সম্প্রতি অ্যাপল একটি নতুন ধরণের স্মার্ট ডিভাইস স্ক্রিন প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করেছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। ৯টু৫ ম্যাক লিখছে, চলতি মাসের শেষ নাগাদ কোম্পানিটির ‘স্যাফায়ার ক্রিস্টাল’ স্ক্রিন তৈরির জন্য নির্মিত প্ল্যান্ট চালু হবে। কিন্তু এই স্যাফায়ার ক্রিস্টাল জিনিসটা কী? এই পোস্টে আমরা স্যাফায়ার ক্রিস্টাল সম্পর্কে জানব।
স্যাফায়ার ক্রিস্টাল
স্যাফায়ার হচ্ছে স্ফটিক বা ক্রিস্টালের একটি অত্যন্ত শক্ত (সুপার-হার্ড) ও স্বচ্ছ রূপ যা দেখতে কাঁচ বা হীরের মত। এটি ‘নীলকান্ত মণি’ নামেও পরিচিত। হলুদ, বেগুনী, সবুজ, লাল, নীল প্রভৃতি রঙে স্যাফায়ার ক্রিস্টাল পাওয়া যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রত্নটি নীলাভ হয়ে থাকে।
তবে কি আইফোনের স্ক্রিন নীল রঙের হবে?
খুবই যুক্তিযুক্ত প্রশ্ন। আসলে বিশুদ্ধ স্যাফায়ার ক্রিস্টালের কোনো রঙ থাকেনা। পদার্থটিতে আয়রন, টাইটানিয়াম, ক্রোমিয়াম, কপার, ম্যাগনেসিয়াম প্রভৃতি ধাতুর উপস্থিতি একে রঙিন করে তোলে। আইফোনে স্যাফায়ার ক্রিস্টাল ব্যবহৃত হলে সেটি অবশ্যই এতটুকু মাত্রায় বিশুদ্ধ হবে যে এটি তখন সাধারণ কাঁচের মত রঙবিহীন স্বচ্ছ হবে।
স্যাফায়ার ক্রিস্টাল কোথায় পাওয়া যায়?
সাধারণত, অন্যান্য রত্নের মতই স্যাফায়ার ক্রিস্টালও খনি থেকে আহরণ করা হয়। তবে অলঙ্কার ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে যে নীলকান্ত মণি ব্যবহৃত হয় সেগুলো কৃত্রিম উপায়ে তৈরি। ১৯০২ সালে বিশ্বের প্রথম সিনথেটিক স্যাফায়ার ক্রিস্টাল প্রস্তুত করা হয়। ফ্রান্সের রসায়নবিদ অগাস্ট ভার্নিউল সর্বপ্রথম কৃত্রিম পদ্ধতিতে পদার্থটি তৈরিতে সমর্থ হন। অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইডকে উচ্চ তাপমাত্রা ও চাপ প্রয়োগ করলে তা ক্রিস্টালে রূপান্তরিত হয়। এটি স্ক্র্যাচ বা দাগ প্রতিরোধী। অত্যাধিক শক্ত বলে বুলেট-প্রুফ গাড়ির জানালায়ও স্যাফায়ার ক্রিস্টাল ব্যবহৃত হতে দেখা যায়। সাধারণত স্টিলের ‘মো রেটিং’ (খনিজের ক্ষেত্রে কাঠিন্যের একক হচ্ছে ‘মো’) এর স্কেল ৪ থেকে ৮ (অত্যাধিক কঠিন) পর্যন্ত হয়ে থাকে। আর স্যাফায়ার ক্রিস্টালের ‘মো’ রেটিং ৯ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। সুতরাং এর দৃঢ়টা সম্পর্কে নিশ্চিন্ত হওয়াই যায়। যদিও কর্নিংয়ের তৈরি গ্লাসের মো রেটিং প্রকাশ করা হয়নি, তবে সেগুলোর মো রেটিং ৭ হবে বলে ধারণা করা হয়।
ভাল… কিন্তু দামটা?
স্মার্টফোন বা অন্যান্য কনস্যুমার ইলেকট্রনিকসে স্যাফায়ার ক্রিস্টাল ব্যবহৃত না হওয়ার একমাত্র কারণ হচ্ছে এর উচ্চমূল্য। গ্লাস নির্মাতা কোম্পানি কর্নিং দাবী করছে, স্যাফায়ার ক্রিস্টালের খরচ বর্তমান গরিলা গ্লাসের চেয়ে ১০ গুণ বেশি হবে। তবে অ্যাপল যদি সত্যি সত্যিই তাদের ডিভাইসে পদার্থটি ব্যবহার করে তাহলে কোম্পানিটি নিশ্চয়ই এমন ব্যবস্থা নেবে যাতে গেজেটগুলোর মূল্য বর্তমান অংকের চেয়ে তুলনামূলক বেশি হবেনা। যাই হোক, বাস্তবে কী হয় তা দেখার জন্য আমাদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।