ভবিষ্যতের কম্পিউটারগুলো হবে আরও ছোট আকারের, দ্রুততর, এবং অধিক দক্ষ। একথা এতদিন পার্সোনাল মাইক্রোকম্পিউটারের ক্ষেত্রে খাটলেও প্রকৃতপক্ষেই ক্ষুদ্র কম্পিউটারের অধ্যায় এবার শুরু হয়েছে। সিলিকন যুগ থেকে কম্পিউটিং কার্বন ন্যানোটিউব প্রজন্মে প্রবেশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির একদল বিজ্ঞানী সম্প্রতি বিশ্বের প্রথম কার্বন ন্যানোটিউব ভিত্তিক কম্পিউটার “সেডরিক” তৈরির সাফল্য প্রকাশ করেছেন।
ঐ প্রকৌশলী টিমের ভাষ্যমতে এই ডিভাইসে সিলিকন নির্মিত ট্র্যানজিস্টরের স্থলে কার্বন ন্যানোটিউব নির্মিত নতুন ধরণের ট্র্যানজিস্টর ব্যবহৃত হয়েছে। আর স্ট্যানফোর্ডের গবেষক দল কর্তৃক উদ্ভাবিত এই কম্পিউটারটিই হচ্ছে কার্বন ন্যানোটিউব নির্ভর (এখন পর্যন্ত) সবচেয়ে জটিল যন্ত্র।
সিলিকন যুগের সমাপ্তি বোধ হয় এসেই গেল
কার্বন ন্যানোটিউব বা ‘সিএনটি’ হচ্ছে অতিসূক্ষ্ম সিলিন্ডার যা কার্বন পরমাণু দ্বারা তৈরি শিট থেকে প্রস্তুতকৃত। প্রতিটি কার্বন ন্যানোটিউব মাত্র ১ ন্যানোমিটার এবং এগুলো থেকে তৈরি চিপের সর্বনিম্ন পুরুত্ব ৯ ন্যানোমিটার। অরপরদিকে, সর্বাধুনিক সিলিকন চিপের প্রস্থ ২২ ন্যানোমিটার।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ন্যানোমিটার হচ্ছে মেট্রিক পদ্ধতিতে দৈর্ঘ্যের একটি একক, যা এক মিটারের একশো কোটি ভাগের এক ভাগের সমান (১০–৯ মি.) অথবা এক মিলিমিটারের এক মিলিয়ন ভাগের এক ভাগ।
কার্বন ন্যানোটিউব ভিত্তিক এই কম্পিউটার সেডরিক এর নির্মাতারা দাবী করেছেন এটি যথেষ্ট পরিমাণ মেমোরি নিয়ে “অসীম” পরিমাণ কাজ সম্পন্ন করতে পারে। প্রাথমিকভাবে নির্মিত সেডরিকের প্রোটোটাইপের কনফিগারেশন হচ্ছে,
- ১ বিট প্রসেসর
- ১ কিলোহার্টজ স্পিড
- ১৭৮ ট্র্যানজিস্টর যার প্রতিটিতে রয়েছে ১০-২০০টি ন্যানোটিউব
- ২ বিলিয়ন কার্বন পরমাণু
- মাল্টিটাস্কিং ও টিউরিং কমপ্লিট দক্ষতা
কম্পিউটিং জগতের পরিভাষায় “টিউরিং কমপ্লিট” মানে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ডিভাইসটি যেকোন গণনামূলক সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম।
সেডরিক চলে একটি সরল অপারেটিং সিস্টেমে যা মাল্টিটাস্ক সুইসিং, কাউন্টিং ও নাম্বার সর্টিং করতে পারে। অতীতের কার্বন ভিত্তিক কম্পিউটারসমূহের গণনায় যে সীমাবদ্ধতা ছিল তা অতিক্রম করতে পেরেছে সেডরিক- অর্থাৎ এটি প্রতিবারই সঠিক উত্তর দিতে পারে।
ইনটেল, স্যামসাং প্রভৃতি মাইক্রোচিপ নির্মাতার জন্যও এখানে সুখবর রয়ে গেছে। কেননা, কার্বন ন্যানোটিউব তৈরির জন্য যেসব ল্যাব সুবিধা দরকার তা বর্তমান সিলিকন চিপের সাথে মানানসই হওয়ায় নতুন করে বড় ধরণের বিনিয়োগের আর দরকার হবেনা। ৪০ বছর ধরে আমরা যে সিলিকন যুগের সমাপ্তি কল্পনা করছি, সেটা বোধ হয় এসেই গেল!
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।