গুগল এবং ফেসবুকের সাথে ১০০ মিলিয়ন ডলার প্রতারণা!  

`

ইমেইল, এসএমএস এবং মোবাইলে অনেকেই বিভিন্ন লটারি জেতার নামে ভুয়া বার্তা পেয়ে থাকেন। কেউ কেউ আবার ‘জ্বিনের বাদশা’ সেজেও মানুষজনকে ধোঁকা দেয় এবং বলে যে “হে বৎস, তুমি এত লক্ষ টাকা পেয়েছ, এখন সেটা তোলার জন্য আমাকে এত হাজার টাকা পাঠাও”। এমন ঘটনা আমরা সবাই জানি। সহজ-সরল লোকজন না বুঝে এরকম ফাঁদে পড়ে টাকাপয়সা হারিয়েছেন অনেক। কিন্তু, গুগল এবং ফেসবুকের মত বড় বড় কোম্পানিকেও ধোঁকা দিয়ে বড় অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনা শুনলে কি অবাক হবেন? আপনি যতই অবাক হোন না কেনো, এই ঘটনা বাস্তবেই ঘটেছে!

ফরচুন ম্যাগাজিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, ইউরোপীয় দেশ লিথুয়ানিয়ার একজন ব্যক্তি, ইভালাদাস রিমাসসকাস (৪৮), ইন্টারনেট জায়ান্ট ফেসবুক এবং গুগলকে ফাঁকি দিয়ে উভয় কোম্পানির কাছ থেকে প্রায় ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার হাতিয়ে নিয়েছিলেন। ২০১৩ সাল থেকে শুরু করে দুই বছর ধরে বিশ্বের এই দুটি সুরক্ষিত কোম্পানিকে ফাঁকি দিয়ে আসছিলেন তিনি।

প্রশ্ন আসতে পারে, কীভাবে এই লোকটি এই অসাধ্য সাধন করলেন? উত্তরঃ সামান্য ইমেইল ফিশিং ট্রিক্স ব্যবহার করে।

প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, রিমাসসকাস একটি এশিয়ান “কম্পিউটার হার্ডওয়্যার প্রস্তুতকারক” সেজে  গুগল এবং ফেসবুক কোম্পানির সাথে ব্যবসা করার নামে ইমেইল পাঠান। ঐ ব্যক্তি বলেন যে, তিনি গুগল ও ফেসবুককে কম্পিউটার বিষয়ক মালামাল সরবরাহ করছেন, এবং সেসব যন্ত্রের দাম হিসেবে পেমেন্ট চেয়ে ইমেইল পাঠিয়েছেন। এশিয়ান হার্ডওয়্যার কোম্পানির প্রতিনিধি হওয়ার ভান করে জাল ইমেইল অ্যাকাউন্ট তৈরি করেছিলেন রিমাসসকাস। তিনি ঐ সমস্ত একাউন্ট ব্যবহার করে ফেসবুক এবং গুগলের কাছে অর্থের জন্য ইনভয়েস পাঠাতেন। গুগল ও ফেসবুক তাকে সেই অর্থ প্রেরণ করত।

এই ধরনের অর্থের আদানপ্রদান ব্যাংকগুলিতে কিছু দ্বিধার সৃষ্টি করে থাকতে পারে, কিন্তু রিমাসসকাস গুগল এবং ফেসবুকের কথিত নির্বাহীদের এবং এজেন্টদের দ্বারা জাল স্বাক্ষরকৃত বিভিন্ন চুক্তিপত্র এবং চিঠি তৈরি করেন। সে সকল চিঠিতে হুবহু ফেসবুক-গুগলের লোগো বিদ্যমান ছিলো।

এভাবে ডলার পেমেন্ট এনে সমস্ত অর্থ রিমাসসকাস তার প্রথম ব্যাংক একাউন্ট থেকে তারই মালিকানাধীন ল্যাটভিয়া, সাইপ্রাস, স্লোভাকিয়া, লিথুয়ানিয়া, হাঙ্গেরি এবং হংকংয়ের ব্যাংক একাউন্টে স্থানান্তর করে দিতেন।

অবশেষে ফেসবুক এবং গুগল কোম্পানী এই ধোঁকার বিষয়টি বুঝতে পারে, এবং মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই এর সহায়তায় রিমাসসকাসকে সনাক্ত করতে সমর্থ হয়। কোম্পানিদুটি দাবি করেছে, তারা বেহাত হওয়া অর্থের বেশিরভাগ উদ্ধার করতে পেরেছে। তবে উদ্ধারের পরিমাণ জানা যায়নি।

বর্তমানে রিমাসসকাস মানি লন্ডারিং, পরিচয় নকল এবং জালিয়াতির মামলার মুখোমুখি আছেন। তবে তিনি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। যদি তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হয়, এবং সেক্ষেত্রে যদি তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হয় তবে তাকে ৮০ বছরের বেশি (কমপক্ষে ২ বছর) কারাদন্ড ভোগ করতে হবে।

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,575 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *