ফাইভার নাকি আপওয়ার্ক? কোনটি বেশি সুবিধাজনক?

ভিডিওটি দেখুন অথবা পোস্টটি পড়ুন!

fiverr vs upwork

ফ্রিল্যান্সিং দুনিয়ায় ফাইভার এবং আপওয়ার্ক খুবই জনপ্রিয় দুটি নাম। এই দুটি প্লাটফর্মই ফ্রিল্যান্সারদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। দুটি ওয়েবসাইট থেকেই যথেষ্ট ভালো পরিমাণ আয় করা গেলেও ফাইভার এবং আপওয়ার্কের কাজের ধরণে অনেকটাই ভিন্নতা রয়েছে। নতুন যারা ফ্রিল্যান্সিং শিখে কাজ শুরু করতে চান তারা অনেকেই কাজ শুরু করার পূর্বে দ্বিধায় ভোগেন কোথায় কাজ করা উচিত সেই বিষয়টি নিয়ে। মূলত সকলের এই দ্বিধা দূর করতেই আমাদের এই পোস্ট। ফাইভার এবং আপওয়ার্কে কাজের ধরণ, এদের পার্থক্য ইত্যাদি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা থাকবে এই পোস্টে। কাজেই আপনি যদি নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনার ক্যারিয়ার শুরু করতে চান তবে এই পোস্টটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আগেই জানিয়ে রাখছি, এই পোস্টে উল্লিখিত বিভিন্ন রেট যেকোনো সময় পরিবর্তন করতে পারে সংশ্লিষ্ট মার্কেটপ্লেস। সর্বশেষ তথ্য অফিসিয়াল সাইটে পাবেন।

ফাইভার ও আপওয়ার্ক কীভাবে কাজ করে?

ফাইভার এবং আপওয়ার্ক এর কার্যপদ্ধতির মধ্যে কিছু ভিন্নতা রয়েছে। ফাইভার এর যেকোনো সেবার অফারকে গিগ বলা হয়। ফ্রিল্যান্সারগণ গিগ পোস্ট করেন এবং গ্রাহকগণ সেখান থেকে তাদের পছন্দনীয় গিগ বেছে নেন। অর্থাৎ ফাইভারে গ্রাহকগণই তাদের ইচ্ছানুযায়ী ফ্রিল্যান্সার বেছে নেন। তবে ফাইভারে বায়ার চাইলে জব পোস্ট করতে পারেন যেখানে ফ্রিল্যান্সাররা বিড করতে পারেন।

আপওয়ার্কে ফ্রিল্যান্সারগণ তাদের প্রোফাইলে নিজেদের কাজ, অভিজ্ঞতা এসব তুলে ধরেন। গ্রাহকগণ তাদের যে কাজের জন্য ফ্রিল্যান্সার আবশ্যক তার বিবরণ দিয়ে মূলত জব পোস্ট করেন। ফ্রিল্যান্সাররা কাজের তালিকা থেকে নিজেদের অভিজ্ঞতার সাথে মিলিয়ে কাজের জন্য প্রপোজাল পাঠান। ক্লায়েন্টরা আগ্রহী ফ্রিল্যান্সারের তালিকা থেকে তাদের পছন্দের এক বা একাধিকজনকে নির্বাচন করে চুক্তিবদ্ধ হন। আবার গ্রাহকগণ চাইলে কোনো ফ্রিল্যান্সারকে কাজের জন্য ইনভাইটেশনও পাঠাতে পারেন।

মূল পার্থক্য কোথায়?

আপওয়ার্ক এবং ফাইভার এর মূল পার্থক্য কোথায় এটি নিয়েই সবথেকে বেশি প্রশ্ন আসে নতুন ফ্রিল্যান্সারদের মনে। দুই স্থানেই ফ্রিল্যান্সিং কাজ পাওয়ার সুযোগ থাকলেও কাজ যেভাবে আপনি পাবেন সেটিতেই আপওয়ার্ক এবং ফাইভার এর মূল পার্থক্য।

ফাইভার এ আপনি সেলার হিসেবে পরিচিত হবেন। ধরুন আপনি বিস্কুট কিনতে চান। কোন একটি দোকানে গেলে অনেক রকমের প্যাকেট করা বিস্কুট পাওয়া যেতে পারে। আপনি আপনার পছন্দের বিস্কুট দাম অনুযায়ী দেখে কিনে নেন। ফাইভারের ব্যাপারটিও অনেকটা সেরকমই। অর্থাৎ আপনি আপনার দক্ষতা অনুযায়ী বিভিন্ন কাজের প্যাকেজ ফাইভারে দিয়ে রাখতে পারেন। সেখানে আপনার কাজের রেট, আপনি কী কী কাজ করবেন, আপনি কী কী সুবিধা দেবেন এই সকল তথ্য দিয়ে সেটিকে পোস্ট করেন। অনেকটাই বিজ্ঞাপনের মতো করে। বায়াররা এসব প্যাকেজ থেকেই নিজেদের সুবিধামত প্যাকেজ অর্ডার করেন। এই প্যাকেজকেই ফাইভারে গিগ হিসেবে ডাকা হয়। অর্থাৎ ফাইভারে আপনার দক্ষতা বা কাজকে আলাদা একটি প্যাকেজ হিসেবে দেখানো হয় এবং এর মাধ্যমেই আপনি আয় করতে পারেন।

অপরদিকে আপওয়ার্ক এখানে সম্পূর্ণই আলাদা। আপওয়ার্কে বরং ক্লায়েন্টরাই তাদের কোন কাজটি দরকার সে বিষয়ে পোস্ট করেন। ফ্রিল্যান্সারদের এসব কাজের বিস্তারিত জেনে আগে ঠিক করতে হয় যে ক্লায়েন্টের সকল শর্ত পূরণ করে সঠিকভাবে কাজটি করতে পারবে কিনা। এরপর বিড করতে হয়। বিড বলতে কে কতটা কমে সেই কাজটি কতটুকু সুবিধা দিয়ে করতে পারবে সেটি প্রপোজাল হিসেবে দেয়া। এখান থেকে ক্লায়েন্ট নিজের সুবিধা অনুযায়ী যে কাউকে তার কাজটি করতে দিতে পারেন। অর্থাৎ আপওয়ার্কের কাজ পাওয়ার ধরণটি ফাইভার থেকে পুরোপুরি আলাদা।

কোথায় বেশি আয় করা যায়?

ফাইভার এবং আপওয়ার্কের ব্যাপারে আরও একটি বড় প্রশ্ন হচ্ছে কোথায় বেশি আয় করা সম্ভব। এই প্রশ্নের উত্তরটি তেমন সহজ নয়। কেননা আয়ের ব্যাপারটি মূলত নির্ভর করে ফ্রিল্যান্সারদের দক্ষতার উপর। একজন দক্ষ ফ্রিল্যান্সার সবসময়েই অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকেন এবং বেশি আয় করতে পারেন। কাজেই নিজের দক্ষতার উন্নতি সবার আগে জরুরি।

তবে ফাইভার মূলত স্বল্প সময়ের প্রোজেক্টের জন্য বিখ্যাত। এখান থেকে লম্বা সময়ের ক্লায়েন্ট বা কাজ পাওয়া কঠিন। যেহেতু এখানে গিগ হিসেবে আপনার প্রি-প্যাকেজড সেবা আপনি বিক্রি করছেন সেহেতু এখানে মূলত সেসব বায়ার আসেব যাদের ছোটখাটো কাজগুলো করতে দক্ষ লোকের দরকার হয়।

অপরদিকে আপওয়ার্ক লম্বা সময়ের প্রোজেক্টের জন্য বিখ্যাত। এখানে ক্লায়েন্টরা নিয়মিত তাদের জব পোস্ট করে থাকেন। আর এসব কাজ সাধারণত বড় রকমের হয়ে থাকে। দেখা যায় একই প্রোজেক্টে একত্রে অনেকে কাজ করেন লম্বা সময় ধরে। কাজেই এখানে আপনি লম্বা সময়ের জন্য আয় করতে পারবেন। এছাড়া এখানে বড় প্রোজেক্ট পাওয়া যায় সহজে। আর তাই দক্ষ হলে আপওয়ার্কে আপনি ফাইভার থেকে বেশি আয় করতে পারবেন।

তবে দক্ষতা না থাকলে কোন স্থান থেকেই আয় করা সম্ভব নয়। কাজেই আপনি কী কাজ করতে চান সেটি ঠিক করে সে বিষয়ে যথেষ্ট দক্ষতা অর্জন করুন। সহজেই দুই স্থান থেকেই ভালো পরিমাণ আয় করতে পারবেন।

খরচ কেমন?

ফাইভার এবং আপওয়ার্ক – উভয় প্ল্যাটফর্মই পেমেন্ট থেকে একটি নির্দিষ্ট অংশ ফি হিসেবে কেটে নেয়, যদিওবা এখানে মূল্য পার্থক্য লক্ষণীয়।

ফাইভার এ ফিল্যান্সার এবং গ্রাহক – উভয়কেই চার্জ করা হয়। যেকোনো গিগ কেনার আগেই এডভান্স হিসেবে উল্লিখিত ফিস প্রদান করতে হয় গ্রাহকদের। বর্তমানে ফাইভার ২০% সার্ভিস ফি নেয় ফ্রিল্যান্সারদের আয়কৃত অর্থ থেকে। (উল্লেখ্য, এই রেট যেকোনো সময় পরিবর্তন করতে পারে ফাইভার।) ফাইভার প্রাইসিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের এই পোস্ট দেখুন

আপওয়ার্কে একজন ফ্রিল্যান্সার একটি ঘন্টামাফিক রেট কিংবা পার প্রজেক্ট বিড সেট করেন। আপওয়ার্ক প্রতিটি সম্পন্ন হওয়া প্রজেক্ট এর উপর ফি আরোপ করে আয় করে। অর্থাৎ কোনো প্রজেক্টে একজন গ্রাহকের কাছে কোনো ফিল্যন্সার এর যে সার্ভিস রেট দেখানো হয়। তার মধ্যেই আপওয়ার্ক এর ফি যুক্ত থাকে। আপওয়ার্ক প্রতিটি পেমেন্ট এর উপর ফ্রিল্যান্সারের আয়ের ১০% হারে চার্জ করে। (উল্লেখ্য, এই রেট যেকোনো সময় পরিবর্তন করতে পারে আপওয়ার্ক।)  আপওয়ার্ক প্রাইসিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই পোস্ট দেখুন

এছাড়া ফাইভারে জবে বিড করতে ফ্রিল্যান্সারের কোনো খরচ নেই। তবে আপওয়ার্কে জবে বিড করার জন্য ফ্রিল্যান্সারের টাকা খরচ করে পয়েন্ট কিনতে হয়, যেগুলো কানেক্টস নামে পরিচিত। আপওয়ার্ক কানেক্টস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই পোস্ট দেখুন

কোনটির কোয়ালিটি কেমন?

আপনি যদি সাইট দুইটিতে ক্রেতা অর্থাৎ গ্রাহক এর ভূমিকা পালন করেন, তবে সাইট দুইটির গুণগত মান সম্পর্কে জানা আপনার জন্য একান্ত জরুরী। ফাইভার এবং আপওয়ার্ক, উভয় মার্কেটপ্লেসেই অসংখ্য দক্ষ ফিল্যান্সার রয়েছেন। তবে ফ্রিল্যান্সার নিয়োগের ক্ষেত্রে সাইট দুটি কিছুটা ভিন্ন পদ্ধতিতে কাজ করে।

সার্চবারে কিওয়ার্ড টাইপ করার মাধ্যমে কাঙ্খিত কাজের জন্য আশানুরূপ ফ্রিল্যান্সারের দেখা মিলবে ফাইভারে। এর একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হল সাইটটিতে ফিল্যান্সার কতৃক প্রদত্ত সেবার বিশদ বিবরণ পাওয়া যায়, যা একজন গ্রাহকের জন্য ফ্রিল্যান্সার নিয়োগের কাজটি আরো সহজ করে দেয়।

অন্যদিকে অভিন্নভাবে সার্চবার এর মাধ্যমে বিভিন্ন ক্যাটাগরি এবং দক্ষতার বিচারে ফিল্যান্সার খোঁজা যাবে আপওয়ার্কেও। একজন ফ্রিল্যান্সার এর ঘন্টামাফিক রেট, আপওয়ার্কে তাদের ব্যায়কৃত সময়, ইত্যাদি তাদের প্রোফাইল থেকে জানা যায়।

রেটিং সিস্টেম

ফাইভার এবং আপওয়ার্ক – উভয় সাইটেই রেটিং সিস্টেম রয়েছে, যাতে একজন গ্রাহক খুব সহজেই তার প্রয়োজনানুগ যোগ্য ফ্রিল্যান্সার খুঁজে নিতে পারে। তাই আপনি যদি একজন গ্রাহক হয়ে থাকেন, তবে কোনো ফ্রিল্যান্সারকে কাজে নিয়োগের পূর্বে রেটিংস দেখে তার পূর্ববর্তী কাজসমূহ সম্পর্কে একটি সার্বিক ধারণা পেয়ে যাবেন। আর আপনি যদি একজন ফ্রিল্যান্সার হন তাহলে আপনার অন্যতম কাজ হবে মার্কেটপ্লেসে নিজের রেটিং ভালো রাখা।

প্রি-স্ক্যানিং সুবিধাসমূহ

ফাইভারে স্কিল টেস্ট দেয়ার সুবিধা আছে। আপনি তাদের অফিসিয়াল এই টেস্টগুলো দিলে বায়াররা আপনার দক্ষতা সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারবে। আপওয়ার্কে আগে স্কিল টেস্ট সুবিধা ছিল, কিন্তু এখন সেগুলো বাদ দিয়ে দেয়া হয়েছে।

পেইড মেম্বারশিপ বা বিশেষ একাউন্ট সুবিধা

ফাইভারে কোনো পেইড মেম্বারশিপ নেই। সবাই তাদের একাউন্ট কোনো মাসিক ফি ব্যতীত বিনামূল্যে চালাতে পারেন এবং ফাইভারের সুযোগসুবিধা উপভোগ করতে পারেন। তবে আপনি যদি দক্ষ হন, তাহলে ফাইভার প্রো মেম্বার হতে পারেন। সেক্ষেত্রে বেশ কিছু বাড়তি সুবিধা পাবেন। তবে ফাইভার প্রো গ্রাহকদের কোনো মাসিক ফি দিতে হয়না।

আপওয়ার্কে বেশ কিছু পেইড মেম্বারশিপ প্ল্যান আছে। এগুলোর আলাদা আলাদা সুবিধাও রয়েছে। যেমন আপনি যদি একজন ফ্রিল্যান্সার প্লাস মেম্বার হন তাহলে আপনি জবে এপ্লাই করার জন্য ফ্রি কানেক্টস পাবেন, বিড রেঞ্জ দেখতে পাবেন, প্রোফাইলে বাড়তি সুবিধা পাবেন ইত্যাদি। অপর দিকে বায়ারদের জন্যও রয়েছে বেশ কিছু পেইড প্ল্যান

অ্যাপস

আপওয়ার্কের মোবাইল অ্যাপস এবং কম্পিউটার ট্র্যাকিং সফটওয়্যার রয়েছে। ঘন্টা ভিত্তিক জবের জন্য কম্পিউটারে এই আপওয়ার্ক ট্র্যাকিং সফটওয়্যার ইনস্টল করার দরকার হয়। এটা চালু করে কাজ করলে কিছুক্ষণ পরপর বায়ারের কাছে ফ্রিল্যান্সারের কাজের স্ক্রিনশট যায় এবং এটা সময়ের হিসেব রাখে, যে অনুযায়ী বায়ারকে বিল করা হয়।

ফাইভারের কোনো ট্র্যাকিং অ্যাপ নেই। তবে মোবাইল অ্যাপ আছে, যেগুলো দিতে জব সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজ এবং মেসেজ আদানপ্রদান করা যায়।

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

পেমেন্ট নেবো কীভাবে?

ফাইভার এবং আপওয়ার্ক উভয় সাইট থেকেই পেওনিয়ার কার্ড দেয়া হয়। এই কার্ড দিয়ে আপনি টাকা তুলতে এবং অনলাইনে কেনাকাটা করতে পারবেন। এছাড়া আপওয়ার্ক এবং ফাইভার থেকে সরাসরি ব্যাংক ট্র্যান্সফারও করতে পারেন। পেমেন্ট মেথড নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।

পর্যবেক্ষণ এবং বিরোধ নিষ্পত্তি

আপনি একজন ফ্রিল্যান্সার হোন কিংবা একজন বায়ার, একটি অনলাইন মার্কেটপ্লেসে সমস্যার সম্মুখীন হওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার। তাই একটি অনলাইন মার্কেটপ্লেস তাদের প্ল্যাটফর্মের কার্যক্রমগুলোকে পর্যবেক্ষণ করে কিনা এবং সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে কী ভূমিকা পালন করে, তাও দেখা জরুরী।

ফ্রিল্যান্সার এবং গ্রাহকের মধ্যে দ্বন্দ্বের বা সমস্যার সৃষ্টি হলে, ফাইভারে প্রথমে ফ্রিল্যান্সার এবং গ্রাহকের নিজেদের মধ্যেই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করতে হয়। তাতে কাজ না হলে ফাইভারের প্রতিনিধি এ ব্যাপারে কাজ করেন। এছাড়া সেলার চাইলে কন্ট্রাক্ট ক্যান্সেল করে দিতে পারেন।

আপওয়ার্কে বিরোধ নিষ্পত্তি এবং পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে চমৎকার কিছু ব্যবস্থা আছে। আপওয়ার্কে কনট্রাক্ট হোল্ডে রাখা যায়। ফ্রিল্যান্সার এবং গ্রাহকের মধ্যে কোনো ধরনের অসন্তোষের সৃষ্টি হলে রিপোর্ট এর উপর নির্ভর করে আপওয়ার্ক একজন মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ করে, যিনি সমস্যা সমধানে কাজ করেন।

নতুনদের জন্য কোনটি সুবিধাজনক?

আমার জানা মতে নতুনদের জন্য ফাইভার এ ফ্রিল্যান্সিং শুরু করা তুলনামূলক সহজ। আপওয়ার্কে বর্তমানে একাউন্ট খোলা এবং এপ্রুভাল পাওয়া কিছুটা সময়সাপেক্ষ হয়েছে বলে কমিউনিটি থেকে জানা যাচ্ছে। তবে কাজ জানলে আপওয়ার্কে অনেক উচ্চমূল্য এবং দীর্ঘস্থায়ী জব পাওয়া সম্ভব। আমার মতে উভয় মার্কেটপ্লেসেই একাউন্ট রাখা যেতে পারে।

সব মিলিয়ে কোনটি সেরা?

একেকটি ক্ষেত্রে এই দুটি প্লাটফর্মকে আলাদাভাবে সেরা বলা যেতে পারে। দুটি প্লাটফর্মেই ফিচার এবং সুযোগ-সুবিধাগুলো আলাদা হবার কারনে তাদের নিজস্ব সমস্যাও রয়েছে। সংক্ষেপে এই ব্যাপারে আলোচনা করলে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন আপনার দক্ষতা অনুযায়ী কোন প্লাটফর্ম আপনার ব্যবহার করা উচিত।

যারা নতুন নতুন ফ্রিল্যান্সিং করেন তাদের কাছে আপওয়ার্ককে কঠিন মনে হতে পারে। কেননা আপওয়ার্কে অনেক রকম ফিচার ও সুবিধা রয়েছে যা অনেক সময় খুব বেশিও মনে হতে পারে। একজন নতুন ফ্রিল্যান্সারের জন্য সকল সুবিধা ব্যবহার করা সম্ভব নয়। তাই স্বাভাবিকভাবেই নতুন ফ্রিল্যান্সাররা আপওয়ার্ককে জটিল ভাবতে পারেন। কিন্তু ফাইভার অনেকটাই ইউজার ফ্রেন্ডলি। সহজেই ফাইভারের ফিচারগুলো বুঝে নেয়া যায় এবং এতে কাজ পাওয়ার পদ্ধতিও অনেকটাই সোজা। কাজেই খুব বেশি অভিজ্ঞ টেক ব্যবহারকারী না হলে ফাইভার দিয়েই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করা উচিত।

অপরদিকে ফাইভারে লম্বা সময়ের প্রোজেক্ট তেমন একটা পাওয়া যায় না। কাজেই লম্বা সময় ধরে একটি কাজে যারা উপার্জন করতে চান তাদের জন্য ফাইভার ঠিক জায়গা নয়। ফাইভারের বেশিরভাগ কাজ স্বল্প সময়ের এবং একবারের কাজ। যখন আপনার হাতে তেমন সময় থাকবে না এবং আপনি দ্রুত কোন কাজ শেষ করে ফেলতে চাইবেন তখন ফাইভার সেরা। তবে একটি কাজের পিছনে সময় ব্যয় করতে চাইলে আপওয়ার্কেই কাজ করা উচিত। সবথেকে ভালো হচ্ছে দুটি প্লাটফর্মেই অ্যাকাউন্ট রাখা। এরপর নিজের সময় ও চাহিদা অনুযায়ী কাজ করা।

সব মিলিয়ে আপওয়ার্কে সহজে আয় করা যায়। তবে এটি যে সবক্ষেত্রে হবে তেমনটি নয়। আপনি যদি এমন কোন কাজে দক্ষ হন যেটি ফাইভারে বেশি সেল হচ্ছে বা অর্ডার হচ্ছে তবে ফাইভার সেই কাজের জন্য উপযুক্ত। তবে বেশিরভাগ কাজের ক্ষেত্রেই আপওয়ার্কে লম্বা সময়ের প্রোজেক্ট পাওয়া যায় এবং বেশি আয় করা যায়।

অর্থাৎ আপনার কাজের ধরণ অনুযায়ী আপনার জন্য কোন প্লাটফর্ম সেরা সেটি নির্ধারণ করতে হবে আপনাকেই। যে স্থানে বেশি আয় হবে সেই স্থানেই নিজের সময় বেশি দেয়া উচিত। নিজের দক্ষতা বাড়াতেও সবসময় সচেষ্ট থাকা উচিত। এতে করে ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে যে কোন প্লাটফর্ম হতেই সহজে সফলতা পাওয়া যায়।

ফাইভার এবং আপওয়ার্ক – দুইটি শীর্ষ অনলাইন মার্কেটপ্লেস। এসব মার্কেটপ্লেসে ফ্রিল্যান্সার এবং গ্রাহক – উভয়ের জন্যই অফুরন্ত সম্ভবনা নিহিত রয়েছে। এই দুটি সাইট সম্পর্কে আপনার ব্যক্তিগত মতামত কী? ফাইভার এবং আপওয়ার্ক এর মধ্যে সেরা কোনটি? কমেন্ট করে আপনার মতামত জানিয়ে দিন।

👉 আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করে সাথেই থাকুন। এখানে ক্লিক করে সাবস্ক্রিপশন কনফার্ম করুন!

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,551 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *