ভু-স্থির উপগ্রহ এর মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা প্রদান করে স্টারলিংক জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট। প্রায় ৬০টি দেশে স্টারলিংক এর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বাংলাদেশেও তাদের কাজ শুরুর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ২০১৯ সাল থেকে ইলন মাস্ক এর স্পেসএক্স স্টারলিংক স্যাটেলাইট লঞ্চ শুরু করে। ইতিমধ্যে সাড়ে ৪ হাজারের অধিক স্যাটেলাইট কক্ষপথে স্থাপন করা হয়েছে। শুরুতে ১২ হাজার স্যাটেলাইট এর কথা থাকলেও বর্তমানে ৪২ হাজার স্যাটেলাইট কক্ষপথে স্থাপনের পরিকল্পনা জানানো হয়েছে। মূলত এনটেনার মাধ্যমে এই স্যাটেলাইটগুলো ইন্টারনেট সরবরাহ করবে।
সম্প্রতি বাংলাদেশে স্টারলিংক তাদের সেবা চালু করার ব্যাপারে প্রক্রিয়া শুরু করেছে। স্টারলিংক নিয়ে আমাদের সকলের প্রশ্নের শেষ নেই। স্টার লিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট নিতে খরচ কেমন – এই প্রশ্নও সর্বাধিকবার করা হয়৷ এই পোস্টে আপনার স্টার লিংক সম্পর্কিত সকল প্রশ্নের উত্তর পাবেন।
যেভাবে কাজ করে স্টার লিংক
একজন গ্রাহক এর দৃষ্টিকোণ থেকে স্টারলিংক কিভাবে কাজ করে তা জেনে নিলে আমাদের জন্য বিষয়টি আরও সহজ হবে। স্টারলিংক কিট এর মাধ্যমে স্টারলিংক ইন্টারনেট সাপ্লাই দিবে। উক্ত কিটে থাকবে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ডিস, ওয়াইফাই রাউটার, পাওয়ার সাপ্লাই, ক্যাবল ও বেস। স্টারলিংক বেস গ্রাউন্ড লেভেল ইন্সটলেশনে বা ইন্টারনেট কানেকশন টেস্ট করতে কুইক-স্টার্ট সেটাপে ব্যবহৃত হবে।
তবে ঠিকমত সেটআপ করতে চাইলে সেক্ষেত্রে পারমানেন্ট মাউন্ট কেনাই উত্তম। স্টারলিংক ডিশ হলো সেলফ-অরিয়েন্টেড এবং আকাশের অবস্থা ঠিক থাকলে বেশ দ্রুত এটি কানেক্ট হয়ে যায়। সকল হার্ডওয়্যার ঠিকভাবে সেটআপ করার পর স্টারলিংক নেটওয়ার্কে কানেক্ট করা যাবে ও স্টারলিংক অ্যাপ ব্যবহার করে সার্ভিস ম্যানেজ করা যাবে। স্টারলিংক এর লো অরবিট আর্থ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে স্পেসএস এই সেবা প্রদান করে থাকে, এসব স্যাটেলাইট ৫৫০ কিলোমিটার অরবিটে থাকে। স্টারলিংক এর অনেকগুলো স্যাটেলাইট ভূমির কাছাকাছি থাকায় বেশ লো লেটেন্সি সার্ভিস প্রদান করে থাকে।
স্টার লিংক ইন্টারনেটের গতি কেমন
যুক্তরাষ্ট্রে স্টারলিংক এর গড় গতি ২০২২ এর সেকেন্ড কোয়ার্টারে ৬২ এমপিএস হিট করেছে বলে জানায় ওকলা। এক কিংবা দুইজন মানুষ একইসাথে ভিডিও স্ট্রিম করা বা গেম ডাউনলোড করা কিংবা সাধারণ ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য এটি যথেষ্ট। একবছর পর এই স্পিড ৯০ এমপিএস হিট করেছে বলে শোনা যাচ্ছে। এছাড়া স্টারলিংক এর কাস্টমার যত বাড়ছে, তার সাথে এর পারফরম্যান্সে চাপ পড়ছে বলেও জানা গেছে। ইউরোপ, ওশেনিয়া, উত্তর আমেরিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার প্রায় সকল দেশে ওকলা’র জরিপে স্পিডে কমতি লক্ষ্য করা গেছে। ইলন মাস্ক যদিও বলেছিলেন ২০২১ এর মধ্যে স্টার লিংক ৩০০ এমপিএস স্পিড হিট করবে, সেই আশা আশাই থেকে গেলো। মোট কথায় স্টারলিংক এর ইন্টারনেট সেবা নির্ভরযোগ্য তো বটে, কিন্তু খরচসহ অন্যান্য বিষয় হিসাব করলে ভাবার বিষয় আসলে গতানুগতিক ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এর চেয়ে এটি কতটুকু খরচসাপেক্ষ সেবা।
🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥
স্টার লিংক ইন্টারনেটে খরচ কত?
বাংলাদেশে স্টার লিংক এর সেবা ২০২৩ সালে আসার প্রক্রিয়ার খবর যখন থেকে জানা গিয়েছে তখন থেকেই এটিকে নিয়ে বেশ কথাবার্তা হচ্ছে। প্রি-অর্ডার করতে ৯৯ ডলার ফি ইতিমধ্যে গ্রহণ করা শুরু করেছে স্টারলিংক, যা আমাদের মত দেশের মানুষের কাছে কিছুটা কৌতূহলের হওয়াও স্বাভাবিক।
স্টারলিংক দাবি করছে তাদের স্যাটেলাইট এর কল্যাণে প্রত্যন্ত এবং অনুন্নত এলাকাতে হাই-স্পিড ব্রডব্যান্ড কানেকটিভিটি পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে যা যেসব এলাকায় সীমিত সুবিধা রয়েছে সেসব এলাকার জন্য গেম-চেঞ্জার হতে যাচ্ছে।
স্টারলিংক ইন্টারনেট ব্যবহার করতে মাসিক ফি গুণতে হবে ৯৯ ডলার বা প্রায় ১১ হাজার টাকা। আবার স্টারলিংক সেটআপ করতেও প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ ডলার অর্থাৎ ৫০ বা ৬০ হাজার টাকার বেশি খরচ হবে।
এছাড়াও যদি ব্যবসায়িক ব্যবহারে স্টার লিংক কানেকশন নেওয়া হয় তাহলে মাসিক ২৫০০ ডলার পর্যন্ত ইন্টারনেট খরচ গুণতে হবে। বলে রাখা ভালো সাধারণ ব্যবহারের জন্য ৫০০০ এমপিবিএস স্পিড এর ইন্টারনেট সেবা পেতে গুণতে হবে মাসিক ৫০০ ডলার।
স্টারলিংক এর খরচ যেকোনো ব্যবহারের উদ্দেশ্যেই অনেক বেশি। উল্লেখিত স্টারলিংক এর মাসিক ফি গ্লোবাল ফি এর সাথে মিল রেখে বলা হয়েছে। বাংলাদেশে অফিসিয়ালি এখনো স্টারলিংক এর মাসিক ফি জানানো হয়নি।
👉 স্টারলিংক – স্যাটেলাইট ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা যা আপনাকে অবাক করবে
যদি আমাদের দেশের দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা করা হয়, তবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এর জন্য মাসে ১০ হাজার টাকা ফি অনেক বেশি বলতে হবে। বর্তমানে গ্রাম-অঞ্চলেও ৫০০ থেকে ১০০০ টাকার মধ্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বা ওয়াইফাই লাইন পাওয়া যায়। সেই বিষয় বিবেচনা করলে মাসে ১০ হাজার টাকায় ইন্টারনেট কানেকশন নেয়ার গ্রাহক কমই আছে বলতে হবে।
স্টারলিংক বাংলাদেশে সফল হতে হলে সেক্ষেত্রে অবশ্যই তাদের মাসিক ফি কমিয়ে আনতে হবে উল্লেখযোগ্য হারে। অন্যদিকে স্টারলিংক এর স্টারলিংক কিট এর ফি কমানোর উপায় তো নেই। দেখার বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশে স্টারলিংক কতটা সফলতা অর্জনে সক্ষম হয়। তবে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, স্টারলিংক যেসব প্রত্যন্ত এলাকায় যেতে পারবে সাধারণ ব্রডব্যান্ড কিন্তু সেখানে যেতে পারছেনা। তাই স্টারলিংকের একটা আলাদা চাহিদা অবশ্যই থাকবে।
স্টার লিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট কি আপনি নিবেন? দেশে স্টার লিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট এর খরচ কেমনে পড়তে পারে বলে আপনার ধারণা? স্টার লিংক সম্পর্কিত আপনার যেকোনো জিজ্ঞাসা বা মতামত কমেন্টে শেয়ার করতে পারেন।
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।
মাসিক 500 টাকায় কমপক্ষে 10MBPS স্পিড এর ইন্টারনেট, সর্বোচ্চ 2000টাকার মধ্যে সেটআপ/ইনস্টল, যদি দিতে পারে তারা, তবেই নিবো নিবো, আর নয়তো অন্য আর যত যাই হোক বা যত বেশিই স্পীড বা সুবিধাই থাকুক না কেনো আমি নিবো না, নিবো না, নিবো না। অন্যকে ও নিষেধ করবো। দরকার হলে মোবাইলের ডাটা ব্যবহার করবো। পাগল নাকি এত টাকা দিবো বিনোদনের জন্য? কাজের জন্য তো বেশি নেট লাগে না। বিনোদনের জন্যই বেশি লাগে😀