রেজিস্টিভ ও ক্যাপাসিটিভ টাচস্ক্রিনের মধ্যে পার্থক্য কী?

স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, পিসি সহ বিভিন্ন ডিভাইসে টাচস্ক্রিনের ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। সাধারণতঃ কনস্যুমার ইলেকট্রনিকসে স্পর্শ দ্বারা চালিত এসব স্ক্রিন দুই ধরণের প্রযুক্তি ব্যবহার করে। এর একটি হচ্ছে ক্যাপাসিটিভ (capacitive) ও অন্যটি রেজিস্টিভ (resistive); অপেক্ষাকৃত পুরাতন এবং কম দামের মোবাইল ফোনে রেজিস্টিভ টাচস্ক্রিন বেশি ব্যবহৃত হতে দেখা যায়। বর্তমানে ক্যাপাসিটিভ প্রযুক্তিই টাচস্ক্রিনযুক্ত স্মার্ট ডিভাইসের বেশিরভাগ জায়গা দখল করে নিচ্ছে। কিন্তু এই দুই প্রকার স্ক্রিনের মধ্যে পার্থক্য কী? এই পোস্টে আমরা সে ব্যাপারেই আলোচনা করব।

রেজিস্টিভ টাচস্ক্রিন

আধুনিক স্মার্টফোন, ট্র্যাকপ্যাড ও ট্যাবলেট ছাড়া আমরা যেসব টাচস্ক্রিন দেখি তার একটা বড় অংশ জুড়ে আছে রেজিস্টিভ টাচস্ক্রিন। এগুলো কাজ করার জন্য রেজিস্ট্যান্সের ওপর নির্ভরশী

ল। রেজিস্টিভ টাচস্ক্রিনে দুয়ের অধিক লেয়ার বা স্তর থাকে। সবচেয়ে উপরের দিকের দুটি সরু লেয়ার থাকে। এদের প্রত্যেকটিতে বিশেষ কোটিং বা আস্তরণ রয়েছে এবং কোটিং করা দিক দুটি পরস্পর মুখোমুখি সেট করা হয়। দুই লেয়ারের মাঝে সূক্ষ্ম ফাঁকা স্থান থাকে।

যখন আপনি রেজিস্টিভ টাচস্ক্রিনের কোনো অংশে চাপ দেন তখন এই দুটি স্তর পরস্পরের সংস্পর্শে আসে এবং বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়। এই সংকেত কাজে লাগিয়ে সংশ্লিষ্ট পজিশনে টাচ-সেন্সিটিভিটি তৈরি হয়। রেজিস্টিভ স্ক্রিনে যথেষ্ট পরিমাণ চাপ না পড়লে এটি প্রতিক্রিয়া দেখাবে না। এজন্যই

বেশিরভাগ ইউজার ক্যাপাসিটিভ টাচস্ক্রিনে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। এছাড়া এগুলোতে মাল্টিটাচ জেশ্চার যেমন ‘পিঞ্চ টু জুম’ প্রভৃতি দেয়া হয়না। এতে অনেকগুলো লেয়ার থাকার ফলে ডিসপ্লের গ্রাফিক্সের মানও প্রভাবিত হয়।

ক্যাপাসিটিভ টাচস্ক্রিন

আগেকারদিনের স্মার্টফোন যেমন নকিয়া এন সিরিজ, ই-সিরিজ প্রভৃতি টাচস্ক্রিন যুক্ত মডেলের ডিভাইসে রেজিস্টিভ ডিসপ্লে দেখা গেলেও, আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি যে- মূলত ক্যাপাসিটিভ স্ক্রিনই আগে আবিষ্কৃত হয়েছে। রেজিস্টিভ স্ক্রিন উদ্ভাবনের প্রায় ১০ বছর পূর্বে ক্যাপাসিটিভ স্ক্রিনের আগমন। কিন্তু প্রথমদিকে এগুলোর দক্ষতা এখনকার মত ছিলনা।

রেজিস্টিভ টাচস্ক্রিনে আপনি আঙুল, কলম, স্টাইলাস বা যেকোনো কিছু দিয়ে টাচ করে কাজ চালাতে পারেন। এগুলো মূলত মেকানিক্যাল প্রেসার (চাপ) এর ওপর নির্ভর করে।

কিন্তু ক্যাপাসিটিভ টাচস্ক্রিনে বিদ্যুৎ প্রবাহকে অন্যভাবে কাজে লাগানো হয়। এসব ডিসপ্লের বাইরের দিকে কাঁচের (স্বচ্ছ ও কঠিন) লেয়ার রয়েছে যাতে ক্যাপাসিটিভ সেন্সিং প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়। এই অংশে বিদ্যুৎ পরিবাহী (কনডাক্টিভ) স্তর থাকে যেটিতে অন্য কোনো কনডাক্টিভ বস্তু স্পর্শ করালে এর ইলেকট্রিক প্রোপার্টিতে পরিবর্তন আসে। এই পরিবর্তন থেকে সংকেত নিয়েই ক্যাপাসিটিভ টাচস্ক্রিন ইনপুট নিয়ে থাকে। ক্যাপাসিটিভ টাচস্ক্রিনে বিদ্যুৎ অপরিবাহী স্টাইলাস বা অন্য কোনো বস্তু দিয়ে টাচ করলে প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়না। তবে বর্তমানে কিছু কিছু ‘সুপার সেনসিটিভ’ ক্যাপাসিটিভ টাচস্ক্রিনে গ্লোভস পরেও কাজ চালিয়ে নেয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ, নকিয়া লুমিয়া ৯২০ স্মার্টফোনেই এই সুবিধা পাবেন। এর পেছনে কী প্রযুক্তি কাজ করেছে সেটি অফিসিয়ালভাবে প্রকাশ করেনি নকিয়া।

এই পোস্টটিতে কি কোনো সম্পাদনা প্রয়োজন? আপনার মন্তব্য জানালে ভাল হয়। আর হ্যাঁ, আপনার কোন ধরণের টাচস্ক্রিন পছন্দ? ক্যাপাসিটিভ নাকি রেজিস্টিভ? বর্তমানে কোনটিই বা ব্যবহার করছেন?

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,550 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *