বাংলাটেক২৪ ডটকম এর পাঠকদের জন্য গবেষণাধর্মী এই লেখাটি পাঠিয়েছেন ফাহ্রিয়া কবির।
“সোশ্যাল মিডিয়া”র সাথে আমরা সবাই ই কম বেশি পরিচিত। আজকাল, বেশিরভাগ মানুষেরই ফেসবুক, ইউটিউব, জিমেইল, ইয়াহু ইত্যাদি ওয়েবসাইটগুলোতে বেশ আনাগোনা দেখা যায়। সোশ্যাল মিডিয়াগুলোর অবদানে খুব সহজেই আমরা পৃথিবীর একপ্রান্তের খব অন্য প্রান্তে পৌছে দিচ্ছি। বিষয়টা চিন্তা করলে মনে হয়, আমরা কত এগিয়ে যাচ্ছি!
কিন্তু একই সময়ে মনে প্রশ্ন জাগে, আমরা টেকনোলজি সংক্রান্ত নৈতিকতা নিয়ে কতটুকু সচেতন? অনেকেই, এখন মনে করতে পারেন, টেকনোলজির সাথে এথিক্স বা নৈতিকতার আবার কি সম্পর্ক? কিন্তু, প্রকৃত পক্ষে, শুধু সম্পর্ক আছে যে তা নয়, এই সম্পর্ক নিয়ে অনেক মানুষ গবেষনায় ও লিপ্ত আছেন। কেউ কেউ এই সম্পর্কে জানেন, তাই সচেতন, আবার কেউ কেউ কখনো চিন্তা করে দেখেন নি। আমি আজকে, খুব ছোট কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই।
যতদিন যাচ্ছে, আমাদের চাহিদা বাড়ছে, এবং আমরা হাই-স্পিড ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য উদগ্রীব। EDGE, BroadBand, Wimax, Wifi এর যুগ পার হয়ে এখন আমরা অধির আগ্রহে থ্রি-জি টেকনোলজির অপেক্ষায় আছি। কিন্তু কেন? কারন, আমরা চাই অবিরত যোগাযোগ, আমরা চাই, ফাস্ট ডাউনলোড এবং আপলোড রেইট।
বিষয়টি নিয়ে আমি নিজেও বিমুগ্ধ, কিন্তু, একই সময়ে আমি উদ্বিগ্ন। আমাদের যুব সমাজ কি ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার ভাল দিক গুলো নিতে পারছে, নাকি তারা অনৈতিক কর্মকান্ডে আকৃষ্ট হয়ে পরছে? পর্নোগ্রাফি অনেক বড় একটি অভিশাপ, এবং মাল্টিমিডিয়া মুঠোফোন/মুঠোফোনে এম্বেডেড অপারেটিং সফটওয়ারের (এন্ড্রয়ড,আইওএস, মোযিলাওএস ইত্যাদি) কল্যানে মুঠোফোনে আমরা সহজেই স্ট্রিমিং মিডিয়া সেবা (ভিডিও আপলোড/ডাউনলোড বা ভিডিও দেখা) পেতে পারি।
এবং, একই সাথে, পর্নোগ্রাফির ওয়েবসাইটগুলোও সহজে একসেস করা যায়। সেপ্টেম্বরের ১৮ তারিখে, তেহেল্কাডটকম, একটি ভারতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয় ধর্ষন বিষয়ক একটি প্রতিবেদন, “ধর্ষনের ভুলে যাওয়া গল্পগুলি (The Forgotten Rape Stories)”। ওই প্রতিবেদনে, কয়েকটা কেইস স্টাডিজের মধ্যে দেখা যায়, ঘটনার সময় বা ঘটনার আগে রেইপিস্টগুলো তাদের মুঠোফোনে নোংড়া ভিডিও দেখছিল। আমার কাছে বাংলাদেশের কোন ডেটা আপাতত নেই, কিন্তু, আমি ধারণা করতে পারি, বাংলাদেশেও এই ধরণের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তবে, একটা বিষয় আমার বারবার আমার চোখে পড়েছে, মেয়েদের ছবি তুলে, ফেইসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া অথবা ব্ল্যাকমেইল করা। সব কিছুই খুব সহজ হয়ে পড়ছে কারন, টেকনোলজির সহজলভ্যতার পাশাপাশি, উপযুক্ত পলিসি নিয়ে সরকারি মন্ত্রণালয়গুলোতে চিন্তা করা হচ্ছে না।
বিতর্ক থেকে যেতে পারে, পর্ণ ভিডিও দেখা অনৈতিক না আইনত দন্ডনীয়? আরো, বিতর্ক করা যেতে পারে, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডারগুলোকে কি আইনের মাধ্যমে বাধ্য করা যেতে পারে কিনা যে, তারা প্রক্সি সার্ভারে ফায়ারওয়ালের মাধ্যমে সাইটগুলো ব্লক করে দিবে? নাকি তাদের শুধুমাত্র নৈতিকতার দোহাই দিয়ে এই অনুরোধ করা যায়? প্রশ্ন থেকে যায়, এমনটি করা হলে, তরুণ সমাজের কি প্রতিক্রিয়া হবে? প্রশ্নগুলো নিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হবে। দিনশেষে, আমরা সাধারণ মানুষেরাই কিন্তু বিভিন্ন ইন্টারনেট সেবা গ্রহন করছি। তাহলে, ইন্টারনেট ব্যবহারে নৈতিকতা রক্ষা কি আমাদেরই দায়িত্ব নয়?
লেখকঃ ফাহ্রিয়া কবির
জুনিয়র টিচিং ফেলো,
এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।