অ্যান্ড্রয়েড ফোনে উইন্ডোজ ১১ চলছে – এমন একটি বিষয় হয়ত সোশ্যাল মিডিয়াতে ইতিমধ্যে দেখে থাকবেন। মোবাইলে কিভাবে একটি পূর্ণাঙ্গ কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম চলছে? অ্যান্ড্রয়েড ফোনে উইন্ডোজ ১১ চলার এই বিষয়টি আদৌ সত্যি কি? সেই বিষয়ে জানবেন এই পোস্টে।
আসলেই ফোনে উইন্ডোজ ১১ চলছে কিভাবে তা জানার আগে জানতে হবে রেনেগেড প্রজেক্ট সম্পর্কে। রেনেগেড প্রজেক্ট হলো মূলত ডেভলপার এর একট টিম যারা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের বিভিন্ন ফিচার বা অপারেটিং সিস্টেম ফোনে চালানোর ফাংশনালিটি নিয়ে কাজ করছে।
রেনেগেড প্রজেক্ট এর নতুন প্রজেক্ট হলো ফোনে উইন্ডোজ ১১ রান করানো। বলা বাহুল্য ইতিমধ্যে সফল হয়েছে রেনেগেড প্রজেক্ট টিম। শুরুতে লুমিয়া স্মার্টফোনে উইন্ডোজ ১১ টেস্ট করা হয়, এরপর শাওমি মি ৮, শাওমি মি মিক্স ৩, পোকো এফ১ ও গ্যালাক্সি এস৯ প্লাসে সফলভাবে ইন্সটল ও ব্যবহার করা হয় উইন্ডোজ ১১। বর্তমানে বিভিন্ন ম্যানুফ্যাকচার এর প্রায় ৪০টি মডেলের ডিভাইসে উইন্ডোজ ১১ ব্যবহার করা সম্ভব।
মাইক্রোসফট মোবাইল ইকোসিস্টেম তৈরী থেকে দূরে সরে আসলেও মডাররা স্মার্টফোনে উইন্ডোজ পোর্ট করার কাজে লেগে আছেন বেশ অনেক বছর ধরেই। যেহেতু স্মার্টফোন এই ধরনের সিস্টেম এর জন্য তৈরী নয়, তাই ফোনে উইন্ডোজ চালাতে লো-লেভেল ফার্মওয়্যার বাইপাস করতে হয়, ইন্সটলারে বিভিন্ন পরিবর্তন আনতে হয় ও নির্দিষ্ট হার্ডওয়্যারের জন্য ড্রাইভার তৈরী করতে হয়।
বর্তমানে সাধারণ অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে উইন্ডোজ ইন্সটল করার সহজ কোনো উপায় নেই। এটি বেশ জটিল একটি প্রক্রিয়া যেখানে ওএস ও ফার্মওয়্যার এর মধ্যে একটি স্ট্যান্ডার্ড দ্বারা বোর্ড সাপোর্ট প্যাকেজ (BSP) রিপ্লেস করতে হয়।
মডার্ন স্মার্টফোনসমূহ ইউনিফাইড UEFI সাপোর্ট করলেও বিভিন্ন ম্যানুফ্যাকচারার বুট সিকোয়েন্স পরিবর্তন করে থাকেন। যার ফলে যেকোনো ARM64 UEFI-কম্পেটেবল সিস্টেমে সহজে উইন্ডোজ বুট করা বেশ ঝামেলার কাজ।
মোবাইলে উইন্ডোজ ১১ ব্যবহারের প্রক্রিয়াতে প্রথমে সম্পূর্ণ নতুন একটি ফার্মওয়্যার ইন্টারফেস তৈরী করতে হয়। এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে স্মার্টফোন বুটলোডার এর পরিবর্তে টায়ানোকোর ইডিকে ২ ইমেজ ব্যবহারের পরামর্শ দেয় রেনেগেড প্রজেক্ট। প্রজেক্টের গিটহাব পেজ এর Releases সেকশনে রেডি-মেড ফাইল পেয়ে যাবেন নির্দিষ্ট মডেলের জন্য।
এরপর UUP Dump থেকে উইন্ডোজ ১০ ও উইন্ডোজ ১১ রফ ARM64 বিল্ড ডাউনলোড করে ম্যানুয়ালি ইন্সটলার তৈরী করতে হবে। Windows PE হতে WIM প্যাকেজ ইন্সটল করে, ড্রাইভার লোড হওয়ার পর ফোনে উইন্ডোজ ১১ বুট হতে দেখবেন।
🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥
উল্লেখিত তথ্যের আলোকে বলা যায়, অবশেষে মোবাইলে ব্যবহার করা যাবে উইন্ডোজ ১১। টাচস্ক্রীন এর মাধ্যমে ছাড়াও কিবোর্ড ও মাউস ব্যবহার করে কম্পিউটারের ব্যবহারের অভিজ্ঞতা পাওয়া যাবে রেনেগেড প্রজেক্ট এর উইন্ডোজ পোর্ট ব্যবহার করে।
এই প্রজেক্টের উইন্ডোজ পোর্ট সরাসরি ফোনে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম ইন্সটল করে। অর্থাৎ ফোনে উইন্ডোজ চালানোর ক্ষেত্রে কোনো ধরনের এমুলেশন এর সাহায্য নেওয়া হয়নি। বরং আসল উইন্ডোজ ১১ সরাসরি ফোনে ইন্সটল করে ব্যবহার করা হচ্ছে।
👉 উইন্ডোজ ১১ ইনস্টল করার নিয়ম (নতুন ও পুরাতন পিসিতে)
বর্তমানে যেসব ফোনে উইন্ডোজ ১০ ও উইন্ডোজ ১১ এর স্মার্টফোন পোর্ট সফলভাবে টেস্ট করা হয়েছে সেগুলো হলোঃ
- আসুস জেনফোন ৫জেড
- গুগল পিক্সেল ৩
- এলজ কি৭ থিংকিউ, ভি৩০, ভি৩৫, ভি৪০
- মিইজু ১৬, ১৬ প্লাস
- মটোরোলা মোটো জেড২ ফোর্স
- নোকিয়া ৯ পিউরভিউ
- ওয়ানপ্লাস ৫, ৫টি, ৬, ৬টি, ৭, ৭ প্রো
- অপো ফাইন্ড এক্স
- স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৯ প্লাস
- সনি এক্সপেরিয়া এক্সজেড২
- শাওমি ব্ল্যাক শার্ক
- মি ৬, মি ৮, মি৮ প্রো, মি ৯, মি মিদ ২, মি মিক্স ২এস, মি মিক্স ৩, মি প্যাড ৪, মি প্যাড ৫
- পোকোফোন এফ১
- রেডমি কে২০ প্রো / মি ৯টি প্রো
- জেডটিই এক্সন ৯ প্রো, নুবিয়া এক্স
সামনের দিনগুলোতে সাপোর্টেড ডিভাইসের তালিকা বাড়বে বলে জানিয়েছেন রেনেগেড প্রজেক্ট এর ডেভলপারগণ। রেনেগড প্রজেক্ট এর ওয়েবসাইট হতে চলমান কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।