গ্রামীণফোন ই-সিম সম্পর্কে যেসব তথ্য আপনার জানা দরকার

বিস্তারিত এই ভিডিওতে দেখুন অথবা নিচের পোস্ট পড়ুন

পহেলা মার্চ ২০২২ তারিখে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন দেশে ই-সিম চালুর ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু অনিবার্য কারণে প্রথমবার সেবাটি পিছিয়ে যায়। এরপর ২৫ এপ্রিল ২০২২ তারিখ থেকে ই-সিম বিক্রি শুরু করে গ্রামীণফোন। ই-সিম হচ্ছে প্রচলিত প্লাস্টিকের কার্ডে চিপযুক্ত সিমের বিকল্প। ই-সিমকে ভার্চুয়াল সিমও বলা যায়। কেননা, মোবাইল অপারেটর দ্বারা সরবরাহকৃত ইসিম আপনি ধরতে বা ছুঁতে পারবেননা। বরং একটি কিউআর কোড স্ক্যান করে স্ক্রিনের নির্দেশনা অনুসরণ করলে আপনার মোবাইলে ই-সিম চালু হয়ে যাবে।

ই-সিম প্রযুক্তিতে মূলত মোবাইল ফোনের মধ্যেই সিম কার্ডের চিপ দিয়ে দেওয়া থাকে। আমরা প্রচলিত যেসব সিম কার্ড কিনি সেগুলোর মধ্যে খেয়াল করলে একটি সোনালি রঙের ধাতব অংশ দেখতে পাবেন। ঐ অংশের ভেতরে রয়েছে একটি চিপ বা ইলেকট্রনিক সার্কিট। এই চিপের মধ্যে মোবাইল অপারেটর তার পরিচিতি বা আইডেন্টিটি ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করে দিয়েছে। ফলে এই সিম যে ফোনে চালু করা হবে সেই ফোনে উক্ত পরিচিতিযুক্ত অপারেটরের নেটওয়ার্ক পাবে।

ই-সিম প্রযুক্তি এই প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করে দিয়েছে। এক্ষেত্রে সিম কার্ডের চিপ মোবাইল ফোনের নির্মাতা কোম্পানি ফোনের মধ্যে আগে থেকেই দিয়ে দেয়। বাকী থাকল শুধু নেটওয়ার্ক অপারেটরের পরিচিতি বা আইডেন্টিটি অংশ। 

আপনি যখন কোনো অপারেটরের কাছ থেকে ই-সিম কিনবেন তখন তারা আপনাকে একটি কিউআর কোড দিবে। এই কোড স্ক্যান করলে আপনার ফোন উক্ত অপারেটরের পরিচিতি আপনার সেটের মধ্যে থাকা ই-সিম এর ডাটাবেজে সংরক্ষণ করে নেবে। তখন আপনার ফোনে উক্ত ই-সিম ইনস্টল হয়ে যাবে। ব্যাস, আপনার ঐ ইসিমে থাকা মোবাইল নম্বর চালু হয়ে যাবে আপনার ফোনে!

উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি গ্রামীণফোনের কাছ থেকে একটি ই-সিম কেনেন, তাহলে আপনি কিছু কাগজপত্র পাবেন যার মধ্যে আপনার ই-সিমের কিউআর কোড প্রিন্ট করা থাকবে। তখন ফোনে উক্ত কিউআর কোড স্ক্যান করে পরবর্তী নির্দেশনা অনুসরণ করলেই আপনার ফোনে ই-সিমের নম্বর চালু হয়ে যাবে।

এবার চলুন জেনে নিই সচরাচর জিজ্ঞাসা করা হয়ে থাকে এমন কিছু প্রশ্ন।

গ্রামীণফোন ই-সিম এর সুবিধা কি?

ই-সিম হল আধুনিক এবং পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি। এতে প্রতিটি সিমের জন্য আলাদা প্লাস্টিক কিংবা ইলেক্ট্রনিক চিপ দরকার হয়না। এটি একটি ভার্চুয়াল সিম। ফোনের মধ্যে একাধিক ই-সিম সংরক্ষণ করে রেখে আপনি যখন যেটা ইচ্ছা চালু বা বন্ধ করতে পারবেন। 

অর্থাৎ আপনার ফোনের ধারণক্ষমতা অনুযায়ী ই-সিমের মধ্যে অদলবদল করতে পারবেন। সিঙ্গেল সিমের অনেক ফ্ল্যাগশিপ ফোন আছে, যেমন আইফোন ১১, এগুলোতে একটি প্রচলিত সিমকার্ড প্রবেশ করানো যায়। কিন্তু আইফোন ১০এস বা তার পরের মডেলগুলোতে আপনি একটি ই-সিম চালু রাখতে পারবেন।

সুতরাং আপনি যদি এতদিন অ্যাপল, স্যামসাং, গুগল পিক্সেল প্রভৃতি ব্র্যান্ডের ফোন ব্যবহার করে থাকেন তাহলে মডেলভেদে এখন একটি প্লাস্টিকের সিমের পাশাপাশি একটি জিপি ই-সিম চালু রাখতে পারবেন।

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

গ্রামীণফোন ই-সিম কিভাবে পাবো?

গ্রামীণফোন ২৫ এপ্রিল সোমবার থেকে ই-সিম বিক্রি শুরু করছে। বিভিন্ন গ্রামীণফোন সেন্টার অথবা জিপি অনলাইন শপ থেকে জিপি ই-সিম কিনতে পারবেন।

গ্রামীণফোন ই-সিম এর দাম কত?

গ্রামীণফোন ইসিম এর কত দাম হবে ২০০ টাকা। সিম রিপ্লেসমেন্টের সাহায্যে প্লাস্টিক সিম থেকে ইসিমে মাইগ্রেট করলে ৯৯ টাকা খরচ হবে। স্টার গ্রাহকের জন্য ফ্রি।

আমি কি আমার বর্তমান সিম ই-সিমে কনভার্ট করতে পারব?

অবশ্যই! আপনি উপযুক্ত গ্রামীণফোন সেন্টার অথবা সিম বিক্রয়কারীর কাছে গিয়ে বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন করে আপনার প্লাস্টিকের সিম কার্ডকে ই-সিমে রূপান্তর করতে পারবেন। এজন্য ৯৯ টাকা চার্জ প্রযোজ্য হবে। তবে আপনি যদি স্টার গ্রাহক হয়ে থাকেন তাহলে ই-সিমের রিপ্লেসমেন্ট বিনামূল্যে করতে পারবেন।

👉 ই-সিম কি? eSIM ব্যবহারের সুবিধা কি?

ই-সিম থেকে কি আবার প্লাস্টিকের সিমে ফেরত যাওয়া যাবে?

হ্যাঁ। আপনি চাইলে ই-সিম বাদ দিয়ে আবার প্রচলিত প্লাস্টিকের সিম কার্ডে ফেরত যেতে পারবেন। এজন্য উপযুক্ত গ্রামীণফোন সেন্টার, কাস্টমার কেয়ার, অথবা অনুমোদিত সিম বিক্রয়কেন্দ্রে যেতে হবে। বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন করার পর আপনি ই-সিমের পরিবর্তে একটি প্রচলিত প্লাস্টিকের সিম কার্ড পাবেন। এজন্য সিম রিপ্লেসমেন্ট ফি প্রযোজ্য হবে। স্টার গ্রাহক হলে ফ্রি হতে পারে।

আমার ফোনে কি ই-সিম চলবে?

গ্রামীণফোনের ই-সিম বর্তমানে নিচে প্রদত্ত হ্যান্ডসেটগুলোতে চলবে।

অ্যাপল আইফোন ও আইপ্যাড

  • iPhone 13, 13 Pro, 13 Pro Max, 13 Mini
  • iPhone 12, 12 Pro, 12 Pro Max, 12 Mini
  • iPhone SE
  • iPhone 11, 11 Pro, 11 Pro Max
  • iPhone XS, XS Max
  • iPhone XR
  • iPad Pro 12.9 inch (4th generation)
  • iPad Pro 12.9 inch (3rd generation)
  • iPad Pro 11 inch (2nd generation)
  • iPad Pro 11 inch (1st generation)
  • iPad Air (4th generation)
  • iPad Air (3rd generation)
  • iPad (8th generation)
  • iPad (7th generation)
  • iPad mini (5th generation)

👉 এক NID দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করা সকল সিম যাচাই করার উপায়

স্যামসাং স্মার্টফোন

  • Samsung Galaxy S22 5G, Ultra 5G, S22+ *(official version will support eSIM by April 01, 2022)
  • Samsung Fold LTE model
  • Samsung Galaxy Z Fold3 5G
  • Samsung Galaxy Z Flip 5G
  • Samsung Galaxy Z Flip
  • Samsung Galaxy Z Fold2 5G
  • Samsung Galaxy Fold
  • Samsung Galaxy S21+ 5G *(coming soon)
  • Samsung Galaxy S21 Ultra 5G *(coming soon)
  • Samsung Galaxy Note 20 FE 5G *(coming soon)
  • Samsung Galaxy Note 20 FE *(coming soon)
  • Samsung Galaxy Note 20, 20+, 20 Ultra, Ultra 5G *(coming soon)
  • Samsung Galaxy S20, S20+, S20 Ultra *(coming soon)

👉 সিম কতদিন বন্ধ থাকলে মালিকানা চলে যায় জানুন

গুগল পিক্সেল স্মার্টফোন

  • Google Pixel 6 Pro
  • Google Pixel 6
  • Google Pixel 5a 5G
  • Google Pixel 5
  • Google Pixel 4a
  • Google Pixel 4
  • Google Pixel 3 & 3XL (Limited support)
  • Google Pixel 2

আশা করা যায় শীঘ্রই আরো অনেক সাপোর্টেড হ্যান্ডসেট এই তালিকায় যুক্ত হবে। সর্বশেষ তালিকা দেখতে এখানে ক্লিক করুন। 

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,549 other subscribers

1 Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *