এই হেডসেটটি আপনার মনের কথা বুঝতে পারে

অ্যাপল, মাইক্রোসফট ও অ্যামাজনের মত বড় বড় টেক জায়ান্ট তৈরি করেছে সিরি, করটানা ও অ্যালেক্সা নামের ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাপ। গুগলেরও আছে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট। কিন্তু এগুলোর অন্যতম সীমাবদ্ধতা হচ্ছে, সিরি, করটানা বা এরকম অন্যান্য ডিজিটাল অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাপের সাথে আপনাকে শব্দ করে কথা বলে কাজ আদায় করতে হবে। এগুলো মূলত ভয়েস কমান্ডে চলে। যেমন, আপনি আইফোনে সিরিকে বা এন্ড্রয়েডে আপনার গুগল অ্যাসিস্ট্যান্টকে একটি মেসেজ লেখার জন্য কমান্ড দিতে পারেন।

কিন্তু এসব ক্ষেত্রে আপনাকে কথা বলে মেসেজটি ফোন পর্যন্ত পৌঁছাতে হবে। তার পরেই কেবল সিরি, করটানা, কিংবা গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট- যেই হোক, আপনার কমান্ড অনুযায়ী কাজ করতে পারবে। বাসার বাইরে জনবহুল স্থানে আপনি এভাবে ফোনের সাথে কথা বললে সেটা খুব একটা ভালো দেখাবেনা। বরং আপনার গোপন মেসেজও অন্য কেউ শুনে ফেলতে পারে। তাছাড়া বাইরের শব্দে আপনার কথা ঠিকভাবে শুনবেওনা আপনার অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাপ। এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে এমআইটি উদ্ভাবিত নতুন ডিভাইস অল্টারইগো।

হ্যাঁ। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণাকেন্দ্রিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির একদল গবেষক নতুন একটি পরিধানযোগ্য যন্ত্র উদ্ভাবন করেছেন যেটি হেডসেটের মত কানে দিয়ে রাখলে ডিভাইসটি আপনার মনের কথা বুঝতে পারবে। অল্টারইগো নামের এই ডিভাইস মস্তিষ্ক থেকে উৎপন্ন সংকেত বিশ্লেষণ করে ব্যবহারকারীর মনের ভাষা বুঝে ফেলে। এমআইটির ঐ গবেষক দল জানিয়েছে, তাদের পরীক্ষানিরীক্ষায় অল্টারইগো ৯২% ক্ষেত্রেই সঠিকভাবে মানুষের মনের কথা বুঝতে পেরেছে।

আমরা যখন কোনো কথা বলি, তখন আমাদের মস্তিষ্ক সেই কথাগুলো সাজিয়ে আমাদের চোয়াল এবং মুখের মাংসপেশিতে সংকেত পাঠায়। তারপর আমাদের মুখ এবং বাক সহায়ক অন্যান্য অংশের নড়াচড়া ও শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমে আমরা সেই কথা শব্দের মাধ্যমে প্রকাশ করি। অল্টারইগো মানুষের চোয়াল এবং মুখের মাংসপেশিতে আগত ঐ সংকেত গ্রহণ করে এবং তা বিশ্লেষণের মাধ্যমে ভয়েস আউটপুট তৈরি করে হেডসেটের মাধ্যমে প্রথমে ব্যবহারকারীকে শোনায়। ব্যবহারকারী শুনে যদি মনে করে যে কথাগুলো ঠিক আছে, তাহলে তা পরবর্তী কাজে (যেমন ভয়েস কমান্ড দিতে) ব্যবহার করা যায়। অল্টারইগো ব্যবহারকারীর শব্দ করে কথা বলার দরকার নেই, মনে মনে কথা বললেই তা গ্রহণ করে ডিভাইসটি।

ব্রেইন সিগন্যাল ধরার জন্য অল্টারইগো বর্তমানে চারটি সেন্সর ব্যবহার করে, যেগুলো কান থেকে চোয়াল পর্যন্ত স্পর্শ করে থাকে। তবে বর্তমানে হেডসেটটি আপনার কাছে একটু বড় মনে হতে পারে। এর উদ্ভাবকদের প্রত্যাশা, ভবিষ্যতে ডিভাইসটি আরও ছোট হবে এবং সহজে ব্যবহারযোগ্য হিসেবে উপস্থাপন করা যাবে।

এটি প্রতিবন্ধী ও শিল্পকর্মীরাও ব্যবহার করতে পারবেন। যেসব স্থানে উচ্চ শব্দের কারণে কথা বলে যোগাযোগ করা কঠিন সেসব জায়গায় অল্টারইগো উপযোগী হতে পারে। সেই সাথে ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাপে ব্যবহারযোগ্যতা তো রয়েছেই।

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,543 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *