস করার মত পরিস্থিতিও লক্ষ্য করা যায়নি।

আর এজন্যই চীনের বিশাল স্মার্টফোন মার্কেটে গুগল-বিহীন এন্ড্রয়েড ডিভাইসের চাহিদা বাড়ছে। শাওমি (Xiaomi) নির্মিত এন্ড্রয়েডের ‘এমইউআই’ ফ্লেভারটিও এখন বেশ জনপ্রিয়। এই বাজারগুলোই টার্গেট করছে সায়ানোজেন।

এই চিন্তাধারা থেকে গত দেড় বছরে ১১০ মিলিয়ন ডলারের বেশি তহবিল সংগ্রহ করেছে সায়ানোজেন। জনশ্রুতি আছে, মাইক্রোসফটও সায়ানোজেনমডে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।

তবে যত বড় বিনিয়োগকারীই থাকুক, তারাও তো সায়ানোজেন থেকে মুনাফা তুলতে চাইবে। তাহলে গুগলের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে লাভ কী হল? এটাও কিন্তু ভেবে দেখার বিষয়।

সায়ানোজেনের সামনে অন্যতম বড় সত্য হচ্ছে, এই ওএসটির ভক্তরা মূলত গুগলেরই ভক্ত ছিলেন/আছেন। এন্ড্রয়েড থেকেই তারা সায়ানোজেন চিনতে পেরেছেন। প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ড যেমন স্যামসাং, এলজি, সনি ও এইচটিসি যেখানে এন্ড্রয়েড ডিভাইস বিক্রি করছে সেসব বাজারে সায়ানোজেন কতটা লড়তে পারবে সেটাও দেখার বিষয়। অপরদিকে এন্ড্রয়েড চালিত ফোনের নির্দিষ্ট কিছু অ্যাপে ফ্রি ইন্টারনেট সুবিধা চালুর পরিকল্পনা করছে গুগল। এটা বাস্তবায়ন হলে ব্যবহারকারীরা এন্ড্রয়েড ছেড়ে সায়ানোজেন বেছে নেবেন কিনা তাও একটা প্রশ্ন।

শেষ পর্যন্ত সায়ানোজেনমড কি পারবে তাদের লক্ষ্য পূরণ করতে? আপনার কী মনে হয়?

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,550 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *