প্রতিষ্ঠার পর থেকে ফেসবুকে অসংখ্য ছোট বড় পরিবর্তন এসেছে। ফেসবুকের সহপ্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ ফেসবুককে একটি বহুমুখী প্ল্যাটফর্মে পরিণত করতে চান সেটা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে। একের পর এক নতুন প্রোডাক্ট লঞ্চ আর হার্ডওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি কিনে ফেসবুক এখন একটি সোশ্যাল মিডিয়া সাইটই নয়, বরং একটি ক্ল্যাসিক টেক জায়ান্ট।
সম্প্রতি মার্ক জাকারবার্গ নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে এক ব্লগ পোস্টে (আসলে ফেসবুক নোটস!) ফেসবুকের কিছু ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বেশ কিছু তথ্য দেন। এর মধ্য থেকে ফেসবুকের পরিকল্পনাধীন পাঁচটি বিশাল পরিবর্তন এখানে আপনারদের সুবিধার্থে তুলে ধরা হলোঃ
১। মেসেজিংই ভবিষ্যত!
তাহলে কি ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপ এর মতো হয়ে যাবে? না, ব্যাপারটা ঠিক সেরকম না। আসলে জাকারবার্গের মতে মেসেজিংয়ে গুরুত্ব দেয়া মানে ইন্ডিভিজ্যুয়াল বা প্রাইভেট ইন্টারেকশনে গুরুত্ব দেয়া। একসময় ফেসবুক মানে টাইমলাইনে কিছু লিখে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করা বুঝাতো। কিন্তু আস্তে আস্তে বিভিন্ন গ্রুপ, ফান্ডরেইজার, কেনা-বেচা ইত্যাদি সেবা চালুর ফলে মানুষের ব্যক্তিগত ইন্টারেকশন বাড়ছে। আর এজন্যই ফেসবুক ভবিষ্যতে ওয়ান-টু-ওয়ান যোগাযোগে গুরুত্ব দিবে।
২। টোটাল এনক্রিপশন
হোয়াটসঅ্যাপ এ আমরা অনেক আগেই এনক্রিপশন ফিচার দেখেছি। জাকারবার্গের মতে, হ্যাকার, বিভিন্ন দেশের সরকার, এমনকি ফেসবুক কর্তৃপক্ষও যেন মানুষের ব্যক্তিগত ডেটা অবাধে ব্যবহার করার সুযোগ না পায় সেজন্য এনক্রিপশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর এজন্যই অতি শীঘ্রই ফেসবুক তাদের সবধরনের মেসেজিং সেবা এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন এর আওতায় আনবে।
৩। অটো-এক্সপায়ারিং পোস্ট
আপনি নিশ্চয়ই কিছু মেসেজিং সার্ভিসে সেল্ফ ডেস্ট্রাক্টিং মেসেজ বা অটো-এক্সপায়ারিং পোস্ট নামের ফিচার দেখেছেন। এই ফিচারের মাধ্যমে কোন পোস্ট বা মেসেজে একটি সময় সেট করে দেয়া যায় যে সময়ের পর সেটি আপনা-আপনি ডিলিট হয়ে যায় অথবা হাইড হয়ে যায়। অপরিচিত বা কম পরিচিত মানুষদের সাথে ইন্টারেকশনের ক্ষেত্রে এটা খুবই কাজের একটি ফিচার।
ইতিমধ্যে মেসেঞ্জারে দুই পাশ থেকেই বার্তা মুছে ফেলার অপশন চালু হয়েছে। জাকারবার্গের ঐ পোস্টের তথ্য থেকে ধারনা করা হচ্ছে, ফেসবুক ভবিষ্যতে সব ধরনের পোস্টের ক্ষেত্রেই অটো-এক্সপায়ারিং ফিচার চালু করবে।
তবে কিছু মানুষ আছেন যারা পুরোনো ছবি কিংবা পোস্ট দেখে নস্টালজিক হতেই বেশি পছন্দ করেন। হয়তো তাদের কথা বিবেচনা করে একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর ছবি অন্যদের কাছ থেকে হাইড হয়ে যাবে, শুধু নিজে দেখতে পারা যাবে এমন সুবিধা আসতে পারে।
৪। মোবাইল অ্যাপ একীভূত করা
আমরা জানি ফেসবুক তো বটেই, পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার, ইন্সটাগ্রাম এগুলো সবই ফেসবুকের মালিকানাধীন সার্ভিস। কিছু মানুষ হোয়াটসঅ্যাপ এ স্বাছন্দবোধ করেন আবার কিছু মানুষ মেসেঞ্জারে।
তাই সবার সাথে যোগাযোগ করার জন্য আপনাকে ফোনে একাধিক অ্যাপ ইন্সটল করে রাখতে হচ্ছে। আবার একাধিক অ্যাপের নোটিফিকেশন আলাদাভাবে চেক করাও ঝামেলার। তবে অদূর ভবিষ্যতেই ফেসবুক তাদের অ্যাপগুলো যেন একটি অপরটির কাজ করতে পারে সেই ব্যবস্থা করবে।
তার মানে আপনি ফেসবুকে কোন কিছু বিক্রির বিজ্ঞাপন দিলে হয়তো আগ্রহী ক্রেতা সরাসরি আপনার নম্বর না জেনেই আপনার হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ দিতে পারবে। আবার, ইন্সটাগ্রামে স্টোরি দিলে হয়তো ফেসবুক বন্ধুরা মেসেঞ্জারেই সেটার রিপ্লাই দিতে পারবে।
৫। ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত ডেটার গোপনীয়তা
বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশের সরকারের কাছ থেকে ইউজারদের ব্যক্তিগত ডেটার জন্য ফেসবুকের কাছে অসংখ্য আবেদন আসে, সেটা সকলেরই জানা। তবে জাকারবার্গ তার ঐ পোস্টে জানিয়েছেন, মানুষের তথ্যের অধিকারের পক্ষে তারা আরো কাজ করবেন। এমনকি যেসব দেশের সরকার মানুষের ব্যক্তিগত ডেটার সুরক্ষা দেয় না সেসব দেশে তিনি কখনো ফেসবুকের ডেটা সেন্টার নির্মাণ করবেন না।
অবশ্য ফেসবুকের এসব ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এখনো প্রাথমিক পর্যায়েই আছে। এখনই এসব পরিবর্তন আসবে এমনটা ভাবার কোন কারণ নেই। মার্ক জাকারবার্গ জানিয়েছেন এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগে অনেক আলোচনা ও চিন্তা ভাবনা করা হবে।
আপনি ফেসবুকের এ পরিবর্তনগুলো নিয়ে কী ভাবছেন?
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।