ডিজিটাল বিপত্তির দুষ্টুচক্র

প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে করেছে সহজ ও আরও বেশি উপভোগ্য। কিন্তু এরও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। প্রযুক্তির স্বাভাবিক ব্যবহার ব্যহত হলে শুরু হয় বিপত্তি। মোবাইল ফোনের কথাই ধরুন, এতে আজকাল কথা বলা, ইন্টারনেট এক্সেস করা থেকে শুরু করে ব্যাংকিংয়ের মত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা হচ্ছে অহরহ। প্রযুক্তির প্রত্যেকটি উপাদান যতক্ষণ আপনার চাহিদা অনুযায়ী হাতের কাছে থাকবে, ততক্ষণ আপনি এর সুবিধা নিতে পারবেন। যদি দুর্ঘটনাক্রমে বেহাত হয়ে যায় তাহলেই বিপদ। এই  বিপদ কখনো একা আসেনা। কে বলবে, বিপদেরও হয়ত ভয়ডর আছে, তাই তারা দলবল নিয়ে আসে। একটার সাথে আরেকটা জড়িয়ে হাজির হয় বিপদমালা। উদাহরণসহ ব্যাখ্যা নিচে দেখুনঃ

১। সকালে বাসে করে অফিসে আসার সময় অনিক সাহেবের মানিব্যাগ হারিয়ে গেছে। মানে পকেটমারের হাতে গেছে আরকি।

২। মানিব্যাগের মধ্যে তার দুটি ডেবিট কার্ড ও অফিসের আইডি কার্ড ছিল। আইডি কার্ড সোয়াইপ না করলে অফিসের গেট খোলেনা। সুতরাং শুরুতেই ধাক্কা খেতে হবে তাকে।

৩। প্রথম ডেবিট কার্ড ডিএক্টিভেট করার জন্য ব্যাংকের হেল্পলাইনে একাধিকবার ফোন দিয়েও লাইন বিজি পাওয়া গেল।

৪। ফোন ধরার পর হেল্পলাইনের এক্সিকিউটিভ ব্যাংকের একাউন্ট নম্বর/কার্ড নম্বর এসব জানতে চাইলেন। কিন্তু এগুলো অনিক সাহেবের মুখস্থ ছিলনা। অনেকেরই থাকেনা।

৫। বিকল্প তথ্য দিয়ে অবশেষে একটি কার্ড ডিএক্টিভেট করা গেল।

৬। দ্বিতীয় ডেবিট কার্ড বন্ধ করার জন্য অন্য ব্যাংকের হেল্পলাইনে ফোন দেয়া হল।

৭। অনেক ভেরিফিকেশনের পর যখন কার্ড বন্ধ হবে হবে, তখনই মোবাইলের ব্যালেন্স ফুরিয়ে গেল। ফলে কার্ড বন্ধ হল কিনা নিশ্চিত হওয়া গেলনা।

৮। পকেটে টাকা নেই। সব ছিল মানিব্যাগে। সহকর্মীর কাছ থেকে ১০০ টাকা নিলেন অনিক সাহেব।

৯। অফিসের সহকারীকে সেই টাকা দিয়ে ফ্লেক্সিলোড দিতে ও সিগারেট আনতে বললেন।

১০। সিগারেট কিনে ৭৮ টাকা ছিল, পুরোটাই অনিক সাহেবের মোবাইলে ফ্লেক্সিলোড দিয়ে দিলেন অফিস সহকারী।

১১। খুচরা ৭৮ টাকা রিচার্জ করায় একাউন্টে ব্যালেন্স যোগ না হয়ে ‘জিপি অফার’ হিসেবে পুরো ৭৮ টাকার বিনিময়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই অনিক সাহেব পেলেন ১০০ (জিপি-জিপি) মিনিট!

১২। এখন এই মিনিট লইয়া অনিক সাহেব কী করিবেন????

১৩। পুনরায় ফ্লেক্সিলোড করতে গেলে তাকে ৫-১০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে, কারণ এর চেয়ে কম সময়ের ব্যবধানে একই নম্বরে একাধিকবার ফ্লেক্সিলোড করা যায়না।

১৪। ওদিকে নিজের পকেট ফাঁকা, যদিও সেটা কোনো সমস্যা না (ভাই-ব্রাদার আছেনা?)।

১৫। অতঃপর মোবাইলে আবার টাকা রিচার্জ করে ব্যাংকের হেল্পলাইনে অপেক্ষা করতে করতে কাস্টমার সার্ভিস এক্সিকিউটিভের কাছে জানতে পারা গেল কার্ডটি আগেরবারই ডিএক্টিভেট হয়ে গেছে। এতক্ষণ যে দুশ্চিন্তা করেছেন তা ছিল ‘বোনাস’!

আপনার এরকম ডিজিটাল বিপত্তির কথা জানা থাকলে কমেন্টে শেয়ার করুন।

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,543 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *