হোয়াটসঅ্যাপ এখন বিশ্বজুড়ে তুমুল জনপ্রিয় একটি অনলাইন যোগাযোগের মাধ্যম। ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার থেকে শুরু করে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও আজকাল যোগাযোগের জন্য তাদের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর দিয়ে থাকে। দিন দিন এর গুরুত্ব বেড়েই যাচ্ছে। সম্প্রতি হোয়াটসঅ্যাপ বেশ জরুরি একটি নিরাপত্তা ফিচার চালু করেছে যা আপনার একাউন্ট হ্যাক হওয়া থেকে রক্ষা করবে।
হোয়াটসঅ্যাপের এই নতুন নিরাপত্তা ফিচারটি হচ্ছে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন। এটি চালু করলে আপনার হোয়াটসঅ্যাপ মোবাইল নম্বর হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাপের সাথে প্রতিবার নতুন করে ভেরিফাই করার সময় আগে থেকে সেট করা একটি ৬ অংকের পিন কোড (বা পাসকোড) চাইবে। সেই পাসকোডটি এন্টার করলেই কেবলমাত্র হোয়াটসঅ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করার ভেরিফিকেশন কোডের মেসেজ আসবে।
নতুন কোনো স্মার্টফোনে হোয়াটসঅ্যাপ ইনস্টল করে আপনার মোবাইল নম্বর দিয়ে একাউন্ট খুলতে চাইলে মোবাইল নম্বর ভেরিফিকেশন মেসেজ আসার আগে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাপ্লিকেশনে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশনে সেট করা সেই ৬ সংখ্যার পাসকোডটি প্রবেশ করাতে হবে। যদি সঠিক পাসকোড প্রবেশ করাতে পারেন, তাহলেই কেবলমাত্র মোবাইলে ভেরিফিকেশন মেসেজটি আসবে।
এই ফিচারটি কেন দরকার?
খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। বর্তমানে হোয়াটসঅ্যাপে একাউন্ট খোলা বা সাইন-ইন করা খুবই সহজ। মোবাইলে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাপ্লিকেশনটি ইনস্টল করে সেটি চালু করতে হয়। এরপর হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাপ আপনার মোবাইল নম্বর চাইবে। মোবাইল নম্বর দেয়ার পর সেই নম্বরে একটি ভেরিফিকেশন কোড আসবে। এই কোডটি হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাপে প্রবেশ করালেই আপনার হোয়াটসঅ্যাপ একাউন্ট চালু হয়ে যাবে।
এখন কেউ যদি আপনার মোবাইল হাতে নিয়ে অন্য কোনো মোবাইল থেকে আপনার মোবাইল নম্বর হোয়াটসঅ্যাপে প্রবেশ করায় তাহলে আপনার ফোনে ভেরিফিকেশন কোড আসবে। এই কোডটি নিয়ে অন্য আরেকটি মোবাইলে থাকা হোয়াটসঅ্যাপে আপনার নিজের একাউন্টেই সাইন-ইন করা সম্ভব। এটা নিশ্চয়ই ঝুঁকিপূর্ণ।
কিন্তু টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন ফিচার চালু করলে এই ঝুঁকি আর থাকবেনা। তখন নতুন মোবাইল/অ্যাপ থেকে আপনার মোবাইল নম্বর ভেরিফাই করতে চাইলে শুরুতেই একটি পিন কোড দিতে হবে। টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করার সময় এই পিনকোড/পাসকোডটি আপনি নিজেই সেট করে দিবেন। ফলে আপনি ছাড়া আর কেউ এই পাসকোড জানবেনা। এটি কিছুটা পাসওয়ার্ডের মত, যাতে ৬টি সংখ্যা থাকবে। এই পিন কোড না দিতে পারলে মোবাইলে এসএমএস ভেরিফিকেশন কোড আসবেনা। ফলে নতুন ফোন/অ্যাপ থেকে আপনার হোয়াটসঅ্যাপ একাউন্টে প্রবেশ করা যাবেনা।
কীভাবে হোয়াটসঅ্যাপে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন ফিচার চালু করবেন?
প্রথমেই আপনার হোয়াটসঅ্যাপ একাউন্টে প্রবেশ করুন। এরপর এই পদ্ধতি অনুসরণ করুনঃ Settings > Account > Two-step verification > Enable.
টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন অপশন চালু করার সময় ৬ সংখ্যার একটি পিনকোড/পাসকোড সেট করতে হবে। এই পাসকোডটি পরবর্তীতে মোবাইল নম্বর ভেরিফাই করার পূর্বে দরকার হবে। সুতরাং এই পিন কোডটি ভুলে গেলে সমস্যায় পড়বেন।
পাসকোড সেট করার সময় একটি ইমেইল এড্রেস সাথে দিতে পারেন। পাসকোড ভুলে গেলে এই ইমেইলের মাধ্যমে আপনি টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন বন্ধ করে মোবাইল নম্বর শুধুমাত্র মেসেজের মাধ্যমে ভেরিফাই করে হোয়াটসঅ্যাপে সাইন-ইন করতে পারবেন। আর যদি ইমেইল এড্রেস না দেন, এবং এরপর পাসকোড ভুলে যান, তাহলে পাসকোড সহ ব্যবহারের ৭ দিন পর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। ৭ দিন পর পাসকোড ছাড়াই হোয়াটসঅ্যাপের ভেরিফিকেশন এসএমএস আপনার মোবাইলে আসবে। কিন্তু সেক্ষেত্রে আপনার সকল পেনডিং মেসেজ মুছে যাবে।
আর পাসকোড সহ হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারের পর আপনি যদি পাসকোড ভুলে গিয়ে আর সাইনইন করতে না পারেন, তখন এভাবে ৩০ দিন বন্ধ থাকার পর আপনার মোবাইল নম্বর নতুন করে সরাসরি এসএমএসে ভেরিফাই করা যাবে। সেক্ষেত্রে আর পাসকোড দরকার হবেনা। কিন্তু আপনার পুরাতন একাউন্টটি মুছে যাবে এবং নতুন করে একাউন্ট তৈরি হবে।
আর হ্যাঁ, আপনি যদি শুধু শুধু পাসকোড ভুলে যাওয়ার ইমেইল পান, আর সেটি যদি আপনি নিজে না রিকোয়েস্ট করে থাকেন, তবে ভুলেও ইমেইলের লিংকে ক্লিক করবেননা। তখন বুঝতে হবে কেউ আপনার একাউন্ট হ্যাক করার চেষ্টা করছে।
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।