আমরা কি সত্যিই একদিন গবেষণাগারে জৈবিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তৈরি করতে পারব?

আধুনিক বিজ্ঞানের এই যুগে প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রতিদিনকার জীবনযাপন অনেক সহজ এবং উপভোগ্য হয়েছে। এক দশক আগেও যা কল্পনা করা যেতনা এখন তার উদাহরণ আমাদের চোখের সামনে। সিনথেটিক রক্তনালী, শ্বাসনালীর মত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার অনেক মানুষের জন্য আশার আলো হয়েছে। গ্রহীতার স্টেম সেল ব্যবহার করে গবেষণাগারে প্রয়োজনীয় প্রত্যঙ্গ তৈরি করার ইতিহাস এখন নতুন নয়। ২০১১ সালেই এক ব্যক্তির দেহে সফল অস্ত্রোপচার করে তার ক্যান্সারে আক্রান্ত শ্বাসনালী সিনথেটিক প্রত্যঙ্গ দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে থ্রিডি স্ক্যানিং এর মাধ্যমে রোগীর দুটি প্রধান শ্বাসনালীর ছবি নিয়ে সেগুলো থেকে প্রাথমিক প্রোটোটাইপ তৈরি করে তাতে গ্রহীতার স্টেম সেল চালনা করে গবেষণাগারে কৃত্রিম উপায়ে নতুন উইন্ডপাইপ (শ্বাসনালী) তৈরি করা হয়। এই মূল প্রক্রিয়াটি মাত্র দুই দিনে সম্পন্ন হয়েছে।

এরপর ১২ ঘন্টাব্যাপী অপারেশনের মাধ্যমে রোগীর ক্যান্সারে আক্রান্ত শ্বাসনালীটি নতুন আরেকটি (যা গবেষণাগারে তৈরি হল) দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হয়। গ্রহীতার কোষ থেকে গঠিত বলে এর মধ্যে আরও কোষ বিভাজন সম্ভব হবে যা স্বাভাবিক অঙ্গ প্রত্যঙ্গে ঘটে থাকে।

এটা তো গেল মাত্র একটি উদাহরণ। সবার প্রয়োজন সমান নয় এবং সব প্রত্যঙ্গের গঠনও সরল না হওয়ায় প্রশ্ন থেকেই যায়।

সারা বিশ্বে কিডনি সংযোজন চিকিৎসা বিষয়ক একটি বহুল আলোচিত ব্যাপার। এক্ষেত্রে একজন দাতা দরকার যিনি গ্রহীতাকে তার কিডনি দান করবেন। কিন্তু শরীরের অমূল্য এই অংশটির দাতা পাওয়া অনেক সময়ই বেশ দুঃসাধ্য কাজ। আর তাই এক্ষেত্রে কৃত্রিম উপায়ে কিডনি তৈরি করা গেলে সেটি মানবজাতির জন্য এক আশীর্বাদ হয়ে আসবে।

বিজ্ঞানীরা এই লক্ষ্য অর্জন করতে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। থ্রিডি প্রিন্টার ব্যবহার করে ইতোমধ্যেই জীবিত কোষ থেকে কিডনি বানানোর প্রাথমিক ধাপ সম্পন্ন হয়েছে। পুরোপুরি কাজ না করলেও গবেষণা যেটুকু এগিয়েছে তাতে ডেস্কটপ প্রিন্টারে কালির বদলে কোষ ব্যবহার করে কিডনি তৈরির প্রক্রিয়া তার সূচনালগ্নে আরও উন্নত বিকল্পের আভাস দিচ্ছে।

কিন্তু এর পরেও কথা থেকেই যায়। ঠিক কবে নাগাদ এসব গবেষণা ব্যবহারিক সাফল্যের মুখ দেখবে? এগুলো কতজনেরই বা নাগালের মধ্যে থাকবে? কৃত্রিম উপায়ে তৈরি প্রত্যঙ্গ কতদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যাবে? এতে কি কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকবে?

এরকম অনেক প্রশ্ন এবং চ্যালেঞ্জ উপস্থিত হয়েছে বিজ্ঞানীদের সামনে। চলুন আমরা আরও কিছুদিন . . . . অথবা কিছু দশক অপেক্ষা করি “কি ঘটে” তা দেখার জন্য।

সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আপনার অনুভূতি মন্তব্যের মাধ্যমে শেয়ার করতে পারেন।

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,543 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *