ইমেইল পাঠানোর সময় যেসব ভুল এড়িয়ে চলা দরকার

প্রতিদিন আমরা অসংখ্য তথ্য নিয়ে কাজ করে থাকি। ইমেইল পাঠানোর সময় ভুল হয়ে থাকা অস্বাভাবিক কোনো ব্যাপার নয়। আপনি যদি নিয়মিত ইমেইল আদান-প্রদান এর প্রক্রিয়াতে যুক্ত থাকেন, তবে আপনার উচিত ইমেইল পাঠানোর সময় যেসব ভুল এড়িয়ে চলা দরকার সে সম্পর্কে জেনে রাখা। এই পোস্টে ইমেইল পাঠানোর সময় হওয়া সাধারণ ভুলসমূহ সম্পর্কে জানতে পারবেন।

তাড়াতাড়ি রিপ্লাই করতে যাওয়া

প্রাপ্ত ইমেইলে থাকা সকল মেসেজ ভালোভাবে না পড়ে ইমেইল এর রিপ্লাই দিতে যাওয় একটি অমার্জনীয় ভুল। কোনো ইমেইল এর মেসেজ ভালোভাবে না পড়ে রিপ্লাই দিতে গেলে ইমেইল এর কোনো পয়েন্ট মিস হতে পারে। তাই সবসময় ইমেইল সম্পূর্ণভাবে না পড়ে রিপ্লাই করা উচিত নয়।

অপ্রয়োজনীয় মেসেজ ফরওয়ার্ড করা

অপ্রয়োজনীয় মেসেজ ইমেইলের মাধ্যমে ফরওয়ার্ড করা একটি ইমেইল সম্পর্কিত সচরাচর হওয়া একটি ভুল। এটি মানুষের সময় নষ্ট করার পাশাপাশি প্রেরকের প্রতি আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা কমিয়ে দেয়। তাই যেকোনো মেসেজ ফরওয়ার্ড করে কাউকে ইমেইল চেইনে যুক্ত করার আগে দুইবার ভাবুন। অন্যরা মেসেজ ফরওয়ার্ড এর মাধ্যমে উপকৃত হবে ভেবে থাকলে তবেই মেসেজ ফরওয়ার্ড করুন।

ইমেইল পাঠাতে তাড়াহুড়ো করা

কাঙ্খিত মেসেজ লেখার আগে “Send” বাটন প্রেস করতে তাড়াহুড়ো করার কারণে ইমেইলে বিভিন্ন ধরনের ভুল হয়ে থাকে। এই ভুল এড়ানো যায় বেশ সহজে। ইমেইল লেখা শেষ করে সম্পূর্ণভাবে চেক করে তবেই প্রাপকের ইমেইল লিখুন। এতে ইমেইল ভুলে সেন্ড হওয়ার কোনো সমস্যা থাকেনা।

প্রতি ইমেইলে সিগনেচার এড করা

প্রতি ইমেইলে বিশাল সিগনেচার এড করা বিশ্রী একটি অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে। মূলত বিশাল থ্রেডের ইমেইল এর ক্ষেত্রে প্রতি মেসেজে ইমেইল সিগনেচার বিরক্তিকর একটি বিষয় হতে পারে। আপনার সিগনেচার যুক্ত করার একটি ভালো উপায় হতে পারে শুধুমাত্র আপনার নাম ও ইমেইল/ওয়েবসাইট এড করা।

“Reply To All”

ইমেইল পাঠানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি যে ভুলটি হয়ে থাকে সেটি হলো “Reply” এর পরিবর্তে “Reply to All” ফিচার ব্যবহার করে ফেলা। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে ইমেইল এর রিপ্লাই দেওয়ার সময় তাড়াহুড়ো করা যাবেনা।

এটাচমেন্ট

ইমেইল এর একটি বড় অংশ হলো এটাচমেন্ট। কাউকে ইমেইল করার সময় যে এটাচমেন্ট চাওয়া হয়েছে তা না পাঠানো কিংবা ভুলে অন্য এটাচমেন্ট পাঠিয়ে দেওয়ার মত ভুল এড়িয়ে চলতে হবে। এই ধরনের সমস্যা এড়াতে ইমেইলে ফাইল এটাচ করার কথা লিখার সাথে সাথে এটাচমেন্ট আপলোড করে দিন। ইমেইল সেন্ড করার আগে একবার ভালোভাবে পড়ে নিন ও এটাচমেন্ট চেক করুন।

সাধারণ সম্ভাষণ যোগ না করা

একজন মানুষ হিসেবে যেকোনো ধরনের ইমেইলে সাধারণ সম্ভাষণ (গ্রিটিংস) যোগ না করা বেশ বেমানান একটি বিষয়। তাই সাধারণ যেকোনো কনভার্সেশন এর মত ইমেইল এর ক্ষেত্রেও বেসিক গ্রিটিংস এড করতে ভুলবেন না। 

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

Caps Lock করে টাইপিং

ইমেইল যেহেতু বেশিরভাগ সময়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবহৃত হয়, তাই ইমেইল এর টাইপিং এর ক্ষেত্রে যথেষ্ট সাবধানতার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এর ক্যাপস লক অন করে সব লেখা বড় হাতের অক্ষরে লিখার অভ্যাস আছে অনেকের, যা একটি অত্যন্ত বিব্রতকর স্বভাব। বড়হাতের অক্ষরে পুরো ইমেইল লিখলে ব্যাপারটি বাজে দেখানোর পাশাপাশি প্রফেশনাল দেখায় না। কোনো কথায় জোর প্রদানের প্রয়োজন হলে তা বোল্ড করে দিতে পারেন, তবে ক্যাপস লক অন করে ইমেইল লেখা এড়িয়ে চলা শ্রেয়।

বানান ভুল করা

টাইপিং এর ক্ষেত্রে মানুষের ভুল হবেই, এটা স্বাভাবিক। ইমেইল যেহেতু বর্তমানে একটি প্রফেশনাল যোগাযোগের মাধ্যম, তাই ইমেইল এর ক্ষেত্রে অবশ্যই কোনো ধরণের স্পেলিং মিসটেক বা গ্রামাটিকাল ভুল থাকা উচিত নয়। চাইলে গ্রামারলি এর মত বিভিন্ন টাইপিং টুল ব্যবহার করে এই ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন বেশ সহজে।

কাব্যিক লেখালেখি

ইমেইল এর উদ্দেশ্য হলো সহজ ভাষায় অন্যের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা। ইমেইল লেখার জন্য আপনাকে সাহিত্যে নোবেল প্রাইজ দেওয়া হচ্ছে না। তাই সবসময় ইমেইল বিষয়ের আঙ্গিকে সাজিয়ে লিখুন ও অযথা কথা বাড়ানোর বিষয়টি এড়িয়ে চলুন। 

👉 ইমেইল আইডি খোলার নিয়ম

টোন বজায় রাখতে ভুলে যাওয়া

আমরা কথা বলার সময় প্রত্যেকটি অঙ্গ দ্বারা আমাদের অভিব্যাক্তি প্রকাশ করে থাকি। ইমেইলে কিন্তু সেই সুযোগ নেই, তাই ইমেইল লিখার সময় কোন টোনে লিখছেন তা খেয়াল রাখা একান্ত জরুরি।

ইমোজি ব্যবহার

ইমেইল যেহেতু ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে, তাই ব্যবসায়িক ইমেইলে ইমোজি ব্যবহার এড়িয়ে চলা ভাল। ইমেইলে ইমোজি এর ব্যবহার ইমেইল এর পেশাদারিত্ব নষ্ট করে। তবে মার্কেটিং ইমেইল হলে ভিন্ন কথা।

👉 ইমেইল পাঠানোর নিয়ম (মোবাইল ও কম্পিউটার থেকে)

ডাবল চেক না করা

ইমেইল পাঠানোর আগে সবসময় কয়েকবার পড়ে নেওয়া উচিত। বিভিন্ন টাইপিং টুল ব্যবহার করে টাইপিং মিসটেক ঠিক করা গেলেও মানুষের পক্ষে যে ভুল ধরা সম্ভব তা বের করা সম্ভব হয়না। তাই যেকোনো ইমেইল পাঠানোর আগে কয়েকবার পড়ে নেওয়া উচিত।

ইমেইল ম্যানেজমেন্টে সময় ব্যয়

ইমেইল ম্যানেজ করা আপনার ফুল-টাইম জব নয়, যা মনে রাখা উচিত। ম্যাকেনসি গ্লোবাল ইন্সটিটিউট এর একটি রিসার্চে জানা গেছে যে অধিকাংশ অফিস ওয়ার্কার তাদের দিনের কোয়ার্টার ভাগ সময় ইমেইল ম্যানেজ করতে কাটিয়ে দেন। তাই এই সময় ইমেইল ম্যানেজের কাজে নষ্ট না করে অন্য কাজে ব্যয় করা শ্রেয়।

👉 স্পাম ইমেইল কি? ক্ষতিকর স্প্যাম থেকে নিরাপদ থাকার উপায়

সাবধানতা ছাড়া সেনসিটিভ তথ্য পাঠানো

ইমেইল এর মাধ্যমে কোনো সেনসিটিভ তথ্য পাঠালে তা প্রাপককে আগেই জানিয়ে দিন। কেননা ইমেইল পাঠানোর পর প্রাপক যদি উক্ত ইমেইল চেইনে অন্য কাউকে যুক্ত করে, তবে উক্ত ফাইল বা তথ্যের গোপনীয়তা সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে যাবে। তাই সবসময় সেনসিটিভ কোনো তথ্য বা ফাইল ইমেইলে পাঠানোর ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করুন।

অটো-রেস্পন্ডার ব্যবহার না করা

আপনি কোনো ভ্যাকেশনে গেলেন, এক্ষেত্রে আপনার ইনবক্সে আসা ইমেইলগুলোর কি হবে সে বিষয়ে ভাবা উচিত। সবচেয়ে ভালো উদ্যোগ হলো ভ্যাকেশনে যাওয়ার আগে অটোমেটিক ইমেইল রেস্পন্ডার সেট করা রাখা। এছাড়া জরুরি প্রয়োজনে কিভাবে আপনার সাথে যোগাযোগ করা যাবে সে সম্পর্কেও জানিয়ে দিন।

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,550 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *