অনলাইনে আয় বা ফ্রিল্যান্সিং বর্তমানে চিরাচরিত চাকরির চেয়ে কোনোদিকে পিছিয়ে নেই। অনলাইনে কাজ করে বর্তমানে বেশ ভালো অংকের অর্থ আয় সম্ভব। একজন ফ্রিল্যান্সার এর আয় বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে। এই পোস্টে জানবেন অনলাইনে মাসে কত টাকা আয় করা যায় সেই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে বিস্তারিত।
অনলাইনে আয়ের ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয়
অনলাইনে মাসে কত টাকা আয় করা যায় সে সম্পর্কে জানার আগে অনলাইনে আয়ের পরিমাণ যেসব বিষয়ের উপর নির্ভর করে সেগুলো সম্পর্কে জানতে হবে। অনলাইনে আয় বা ফ্রিল্যান্সিং করে আয়ের পরিমাণ নির্ভর করে যেসব বিষয়ের উপর, সেগুলো সম্পর্কে একনজরে জেনে নেওয়া যাক।
- অভিজ্ঞতাঃ যেকোনো কাজের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একজন ফ্রিল্যান্সারের কোনো কাজে যত বেশি অভিজ্ঞতা থাকে, উক্ত কাজের জন্য তার সময়ের দাম তত বেশি হতে পারে।
- দক্ষতাঃ একজন ফ্রিল্যান্সারের দক্ষতার উপর তার আয়ের পরিমাণ নির্ভর করে। একজন ফ্রিল্যান্সার দক্ষ হলে বেশি আয়ের কাজ করতে পারবেন, আবার তার কাজ ও বেশ দ্রুত হয়ে যাবে।
- শিক্ষা ও প্রশিক্ষণঃ অনলাইনে আয়ের অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আবার কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে ট্রেনিং বা প্রশিক্ষণ থাকলে সেক্ষেত্রে একজন ক্লায়েন্ট ফ্রিল্যান্সারকে কাজ প্রদানে দ্বিধাবোধ করেন না।
- রিভিউঃ মার্কেটপ্লেসে পূর্বের ক্লায়েন্টদের রিভিউ ভালো হলে নতুন ক্লায়েন্ট কোনো ফ্রিল্যান্সারকে তার চাহিদামত অর্থ প্রদানের কথা বিবেচনা করবেন। ইতিবাচক রিভিউ এর ফলে একজন ফ্রিল্যান্সারের কাজের বিশ্বস্ততা বাড়ে।
এছাড়া আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে যেগুলো ফ্রিল্যান্সারের আয়কে সরাসরি প্রভাবিত করে।
- কজের ধরনঃ এক এক ধরনের কাজে এক এক রকম পেমেন্ট। আপনি যদি ডাটা এন্ট্রি বা সার্ভের কাজ করেন তাহলে কিছুটা কম রেটে কাজ পাবেন। আবার প্রোগ্রামিং ও ইউএক্স ডিজাইনে অনেক বেশি আয় করা যায়।
- কাজের পরিমাণঃ মাসে কত টাকা আয় করবেন তা আপনার কাজের পরিমাণের ওপরেও নির্ভর করবে। যত বেশি কাজ করতে পারবেন তত বেশি আয় করা সম্ভব হবে।
অনলাইনে মাসে কত টাকা ইনকাম করা যায়?
একজন ফ্রিল্যান্সার মাসে কত টাকা আয় করতে পারবেন, তা নির্ভর করে পোষ্টের শুরুতে উল্লেখিত বিষয়সমূহের উপর। মূলত কাজের চাহিদা ও কাজ কতটা টেকনিক্যাল, তার উপর উক্ত কাজ থেকে আয়ের পরিমাণ নির্ভর করে।
অনেক ফ্রিল্যান্সার তাদের দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের অভাবে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ অর্থ আয় করতে পারেন না। এই পোস্টে বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে প্রাপ্ত ফ্রিল্যন্সারদের আয়ের পরিমাণ সম্পর্কে জানবো।
কথা বলা যাক সবচেয়ে কমন ফ্রিল্যান্সিং কাজগুলোর জন্য মাসিক আয়ের পরিমাণ সম্পর্কে। একজন ফ্রিল্যান্সার রাইটার ঘন্টায় ৩০ থেকে ৪০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারেন। একজন ফ্রিল্যান্সার এডিটর ও প্রায় একই অংকের অর্থ আয় করে থাকেন।
ফ্রিল্যান্সার প্রোগ্রামার এর চাহিদা বেশি হওয়ার কারণে ফ্রিল্যান্স প্রোগ্রামারগণ ঘন্টাপ্রতি অধিক আয় করে থাকেন। ফ্রিল্যান্সার প্রোগ্রামার, ওয়েব ডেভলপার ও অ্যাপ ডেভলপারগণ ঘন্টাপ্রতি ৫০ থেকে ৮০ডলার পর্যন্ত আয় করে থাকেন।
একজন দক্ষ গ্রাফিক ডিজাইনার ফ্রিল্যান্সিং করে ৩০ থেকে ৫০ডলার পর্যন্ত ঘন্টায় আয় করতে পারেন। আবার অনলাইন মার্কেটার, ট্রান্সক্রাইবার ও ভিডিও এডিটরগণ প্রায় একই অংকের আয় করতে পারেন।
🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥
আবার ডাটা এনালিস্ট এর মত জটিল কাজের ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সারগণ অধিক আয় করতে পারেন। অর্থাৎ কাজের জটিলতার উপর উক্ত কাজের জন্য একজন ফ্রিল্যান্সারের আয়ের পরিমাণে তারতম্য দেখা যেতে পারে।
আমাদের দেশে এমন অনেকে আছেন যারা মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করছেন। আবার আমাদের দেশে এমনও অনেক ফ্রিল্যান্সার আছেন যারা মাসে ১০ হাজার টাকাও আয় করতে পারছেন না। অর্থাৎ ফ্রিল্যান্সার এর দক্ষতা ও কাজ প্রাপ্তির উপর নির্ভর করছে তিনি আসলে মাসে কত টাকা আয় করতে পারবেন।
👉 ফ্রিল্যান্সিং কি আপনার জন্য ভাল হবে? এখানে জেনে নিন
ফ্রিল্যান্সিং করে আয়ের পরিসংখ্যান
জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম আপওয়ার্ক এর তথ্যমতে ৬০শতাংশ ফ্রিল্যান্সার চাকরি ছাড়ার পর তাদের পূর্বের ফুল-টাইম চাকরির চেয়ে বেশি আয় করেন। ২০২০ সালের ফ্রিল্যান্সার রিসার্চ ডাটার তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রিল্যান্সারগণ ঘন্টায় গড়ে ২০ডলার আয় করে থাকেন।
একই পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে ওয়েব বা মোবাইল ডেভলপমেন্ট, একাউন্টিং ও অন্যান স্কিলড সার্ভিস এর ক্ষেত্রে ফ্রিল্যন্সারগণ ২৮ডলার পর্যন্ত প্রতি ঘন্টায় আয় করতে পারেন। এই রেট হিসাব করলে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রিল্যান্সারগণ ৭০% এর অধিক কর্মজীবী থেকে অধিক আয় করেন।
আপনি একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার হোন বা একজন দক্ষ ফ্রিল্যান্সার, উভয় ক্ষেত্রেই ফ্রিল্যান্স ইকোনোমিতে ভূমিকা রেখে ভালো অংকের অর্থ আয় করতে পারবেন। দিনদিন কোম্পানিগুলো ফ্রিল্যান্সারদের সাথে কাজ করতে অধিক ইচ্ছা পোষণ করছে, যার ফলে ফ্রিল্যান্সার এর চাহিদা বাড়ছে।
👉 অনলাইনে ইনকাম করার সেরা ১০ উপায়
অনলাইনে আয়ের ভবিষ্যৎ
একজন ফুল-টাইম ফ্রিল্যান্সার হওয়ার ক্ষেত্রে অনেক চ্যালেঞ্জ থাকলেও বিভিন্ন পরিসংখ্যান ঘেঁটে বুঝা যায় প্রতি বছর ক্যারিয়ার হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। যেহেতু বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ফ্রিল্যান্সার এর সাহায্যে তাদের কাজগুলো করিয়ে নিতে আরো আগ্রহী হয়ে উঠছে, তাই আশা করা যায় ফ্রিল্যান্সারগণ এর জন্য অনেক নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
বাড়তি ইনকাম হোক কিংবা ফুল-টাইম জবের বিকল্প, পূর্বের চেয়ে অনেক বেশি দক্ষ পেশাদারগণ ফ্রিল্যন্সিং করছেন। আপওয়ার্ক এর তথ্যমতে, ৭১% ফ্রিল্যান্সার যেকোনো স্থান থেকে কাজের স্বাধীনতা উপভোগ করেন।
উল্লেখিত আলোচনা বিবেচনায় আশা করা যায়, ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট ভবিষ্যতে আগের চেয়ে আরো বড় হবে। অর্থাৎ দক্ষতার চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে ফ্রিল্যান্সারদের কাজের অভাব হবেনা।
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।