পুরাতন এন্ড্রয়েড ফোনের দারুণ কিছু ব্যবহার জানুন

প্রতিবছর স্মার্টফোন নির্মাতা কোম্পানিগুলো অসংখ্য নতুন অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন ও ট্যাবলেট বাজারে নিয়ে আসেন। এই ব্যাপারটি গ্রাহকদের জন্য সুবিধার, তবে নিজের পুরোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোনের কোনো সুরাহা করতে পারেন না অনেকে। নতুন ফোন কেনার আগে পুরোনো ফোন কি কাজে ব্যবহার করবেন, সে বিষয়ে চিন্তা করা উচিত। আপনি যদি আপনার ফোন বিক্রি করতে না চান, সেক্ষেত্রে পুরোনো ফোন এর কোনো ব্যবহার চিন্তা করা উচিত। এই পোস্টে পুরোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোন কি কি কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে সে সম্পর্কে জানবেন।

সিকিউরিটি ক্যামেরা

পুরোনো ফোনকে সিসি ক্যামেরা হিসেবে ব্যবহার করার উপায় খুব সহজ। মূলত অ্যাপ ব্যবহার করে খুব সহজে অ্যান্ড্রয়েড ফোনকে সিকিউরিটি ক্যামেরা (সিসিটিভি) তে রুপান্তর করা যাবে। ঘরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুরোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোনকে সিকিউরিটি ক্যামেরা হিসেবে ব্যবহার বেশ কাজে আসতে পারে। আবার ঘরে থাকা ইন্টারনেট সংযোগ এর সাহায্যে যেকোনো স্থান থেকে এই ক্যামেরা অ্যাকসেস করা যাবে।

কন্ট্রোলার

ডিসপ্লের সাথে কানেক্ট করে পুরোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোনকে ওয়্যারলেস ট্র‍্যাক প্যাড হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এই ক্ষেত্রেও আপনার প্রয়োজন হবে একটি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ এর, যা দুইটি ওয়্যারলেস ডিভাইসকে একসাথে সংযুক্ত করবে। একেকটি ফোনে একেক অ্যাপ ভালোভাবে কাজ করতে পারে, তাই কোন অ্যাপটি আপনার ডিভাইসের সাথে কাজ করে তা পরীক্ষা করে খুঁজে বের করতে হবে।

রিমোট

আপনার বাসায় যদি স্মার্ট টিভি বা গুগল ক্রোমকাস্টযুক্ত কোনো টিভি থাকে, তবে পুরোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোনকে ওয়্যারলেস স্মার্ট রিমোট ও মিডিয়া ন্যাভিগেশন সিস্টেম হিসেবে কাজে লাগাতে পারেন। একইভাবে ফোনকে স্মার্ট ওয়্যারলেস রিমোটে পরিণত করতে অ্যাপের সাহায্য নিতে হবে। তবে আপনার কাছে যদি শাওমির ফোন থাকে, তবে বিল্ট-ইন Mi Remote অ্যাপ দ্বারা একই কাজ করা যাবে। আবার গুগল হোম অ্যাপের মাধ্যমে গুগল ক্রোমকাস্ট এর সাথে পুরোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোনকে যুক্ত করে মিডিয়া ন্যাভিগেট করা যাবে।

ডিজিটাল ফটো ফ্রেম

আপনার পুরোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোনকে ডিজিটাল ফটো ফ্রেম হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এই কাজে Fotoo অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারেন। এই অ্যাপটি স্লাইডশো আকারে পুরোনো ফোনে ছবি দেখানোর কাজে আসে। এই অ্যাপটি ব্যবহার করে ফটো গ্যালারির পাশাপাশি গুগল ফটোস, ড্রপবক্স, গুগল ড্রাইভ, মাইক্রোসফট ওয়ানড্রাইভ, ইত্যাদি ক্লাউড সার্ভিস থেকেও ছবি ফোনের স্ক্রিনের প্রদর্শন করা যাবে।

ই-রিডার

পুরোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোন বা ট্যাবলেটকে ই-রিডার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। ই-রিডার বা ই-বুক রিডার হলো একটি ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস যা দ্বারা ই-বুক পড়া যায়। বর্তমানে সকল স্মার্টফোন ও ট্যাবলেট পিডিএফ ফাইল সাপোর্ট করে, যার ফলে এসব ডিভাইসে ই-বুক পড়া বেশ সহজ। আবার অ্যামাজন কিন্ডল, বইটই এর মত অ্যাপ ব্যবহার করে এসব ডিভাইসে বেশ সহজে বই পড়া যেতে পারে।

স্মার্ট ড্যাশ সিস্টেম

অ্যান্ড্রয়েড অটো নামে গুগল এর একটি অ্যাপ আছে যা কারের সাথে ব্যবহার করা যায়। এই অ্যান্ড্রয়েড অটো অ্যাপ একটি স্মার্ট ড্রাইভিং কম্পানিয়ন অ্যাপ যা ড্রাইভারদের ফোকাসড ও গুগল অ্যাসিস্টেন্টের সাথে যুক্ত থাকার সুবিধা প্রদান করে।

ড্রাউভিং করার সময় ও অ্যান্ড্রয়েড অটো ফিচার ব্যবহারের সময় ফোন হোল্ডার ব্যবহার করুন। ম্যাপ দেখার পাশাপাশি ড্যাশ ক্যাম হিসেবে ব্যবহার করা যাবে পুরোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোনকে। এছাড়া মিডিয়া প্লেয়ার হিসেবেও পুরোনো ফোন ব্যবহার করা যেতে পারে।

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

পুরাতন এন্ড্রয়েড ফোনের দারুণ কিছু ব্যবহার জানুন

👉 পুরাতন ফোন বিক্রয় ও ক্রয়ের আগে করণীয়

টেস্টিং

আপনার পুরোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা চালাতে পারেন। যেহেতু অ্যান্ড্রয়েড ফোনে কাস্টমাইজেশন ও পারসোনালাইজেশন এর অঢেল সুযোগ রয়েছে, তাই আপনার পুরোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের টেস্ট করতে পারেন।

প্রথমত আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোন চাইলে রুট করতে পারেন, যার মাধ্যমে রুট করার বিভিন্ন সুবিধা ব্যবহার করতে পারবেন। আবার চাইলে কাস্টম রম ইন্সটল করে ফোনটিকে কাস্টম ফোনে পরিণত করতে পারেন। অর্থাৎ এই ফোনটি যেহেতু আপনার ব্যবহারের পরিকল্পনা নেই, তাই এটির মাধ্যমে আপনার পছন্দের বিভিন্ন পরীক্ষা চালাতে পারেন।

👉 স্মার্টফোন বেশি গরম হয়? সমাধান জেনে নিন

রিট্রো গেমিং

রিট্রো গেম এমুলেটর হিসেবে অ্যান্ড্রয়েড বেশ ভালোভাবে কাজ করে। রিট্রো গেম বলতে এখানে পুরোনো গেমিং কনসোলকে বুঝানো হচ্ছে। আগের দিনের গেমিং কনসোলগুলোর গেম বেশ সহজে বর্তমানের অ্যান্ড্রয়েড ফোনে চালানো যায় এমুলেটর ব্যবহার করে। ফিরে যেতে পারেন আপনার ছোটবেলায় কোনো রিট্রো গেম এমুলেটর ব্যবহার করে। প্লে স্টোরে এই ধরনের অসংখ্য এমুলেটর অ্যাপ পেয়ে যাবেন। অনেক এমুলেটর গেমে ফিজিক্যাল কন্ট্রোলার ব্যবহার করা যায় যা পূর্ণাঙ্গ কনসোল গেমিং এর স্বাদ প্রধান করে থাকে।

মিডিয়া প্লেয়ার

পুরোনো ফোনের ব্যবহার সম্পর্কিত উল্লেখিত সকল সমাধান কঠিন বলে মনে হলে আপনার পুরোনো ফোনটিকে মিডিয়া প্লেয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। ফোনে মুভি দেখা থেকে শুরু করে গান শোনা পর্যন্ত বিভিন্ন বিনোদনমূলক কাজে পুরোনো ফোন কাজে লাগাতে পারেন। পুরোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোন বিক্রি করতে না চাইলে সবচেয়ে সহজ ব্যবহার এটি।

আপনার পুরোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোন দিয়ে কি করেছেন? আমাদের জানান কমেন্ট সেকশনে।

👉 ভিডিওঃ জিমেইল একাউন্ট খোলার নিয়ম

👉 আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করে সাথেই থাকুন। এখানে ক্লিক করে সাবস্ক্রিপশন কনফার্ম করুন!

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,549 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *