দ্রুত-গতির প্রযুক্তি বিশ্বে অপারেটিং সিস্টেমেও আসছে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন। মূলত হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার এর অগ্রগতির সাথে পাল্লা দিয়ে অপারেটিং সিস্টেমও আপডেট করা অত্যাবশ্যক।
উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম চালিত কম্পিউটারগুলোতে বর্তমানে উইন্ডোজ এর লেটেস্ট ভার্সন হলো উইন্ডোজ ১১। তবে অধিকাংশ উইন্ডোজ ব্যবহারকারী এখনো উইন্ডোজ ১০ ব্যবহার করে থাকেন।
তাই ২০২৪ সালে এসে প্রশ্ন উঠতে পারে আপনার কি এখনও উইন্ডোজ ১০ চালানো উচিত? নাকি লেটেস্ট উইন্ডোজ ১১ তে আপগ্রেড করা উচিত? আমাদের পোস্টে আমরা জানবো সেইসব প্রশ্নের উত্তর। মূলত উইন্ডোজ ১০ ব্যবহার করা চালিয়ে গেলে আপনি কি কি সুবিধা পাচ্ছেন এবং উইন্ডোজ ১১ তে বাড়তি কি কি সুবিধা পেতে পারেন সে বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে আমরা জানার চেষ্টা করবো আপনার জন্য কোনটি সুবিধাজনক হতে পারে।
উইন্ডোজ ১০ ব্যবহারের সুবিধা
উইন্ডোজ ১০ মুক্তি পায় ২০১৫ সালে যা একযুগ ধরে কম্পিউটার বিশ্বে এক অনন্য সংযুক্তি হিসেবে পরিচিত। এর পরিচিতি ও স্ট্যাবিলিটির কল্যাণে বিশ্বব্যাপী লয়্যাল ইউজার বেস তৈরী করে নিয়েছে এই অপারেটিং সিস্টেম। অগণিত কম্পিউটার চলছে আজ এই ওএস ভার্সন দ্বারা। যেসব কারণে উইন্ডোজ ১০ ব্যবহার করে যাওয়ার বিষয়টি আপনি বিবেচনায় রাখতে পারেন সেগুলো সম্পর্কে প্রথমে জানি চলুন।
উইন্ডোজ ১০ ব্যবহার করে যাওয়ার সবচেয়ে সহজ কারণ হতে পারে এর পরিচিতি। অনেক লম্বা সময় ধরে এই অপারেটিং সিস্টেম চলমান থাকার কারণে অনেক ব্যবহারকারীর কাছে এর ইন্টারফেস ও ফিচারগুলো বেশ পরিচিত হয়ে গিয়েছে, এই কারণে উইন্ডোজ ১১ তে আপগ্রেড করা তাদের জন্য প্রায়োরিটি নাও হতে পারে।
উইন্ডোজ ১০ বেশ অনেকদিন ধরেই চলমান থাকায় অধিকাংশ সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার সাপোর্ট করে এই অপারেটিং সিস্টেমে। কম্প্যাবিলিটির দিক দিয়ে উইন্ডোজ ১০ এগিয়ে থাকবে অন্য যেকোনো অপারেটিং সিস্টেমের চেয়ে। আপনি যদি নির্দিষ্ট কিছু অ্যাপ্লিকেশনের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকেন এবং উক্ত অ্যাপগুলো উইন্ডোজ ১১ তে ভালোভাবে সাপোর্ট না করে থাকে তাহলে উইন্ডোজ ১১ তে স্যুইচ করার কোনো কারণ নেই আপনার কাছে।
উইন্ডোজ ১০ একটি স্ট্যাবল ও নির্ভরশীল অপারেটিং সিস্টেমে পরিণত হয়েছে। মাইক্রোসফট অনেকগুলো আপডেট ও প্যাচ এর মাধ্যমে উইন্ডোজ ১০ এর পারফরম্যান্স ও সিকিউরিটি উন্নত করেছে। যার ফলে নির্ভরশীল একটি কম্পিউটিং এক্সপেরিয়েন্স এর জন্য অনেক ব্যবহারকারীর কাছে উইন্ডোজ ১০ এর কোনো বিকল্প নেই।
🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥
উইন্ডোজ ১১ তে কেনো আপগ্রেড করবেন?
২০২১ সালে মুক্তি পাওয়া উইন্ডোজ ১১ হলো মাইক্রোসফট কম্পিউটিং এর ভবিষ্যত ভিশন। রিফ্রেশড ইউজার ইন্টারফেস, নতুন ফিচার ও এনহেন্সড পারফর্মেন্স নিয়ে বাজারে আসে উইন্ডোজ ১১।
যেসব কারণে উইন্ডোজ ১১ তে আপনার আপগ্রেড করার প্রয়োজন পড়তে পারে বা আপনি সিদ্ধান্তটি বিবেচনা করতে পারেন সেগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
প্রথমত উইন্ডোজ ১১ এর ইন্টারফেস বেশ মডার্ন ও আকর্ষণীয় বটে, যা সৌন্দর্য পছন্দ করেন এমন যে কারো ভালো লাগতে বাধ্য। সেন্টারড টাস্কবার আইকন, রাউন্ডেড আইকন, মাল্টিটাস্কিং এর জন্য নতুন স্ন্যাপ লেআউট, ইত্যাদি নতুন ভিজ্যুয়াল ফিচার উইন্ডোজ ১১ তে আপগ্রেডের জন্য বেশ ভালো কারণ হতে পারে। উইন্ডোজ ১০ বা এর আগের ভার্সনগুলোর চেয়ে উইন্ডোজ ১১ দেখতে বেশ অসাধারণ।
উইন্ডোজ ১১ তে প্রাইভেসি সবচেয়ে বেশি গুরত্ব পেয়েছে। ইম্প্রুভড ভার্চুয়াল ডেস্কটপ, এনহেন্সড ভার্চুয়াল ডেস্কটপ, এনহেন্সড উইন্ডো ম্যানেজমেন্ট, এবং অ্যামাজন অ্যাপস্টোর এর মাধ্যমে ন্যাটিভ এন্ড্রয়েড অ্যাপস সাপোর্ট এর মত কাজের ফিচার রয়েছে উইন্ডোজ ১১ তে। এসব ফিচার অনেকের ওয়ার্কফ্লো ও প্রোডাক্টিভিটিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
উইন্ডোজ ১১ তে রয়েছে বেটার পারফরম্যান্স ও এফিসিয়েন্সি যার মধ্যে রয়েছে ফাস্টার স্টার্টআপ টাইম, ডাইরেক্টএক্স ১২ আল্টিমেট এর কল্যাণে ইম্প্রুভড গেমিং পারফরম্যান্স, এবং ওভারাল সিস্টেম পারফরম্যান্সে উন্নতির মত ফিচার। এই বিষয়গুলো যদি আপনার মুল প্রায়োরিটি হয় তবে উইন্ডোজ ১১ আপনার জন্য বেটার পছন্দ হতে পারে।
👉 উইন্ডোজ ১০ এর চেয়ে যেসব ক্ষেত্রে এগিয়ে উইন্ডোজ ১১
আপনার কি এখনও উইন্ডোজ ১০ চালানো উচিত?
ফিরে আসি শুরুর প্রশ্নে – আপনার কি এখনও উইন্ডোজ ১০ চালানো উচিত? এইক্ষেত্রে আরো কিছু বিষয় মাথায় রেখে আপনার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
উইন্ডোজ ১১ এর কিছু নির্দিষ্ট সিস্টেম রিকয়ারমেন্ট রয়েছে, যেমনঃ টিপিএম ২.০ ও সিকিউর বুট সাপোর্ট। তাই আপগ্রেড এর আগে এই বিষয়গুলো আগে আপনার নিশ্চিত করতে হবে এবং রিকয়ারমেন্ট ফিলআপ না করলে সেক্ষেত্রে হয়ত কম্প্যাবিলিটি ইস্যুতে পড়তে পারেন।
উইন্ডোজ ১০ এ থাকা বা উইন্ডোজ ১১ তে আপগ্রেড করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে যে বিষয়টি আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে সেটি হলো: আপনার ব্যবহৃত অ্যাপগুলো উইন্ডোজ ১১ তে কোনো সমস্যা ছাড়া চলবে তো? কোনো ধরনের আপগ্রেডের আগে এই বিষয়টি মাথায় রাখা সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ। নাহলে আপনার কাজে সমস্যা হতে পারে।
বলে রাখা ভালো উইন্ডোজ ১১ যেহেতু অপেক্ষাকৃত অনেক নতুন একটি সফটওয়্যার ভার্সন, তাই এটি উইন্ডোজ ১০ এর চেয়ে অধিক সফটওয়্যার সাপোর্ট পাবে মাইক্রোসফট এর পক্ষ থেকে। এর মানে হলো লম্বা সময় ধরে ব্যবহারের জন্য উইন্ডোজ ১০ এর চেয়ে উইন্ডোজ ১১ অধিক উপযোগী হবে।
উল্লেখিত আলোচনা থেকে আপনার উইন্ডোজ ১০ ব্যবহার চালিয়ে যাওয়া কিংবা আপগ্রেড করার সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যে পাওয়ার কথা। মূলত আপনার প্রয়োজন ও সুবিধার কথা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত হবে।
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।